গাজা ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে থাকবে: নেতানিয়াহুর ঘোষণা

সত্য নিউজ:ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, গাজা ভূখণ্ডের ওপর সম্পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হবে এবং যুদ্ধ বন্ধের জন্য হামাসের সম্পূর্ণ ধ্বংস ও নিরস্ত্রীকরণ অপরিহার্য। মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই বক্তব্য দেন, যা ডিসেম্বরের পর তার প্রথম বড় ধরনের জনসম্মুখে উপস্থিতি।

নেতানিয়াহু বলেন, “হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে, সব বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে এবং হামাস নেতাদের গাজা থেকে নির্বাসিত করতে হবে। একইসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিন বিতাড়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ খুলে দিতে হবে।”

এই ঘোষণার সময় ইসরায়েল গাজার ওপর তীব্র বোমাবর্ষণ চালায়, যেখানে বুধবার ভোর পর্যন্ত ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলের অবরোধে গাজায় দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯৩ শতাংশ গাজাবাসী শিশু অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে।

নেতানিয়াহু দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় একটি নতুন ত্রাণ বিতরণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যাতে হামাস ত্রাণ না পায়। তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, এখনও গাজায় কার্যকর ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়নি এবং ইসরায়েলের দেয়া সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম।

“এটি একটি কৌশলী ধোঁয়াশা,” বলেন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের সমন্বয়কারী পাসকাল কোইসার্দ। “ইসরায়েল যেন এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যাতে তাদের দায়ও থাকে না আবার গাজার মানুষও মারা যাচ্ছে।”

নেতানিয়াহুর বক্তব্যে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেন, “নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা গাজাকে বহু বছর ধরে দখলে রাখার ইঙ্গিত দেয়, যা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করবে এবং দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।”

আরেক বিরোধী নেতা ইয়াইর গোলান মন্তব্য করেন, “আমি দেখেছি এক মিথ্যাবাদী ও চাপে পড়া মানুষ, যিনি নিজের কোনো কাজের দায় স্বীকার করেন না।” নেতানিয়াহু তাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করার পর গোলান মানহানির মামলা করার ঘোষণা দিয়েছেন।

নেতানিয়াহুর এমন অবস্থান ও মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে গাজার ওপর সামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার ঘোষণা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ ছড়াতে পারে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন ইউরোপীয় রাষ্ট্র ইতোমধ্যেই গাজায় অস্ত্রবিরতি ও মানবিক করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়ে আসছে।