জেলেদের দুঃস্বপ্ন ‘আরাকান আর্মি’ সাত মাসে অপহৃত ২২০

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ

সত্য নিউজ:নাফ নদী এখন আর কেবল জীবিকার উৎস নয়, হয়ে উঠেছে জীবনের ঝুঁকির কেন্দ্রস্থল। মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা এ নদীপথে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে দিন কাটছে বাংলাদেশি জেলেদের। গত সাত মাসে এই নদীপথ থেকে ২২০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। অস্ত্রের মুখে তুলে নেওয়া এসব জেলেদের মুক্তিপণের বিনিময়ে ফেরত দেওয়া হয়েছে, আবার অনেকেই এখনো নিখোঁজ।

প্রতিদিন ভোরে নদীতে নামতে হয় মাছ ধরার জন্য। তবে নাফ নদীতে জাল ফেলা মানেই এখন জীবনের ঝুঁকি নেওয়া। কোনো পূর্বসতর্কতা ছাড়াই অপহরণকারীরা হামলা চালায়। অপহৃতদের মারধর করে নদীর ওপারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অনেক পরিবার চড়া সুদে ঋণ করে কিংবা জমি বিক্রি করে মুক্তিপণ জোগাড় করেছে। মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে নির্যাতন চলে দিনের পর দিন।

এই পরিস্থিতি জেলেদের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই নদীতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এতে জীবিকা সংকটে পড়েছেন সীমান্তবর্তী গ্রামের শত শত পরিবার। মাছ ধরা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই, কিন্তু নদীতে নামা মানে মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া।

সীমান্তে বিজিবি’র টহল ও নজরদারি বাড়ানো হলেও তা অপহরণ ঠেকাতে পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ রয়েছে। নদীর এমন কিছু পয়েন্ট আছে যেগুলোতে অপারেশন চালানো কঠিন, আর এই দুর্বলতা কাজে লাগাচ্ছে সন্ত্রাসীরা।

স্থানীয়রা স্থায়ী নিরাপত্তার দাবিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তাঁদের মতে, নদীতে নিয়মিত নৌ টহল, জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সীমান্তে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি। সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে এ নদী আর জীবিকার নয়, বরং মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে থাকবে।