জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠক

“ঐক্যের ভিত্তিতেই সমৃদ্ধি”—জোরালো বার্তা প্রধান উপদেষ্টার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৩ ০২:৪৫:৫৮
“ঐক্যের ভিত্তিতেই সমৃদ্ধি”—জোরালো বার্তা প্রধান উপদেষ্টার

দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “আসুন, আমরা আমাদের ঐক্য জোরদার করি, যাতে আমরা সামনে একটি পথ খুঁজে পাই এবং দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে পারি।”

সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফা সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী অংশীদাররা অংশ নেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য হলো জাতীয় ঐক্য রক্ষা ও তা সুদৃঢ় করা। তিনি জানান, সংলাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত ও পরামর্শ থেকে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জুলাই সনদ আরও সমৃদ্ধ করতে আমাদের এই সংলাপ চলবে। আমরা চাই দেশবাসী জানুক—কোন কোন বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই ঐকমত্যে পৌঁছেছি।”

সংলাপের উদ্বোধনী পর্বে দেওয়া বক্তব্যেও অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুন্দর ও যৌথ ঘোষণাপত্র তৈরি করার লক্ষ্যেই এই কমিশনের কাজ চলছে। “আমরা সবাই আজ দেশের কল্যাণের জন্য এখানে সমবেত হয়েছি,”—এমন মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি আশাবাদী অবস্থান তুলে ধরেন।

কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ জানান, কমিশনের মেয়াদ আগামী ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত হলেও জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। তিনি বলেন, “আমাদের ওপর অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মূলত সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, সরকারি প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন—এই পাঁচটি খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে। কমিশনের প্রথম দফার সংলাপ ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মে পর্যন্ত চলে, যেখানে মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই সংলাপ প্রক্রিয়া রাজনৈতিক সংকট নিরসনের একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপরেখা হিসেবে কাজ করতে পারে। তবে এই ঐকমত্য কতটা কার্যকর হয়, তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতা ও বাস্তবসম্মত অবস্থানের ওপর।


স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৮:০৩:৫৪
স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি এখন আত্মনির্ভরতা। তিনি বলেন, “আমরা আর কারও ওপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না। আমাদের নিজেদের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করতে হবে। যেহেতু আমরা এখনও অন্যদের ওপর নির্ভরশীল, তাই যত দ্রুত সম্ভব এই নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসাই এখন সবচেয়ে জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই।”

আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর টেকসই ও মসৃণ রূপান্তর কৌশল বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি’র সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পরে পররাষ্ট্র সেবা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সভার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সভায় ড. ইউনূস বলেন, “স্বনির্ভর হতে হলে আমাদের অভ্যাস বদলাতে হবে। নিজেদের মেধা, শ্রম ও অধ্যবসায় দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শুরুতে কঠিন মনে হলেও এই পথেই আনন্দ ও সার্থকতা নিহিত। আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন সেটি একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশেরই প্রতিশ্রুতি।”

তিনি আরও বলেন, “এই জাতি নিজ যোগ্যতায় দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে। আমাদের শক্তি হলো তরুণ প্রজন্ম ও তাদের সৃষ্টিশীলতা। এই শক্তি ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা নির্ভরতার শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করবে। আমরা আর পরনির্ভরতার বন্ধনে বাঁচতে চাই না।”

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, কৃষি উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, মুখ্য সচিব এম সিরাজউদ্দিন মিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফাইজ তাইয়েব আহমাদ, এবং এসডিজি বাস্তবায়নের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদসহ ইআরডির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বৈঠকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ঢাকাচেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আব্দুল মুকতাদির।

বিশ্লেষকদের মতে, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বৈদেশিক সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন করা। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে সেই রূপান্তর পরিকল্পনার দিকনির্দেশনাই স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

-নাজমুল হাসান


উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বিতর্ক, রিজওয়ানা হাসান চাইলেন নাম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৭:২৬:০৫
উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বিতর্ক, রিজওয়ানা হাসান চাইলেন নাম
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কারা ‘সেফ এক্সিট’ (নিরাপদ প্রস্থান) নিতে চান, তা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই মন্তব্য করেন।

এনসিপি নেতার অভিযোগ

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকেই পরিষ্কার করতে হবে, কারা সেফ এক্সিট চায়। তিনি আরও বলেন, একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সর্বোচ্চ সহায়তা করবে। কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা সম্পূর্ণভাবে আইনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ এনসিপির

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন এবং তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। তিনি বলেন:

“অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, অথবা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সময় এলে তাদের নামও আমরা উন্মুক্ত করব।”

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা আমাদের ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর যে আস্থা আমরা রেখেছিলাম, সে জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি।”


শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৭:০৯:২২
শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি আলাদা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল আসামিদের আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা যাদের বিরুদ্ধে

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া ২৮ জনের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক। বাকি আসামিদের অধিকাংশই সাবেক ও বর্তমান সেনা এবং র‍্যাব কর্মকর্তা।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের জানান, গুমের একটি মামলায় শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন:

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।

র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, মো. হারুন-অর-রশিদ।

ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী।

ট্রাইব্যুনালে গুমের দুটি মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল এই পরোয়ানা জারি করে।

উল্লেখ্য, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর শেখ হাসিনা ভারত গিয়ে আশ্রয় নেন। তার সরকারের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার দেবর তারিক সিদ্দিকও বিদেশে রয়েছেন।


জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৩:১০:০১
জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র
ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রসিকিউশন টিম বুধবার পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অভিযোগে তার দীর্ঘমেয়াদি শাসনামলে জোরপূর্বক গুমের ঘটনা সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, এদিন দুটি পৃথক মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যার উভয়টিতেই শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রথম অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনা, তারিক সিদ্দিক ও আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিদের আটক করে ‘টাস্কফোর্স ফর ইন্টাররোগেশন’ (টিএফআই) সেলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন চালান।

দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনা, তারিক সিদ্দিক এবং আরও ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে একই ধরনের অপরাধে—তবে এবার অভিযোগের স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘জয়েন্ট ইন্টাররোগেশন সেল’ (জেআইসি)।

এ প্রসঙ্গে আইসিটি প্রসিকিউশনের এক কর্মকর্তা জানান, উভয় অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণের জন্য দাখিল করা হয়েছে এবং শিগগিরই শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হবে। প্রসিকিউশন বলছে, প্রমাণপত্র ও সাক্ষ্য বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে।

তবে সরকারের কোনো পক্ষ বা সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভিযোগপত্র দাখিল বাংলাদেশের রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে, যা আগামী দিনে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

-নাজমুল হাসান


চট্টগ্রামে উত্তেজনা: সড়ক দুর্ঘটনায় নেতার মৃত্যু ঘিরে হেফাজতের অবরোধ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১২:৪৪:২৬
চট্টগ্রামে উত্তেজনা: সড়ক দুর্ঘটনায় নেতার মৃত্যু ঘিরে হেফাজতের অবরোধ
ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের এক কেন্দ্রীয় নেতার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ফলে সকাল থেকেই উভয় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয় এবং শতাধিক যানবাহন বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়ে।

চট্টগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করছি। পরিস্থিতি যাতে আরও উত্তপ্ত না হয়, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।”

মঙ্গলবার বিকেলে রাউজান উপজেলার নবীন সেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা সোহেল চৌধুরী (৫০)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেলে করে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাস পিছন দিক থেকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সোহেল চৌধুরী চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা হলেও পরিবারসহ রাউজান পৌরসভায় বসবাস করছিলেন।

তার মৃত্যুর খবরে বুধবার সকাল থেকেই হেফাজতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে দুই পার্বত্য জেলায় যাতায়াতকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও চালককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

-নাজমুল হাসান


‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’—ফেসবুক ভিডিওতে শাহিদুল আলমের দাবি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১১:৫৬:২০
‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’—ফেসবুক ভিডিওতে শাহিদুল আলমের দাবি
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও লেখক শাহিদুল আলম দাবি করেছেন, গাজামুখী ‘ফ্লোটিলা মিশন’-এর অংশ হিসেবে ভূমধ্যসাগরে যাত্রাকালে তাকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে অপহরণ করেছে।

বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় শাহিদুল আলম বলেন, “আমাদের জাহাজটি সাগরে আটক করা হয়েছে, এবং আমি ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছি। এই রাষ্ট্র গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতায়।”

তিনি তার ভিডিও বার্তায় আরও আহ্বান জানান—“আমার সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি অনুরোধ, ফিলিস্তিনের মুক্তির সংগ্রাম থেমে থাকতে পারে না; এই লড়াই অব্যাহত রাখুন।” তবে ভিডিওটিতে তার বর্তমান অবস্থান বা পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বুধবার জানায়, তারা গাজা অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ‘গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা’র নয়টি নৌযানকেই সাগরে আটক করেছে এবং যাত্রীদের ইসরায়েলি একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তাদের দ্রুত বহিষ্কার করা হবে।

ফ্লোটিলা সংগঠকরা এর আগে নিশ্চিত করেন যে, ‘দ্য কনসায়েন্স’ নামের জাহাজটি, যাতে শাহিদুল আলমসহ ৯৩ জন শান্তিকর্মী ছিলেন, সেটি ইসরায়েলি বাহিনী আক্রমণ করেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে এই জাহাজটি ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করেছিল।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ এক বিবৃতিতে জানায়, “গাজা উপকূলে অবৈধ নৌ অবরোধ ভাঙার আরেকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা শেষ হয়েছে কিছুই না পেয়েই। সকল যাত্রী নিরাপদে আছেন এবং ভালো আছেন। তাদের দ্রুতই নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।”

এদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ইসরায়েলের এই নৌআক্রমণ ও আটক অভিযানকে “অবৈধ ও মানবাধিকারবিরোধী” বলে তীব্র নিন্দা জানান। তিনি মালয়েশীয় শান্তিকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছেন, যারা একই ফ্লোটিলায় অংশ নিয়েছিলেন।

বুধবারের এই ঘটনাটি আসে মাত্র এক সপ্তাহ পর, যখন ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের আরেকটি বড় বহর আটক করেছিল। সেই অভিযানে ৪২টি জাহাজে ছিলেন প্রায় ৪৭৯ জন কর্মী, যাদের বেশিরভাগকেই ইতোমধ্যে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই মিশনে অংশ নিয়েছিলেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থানবার্গও।

শান্তিকর্মীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গাজা উপকূলের ওপর ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যেই এসব ফ্লোটিলা অভিযান সংগঠিত হয়। অন্যদিকে, ইসরায়েল দাবি করে, তাদের অবরোধ “আইনসম্মত” এবং গাজা উপকূলকে তারা একটি “যুদ্ধক্ষেত্র” হিসেবে গণ্য করে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই সাম্প্রতিক আটক অভিযান কেবল আন্তর্জাতিক মানবিক নীতির লঙ্ঘন নয়, বরং গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলার প্রচেষ্টাকেও ব্যাহত করছে। শাহিদুল আলমের অপহরণের খবর বাংলাদেশের মানবাধিকার ও সাংবাদিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি করেছে।

শাহিদুল আলম বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয় কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তার অংশগ্রহণ ছিল শান্তিপূর্ণ মানবিক সহায়তা মিশনে, যার লক্ষ্য ছিল গাজার অবরোধ ভাঙা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। তবে এখন পর্যন্ত তার অবস্থান বা মুক্তি সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

-নাজমুল হাসান


নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সেফ এক্সিট’ বিতর্ক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১১:৩৩:১২
নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সেফ এক্সিট’ বিতর্ক
ছবিঃ ডেইলি সান

জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন থেকে মাত্র তিন মাস দূরে। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনের আয়োজন বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর একটি। একাধিকবার প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন—নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে। সেই প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনীতি এখন সম্পূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছেন, জনসংযোগ ও প্রচারণা শুরু করেছেন।

এই সংবেদনশীল সময়ে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি এক মন্তব্যে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। তারা এখন নিজেদের নিরাপদ প্রস্থানের কথা ভাবছেন।”তার এই বক্তব্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। টেলিভিশন টকশো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় উত্তপ্ত আলোচনা। এমনকি সরকার ঘনিষ্ঠ মহলেও বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন ছড়ায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নাহিদ ইসলাম সরকারের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন, যদিও তিনি এখন সরকারে নেই। তাই তার এমন মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নয়—এটি এক ধরনের বার্তাও বহন করে যে, সরকারের ভেতরেই এখন অনিশ্চয়তা ও অবিশ্বাস বাড়ছে।

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “উপদেষ্টারা যদি বিশ্বাস করতেন যে তাদের নিয়োগের উৎস ছিল গণঅভ্যুত্থানের শক্তি—সেই সাধারণ মানুষ যারা রাস্তায় নেমে প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন—তাহলে আজ এই বিচ্যুতি ঘটত না। তারা সেই শক্তির প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।”

পরদিন উত্তরাঞ্চলের এনসিপি প্রধান সংগঠক সারজিস আলম আরও কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, “কিছু উপদেষ্টা কেবল নিজেদের সুরক্ষার কথা ভাবছেন, দায়িত্ব পালন করছেন অর্ধেক মনোযোগে। কিন্তু যারা গণঅভ্যুত্থানের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের এ ধরনের মনোভাব চলতে পারে না। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে তাদের নিরাপদ প্রস্থান বলে কিছু থাকবে না—যেখানেই যান না কেন, বাংলাদেশিরা তাদের খুঁজে নেবে।”

এনসিপি অভিযোগ করেছে যে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের দাবি, কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। এই হতাশা থেকেই ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গটি রাজনৈতিক আলোচনায় এসেছে।

অন্যদিকে, সরকারের প্রতি সমর্থন জানানো কয়েকটি রাজনৈতিক দলও উপদেষ্টাদের কিছু বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ—কিছু উপদেষ্টা ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চেয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে জটিল করার চেষ্টা করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী মনে করেন, “ইউনুস সরকার বেশ কিছু গুরুতর ভুল করেছে। এর ফলেই জনগণ ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফল ভোগ করতে পারেনি। তাই এখন উপদেষ্টাদের নিরাপদ প্রস্থানের আলোচনা জোরালো হচ্ছে।”তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ রাজনীতিকদের অন্তর্ভুক্ত না করা। তিনি এনজিও ও বিশ্বব্যাংক ঘরানার ব্যক্তিদের নিয়ে প্রশাসন সাজিয়েছেন, যাদের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় বিদেশমুখী ও স্বার্থকেন্দ্রিক। এটি জনগণের সরকার হিসেবে প্রত্যাশিত ছিল না।”

এ প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, “এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল, তাই এটি মূলত জনগণের সরকার। উপদেষ্টাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল—তারা সংস্কার, ন্যায়বিচার ও জনকল্যাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন। কিন্তু নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণার পর প্রশাসনে যেন এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। উপদেষ্টারা অনুৎসাহী হয়ে পড়েছেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।”

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “উপদেষ্টাদের কিছু অসংলগ্ন মন্তব্য থেকেই ‘সেফ এক্সিট’ ইস্যুটি সামনে এসেছে। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম প্রথম এই ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেন। আমি মনে করি, নাহিদ ইসলামের মতো ব্যক্তিরা আশা করেছিলেন কিছু উপদেষ্টা সংস্কারমূলক ভূমিকা নেবেন, কিন্তু তা হয়নি। শুরুতে এনসিপি ও সরকারের মধ্যে ভালো সমন্বয় থাকলেও পরে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সরকার যদি নিরপেক্ষতা হারায়, তাহলে আসন্ন নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা কমবে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করা। কারণ, আগামী নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করছে সেই আস্থার ওপর।

-সুত্রঃ ডেইলি সান


কূটনৈতিক জয়: ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে হারিয়ে ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ২১:০০:৩৮
কূটনৈতিক জয়: ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে হারিয়ে ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

কূটনৈতিক জয়

ইউনেস্কোর এই মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচনে বাংলাদেশ ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে পরাজিত করে এই সম্মান অর্জন করেছে। নির্বাচনের প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল, তবে শেষ পর্যায়ে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।

এই জয়কে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য ও সাংস্কৃতিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলন বিশ্বের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ, যার সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাওয়া আন্তর্জাতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অর্জন।

ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ৪৩তম অধিবেশনটি শুরু হবে চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর উজবেকিস্তানের সামারকান্দ শহরের সিল্ক রোড কনফারেন্স সেন্টারে। সম্মেলনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ১৩ নভেম্বর।


আজ রাতে দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন ‘হার্ভেস্ট মুন’

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৭:২৬:২২
আজ রাতে দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন ‘হার্ভেস্ট মুন’
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের প্রথম সুপারমুন আজ (মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর) রাতে দেখা যাবে। এদিন চাঁদ তার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছাবে। ফলে স্বাভাবিক পূর্ণিমার তুলনায় চাঁদকে বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে। গত বুধবার (১ অক্টোবর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

হার্ভেস্ট মুন: কেন এটি বিশেষ?

জ্যোতির্বিদদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সুপারমুনকে বলা হয় ‘হার্ভেস্ট মুন’। এটি প্রতি বছর শরৎ ঋতুর শুরুতে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণত পূর্ণিমার চাঁদ রাতভর ওঠে না, তবে হার্ভেস্ট মুনের সময় চাঁদ স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত ওঠে এবং একাধিক রাত ধরে আকাশে দৃশ্যমান থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময়ে এটি আরও উজ্জ্বল দেখায়।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর মোট তিনটি সুপারমুন উপভোগ করার সুযোগ মিলবে, যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে অক্টোবরের এই হার্ভেস্ট মুন।

কোথা থেকে দেখা যাবে?

পাকিস্তান স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন (SUPARCO) জানিয়েছে, পাকিস্তান ছাড়াও বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ থেকেই সুপারমুন দেখা যাবে। আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকে এটি খালি চোখে উপভোগ করা যাবে।

সুপারকো কর্মকর্তাদের মতে, আজকের সুপারমুন গড় পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল হবে। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২,২৪,৫৯৯ মাইল (৩,৬১,৪০০ কিলোমিটার) দূরে থাকবে। সুপারমুন দেখার জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। খোলা আকাশে দিগন্ত বরাবর তাকালেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যাবে।

পাঠকের মতামত: