ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তি করুন, নইলে ইসরাইলি হামলার ঝুঁকি নিন: সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ৩০ ২১:৫১:১৫
ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তি করুন, নইলে ইসরাইলি হামলার ঝুঁকি নিন: সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী

দুই দশকেরও বেশি সময় পর সৌদি রাজপরিবারের কোনো জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে ইরান সফর করেন সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে হওয়া এ সফর ছিল শুধুই সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়—বরং এতে ছিল মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা, ইসরাইলের সম্ভাব্য আগ্রাসন এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু আলোচনা ঘিরে কৌশলগত বার্তা।

রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে একটি ‘বিশেষ বার্তা’ পৌঁছে দিতে সৌদি বাদশাহ সালমান নিজ পুত্রকে তেহরানে পাঠান। সৌদি ও ইরানি সূত্রসহ চারটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল তেহরানকে পরমাণু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করা।

সূত্র অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল ইরানের প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রিন্স খালিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় একটি গোপন বৈঠক, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। বৈঠকে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন ফের ক্ষমতায় এলে দ্রুত একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চাইবে। কূটনৈতিক জানালা দীর্ঘদিন খোলা থাকবে না। তাই সময় থাকতে সমঝোতায় পৌঁছানো উচিত।”

সৌদি মন্ত্রীর সতর্ক বার্তা ছিল স্পষ্ট: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা না হলে ইরান হয়তো ভবিষ্যতে ইসরাইলি আগ্রাসনের মুখে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে উপসাগরীয় অঞ্চলে ইতোমধ্যে গাজা ও লেবাননের সংঘাতে যে অস্থিরতা চলছে, তার মধ্যে নতুন করে আরও একটি যুদ্ধ হলে তা পুরো অঞ্চলকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে।

সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানসহ ইরানি কর্মকর্তারা সৌদি বার্তা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তেহরানও চায় পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হোক এবং অর্থনৈতিক চাপ কমানোর জন্য একটি কার্যকর চুক্তি হোক।

তবে একইসঙ্গে ইরান পরিষ্কার জানিয়ে দেয়—যদি চুক্তি না হয়, তাহলেও তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করা হবে না। এই অবস্থান বজায় রেখেই চলতি বছর ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে, তার পঞ্চম দফার আলোচনায় উভয়পক্ষ কিছুটা অগ্রগতির দাবি করলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে এখনও মতানৈক্য রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, প্রিন্স খালিদ অতীতে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ওয়াশিংটনের রাজনীতির সাথে পরিচিত এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় দক্ষ। ফলে, তার মাধ্যমে খামেনির কাছে বাদশাহ সালমানের বার্তা পৌঁছে দেওয়াকে কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবেই দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল।

এই সফর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কৌশলগত সমীকরণ গড়ে তোলার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সৌদি আরব ও ইরান—যারা দীর্ঘদিন পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত, তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় পারস্পরিক সহযোগিতায় আসে, তবে এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা বাড়বে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত