গাজায় খাদ্যগুদামে ‘ক্ষুধার্ত মানুষের’ ঢল: নিহত ২

দফায় দফায় অবরোধ আর ক্ষুধায় জর্জরিত গাজাবাসীর মধ্যে বৃহস্পতিবার মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরের একটি খাদ্যগুদামে ঢুকে পড়ার ঘটনা নতুন করে গোটা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, গুদামে ঢুকে পড়ার সময় সেখানে অন্তত দুজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংস্থাটি জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডব্লিউএফপি এক বিবৃতিতে জানায়, “ইসরায়েলের তিন মাসব্যাপী অবরোধের ফলে মানবিক সংকট এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গাজায় অনাহারে মৃত্যুর হুমকিতে রয়েছে লাখো মানুষ।” যদিও গত সপ্তাহে সীমিত আকারে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য দূত সিগ্রিড কাগ বলেছেন, “জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর লাইফবোট ছোড়ার মতো এই ত্রাণ।”
এএফপির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ক্ষুধার্ত লোকজন আল-ঘাফারি গুদামে ঢুকে খাদ্যের বস্তা ও ময়দার প্যাকেট নিয়ে যাচ্ছে। তখন গুলির শব্দ শোনা গেলেও, গুলির উৎস নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গাজার চলমান দুর্ভিক্ষের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত সংগঠন 'গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন' (GHF) ত্রাণ বিতরণে সরাসরি সক্রিয় হয়েছে। জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত এই ত্রাণ উদ্যোগ সম্পর্কে জাতিসংঘ বলেছে, “এটি অকার্যকর ও নীতিবিরুদ্ধ।”
GHF ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় চারটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র চালু করেছে, যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, এসব কেন্দ্র হামাসের নিয়ন্ত্রণ এড়িয়ে ত্রাণ বিতরণে কার্যকর হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অন্য চিত্র। রাফাহ শহরের একটি GHF বিতরণ কেন্দ্রে একদিন পরেই গুলিতে আহত হয়েছেন ৪৭ জন। জাতিসংঘ জানায়, ত্রাণের জন্য হাহাকার এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, লোকজন জাতিসংঘের নিজস্ব ট্রাক থেকেও খাবার লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান জোনাথন হুইটল বলেন,
“হামাসের মাধ্যমে ত্রাণ চুরির কোনো প্রমাণ নেই। বরং কিছু স্থানীয় অপরাধী চক্র, যাদের ইসরায়েলি বাহিনী কেরেম শালোম সীমান্তে কাজে অনুমতি দিয়েছে, তারা ত্রাণ বণ্টন বিঘ্নিত করছে।”
ডব্লিউএফপি জানায়, খাদ্যগুদামটিতে আগেই ত্রাণ মজুত রাখা হয়েছিল, কিন্তু বিতরণের আগেই ক্ষুধার্ত জনতা সেখানে হামলে পড়ে। সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে,
"গাজায় দ্রুত ত্রাণ সহায়তা বাড়ানো না গেলে আরও প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়বে। মানুষকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তাঁরা অনাহারে মরবেন না।"
এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও ডব্লিউএফপি বারবার দাবি করছে, অবরোধ প্রত্যাহার করে সংঘর্ষবিরতির সময়কার মতো স্বচ্ছলভাবে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিতে হবে। যাতে দুর্ভিক্ষপ্রবণ গাজাজুড়ে জাতিসংঘের বিতরণ ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করে ক্ষুধার্ত মানুষের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায়। অন্যথায়, এমন লুটপাট ও প্রাণহানি গাজায় প্রতিদিনের বাস্তবতায় পরিণত হবে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- নতুন নোটের ছবি প্রকাশ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক