সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন ইলন মাস্ক, লন্ডনে বিক্ষোভ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১১:৩২:২৮
সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন ইলন মাস্ক, লন্ডনে বিক্ষোভ
ছবিঃ সংগৃহীত

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার পর লন্ডনের হোয়াইটহলে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসি জানিয়েছে, ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ শীর্ষক এ কর্মসূচিতে আয়োজকদের বিভিন্ন নেতা বক্তব্য রাখেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যোগ দেন টেসলা ও এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক। তিনি সমাবেশে সরাসরি সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেন, চার বছর অপেক্ষা করার মতো সময় নেই, পার্লামেন্ট ভেঙে অবিলম্বে নতুন ভোট আয়োজন করতে হবে। তাঁর এ বক্তব্যে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দেয়।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল যুক্তরাজ্যের ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা, ইংল্যান্ডের লাল-সাদা সেন্ট জর্জ ক্রস, এমনকি মার্কিন ও ইসরায়েলি পতাকাও। অনেকেই পরেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণার লাল টুপি ‘মেক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’। আয়োজক রবিনসন সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেন, ইতোমধ্যেই লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে লাখ লাখ মানুষ স্বাধীনতার দাবিতে একত্রিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভকারীরা ওয়েস্টমিনস্টারের দিকে অগ্রসর হয়। তাদের বহন করা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “ওদের ফেরত পাঠাও”। অনেক পরিবার শিশুদের সঙ্গেও মিছিলে অংশ নেয়। তবে বিক্ষোভের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, সমাবেশে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের অভিযোগে অন্তত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে কাচের বোতল, লোহার পাইপ ও বিয়ারের ক্যান ছোড়া হয়।

এদিন কাছেই পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আয়োজিত হয় ‘স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম’ শীর্ষক বিক্ষোভ, যাতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেন। দুই পক্ষের কর্মসূচি সামলাতে লন্ডনে মোতায়েন করা হয় এক হাজার ৬০০-এর বেশি পুলিশ সদস্য, যাদের মধ্যে ৫০০ জন এসেছিলেন অন্যান্য অঞ্চল থেকে। একইসঙ্গে শহরে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ ও কনসার্ট থাকায় পুলিশকে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হয়।

চলতি বছর যুক্তরাজ্যে অভিবাসন ইস্যু রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি অভিবাসী ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করেছে, যা ইতিহাসে রেকর্ড। সমর্থকরা ইংল্যান্ডের লাল-সাদা পতাকাকে জাতীয় গৌরবের প্রতীক বলে দাবি করলেও, বর্ণবাদবিরোধী কর্মীদের কাছে এটি বিদেশিদের প্রতি বৈরিতার প্রতীক।

-রফিক


ন্যাটো সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: রাশিয়ার ড্রোন অভিযান প্রসারিত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১১:২৭:০৫
ন্যাটো সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: রাশিয়ার ড্রোন অভিযান প্রসারিত
ছবিঃ সংগৃহীত

ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে রাশিয়ার সাম্প্রতিক ড্রোন হামলা ও সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনায়। শনিবার রোমানিয়া জানিয়েছে, দেশটির আকাশসীমায় একটি ড্রোন প্রবেশ করেছে, যা ইউক্রেনের অবকাঠামো লক্ষ্য করে রুশ হামলার সময় শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনার পরপরই রোমানিয়া দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান উড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ড্রোনটি রোমানিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশের পর রাডারে কিছু সময় দেখা যায় এবং শেষ পর্যন্ত দেশটির চিলিয়া ভেকে গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় তা অদৃশ্য হয়ে যায়।

পোল্যান্ডও একই দিনে রুশ ড্রোন হামলার জবাবে নিজেদের ও ন্যাটো মিত্রদের হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। পোলিশ সামরিক কমান্ড জানায়, সম্ভাব্য হামলার ঝুঁকির কারণে বিমান প্রতিরক্ষা ও রাডার নজরদারি ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায় আনা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সতর্কতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোন অভিযান সম্প্রসারণ করছে। তার মতে, এটি যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ও সম্মিলিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করা। জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়া জানে তাদের ড্রোন কোথায় যাচ্ছে এবং কতক্ষণ আকাশে থাকবে। এখন সময় এসেছে নতুন নিষেধাজ্ঞা ও সম্মিলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার।” তিনি পশ্চিমাদের উদ্দেশে বলেন, “দশক সংখ্যক ‘শাহেদ’ ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার অপেক্ষা না করে সিদ্ধান্ত নিন।”

ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রস্তুত, তবে শর্তসাপেক্ষে—সব ন্যাটো সদস্যকে একসঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে হবে। ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কারণ তিনি পূর্বেও একাধিকবার নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশ যদি ইচ্ছাকৃত প্রমাণিত হয়, তা হবে “বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধির” ইঙ্গিত।

অন্যদিকে, রাশিয়ার ভিতরেও ড্রোন হামলার খবর পাওয়া গেছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিইউআর দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। উফা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত এ শোধনাগারে আগুন লাগে এবং কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে রাশিয়ার কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের এ ধরনের হামলার লক্ষ্য রাশিয়ার জ্বালানি শিল্পকে দুর্বল করা এবং যুদ্ধ চালানোর অর্থায়ন ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া।

ইউক্রেন সীমান্তে বাড়তে থাকা এ উত্তেজনা ইউরোপে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইডেনসহ একাধিক ইউরোপীয় দেশ পোল্যান্ডের আকাশসীমা সুরক্ষায় সহায়তা বাড়িয়েছে। ন্যাটো মিত্ররা আশঙ্কা করছে, এ ধরনের ড্রোন অনুপ্রবেশ সীমান্ত সংঘাতের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

-রফিকুল ইসলাম


ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর বড় সিদ্ধান্ত: সরকারি ছুটি কাটছাঁটের পরিকল্পনা বাতিল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১১:১৫:২৯
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর বড় সিদ্ধান্ত: সরকারি ছুটি কাটছাঁটের পরিকল্পনা বাতিল
ছবিঃ সংগৃহীত

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু বাজেট ঘাটতি মোকাবিলার বিতর্কিত প্রস্তাব থেকে সরে এসে বামপন্থী দলগুলোর প্রতি সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার আঞ্চলিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পূর্বসূরি ফ্রাঁসোয়া বাইরুর পরিকল্পিত দুটি সরকারি ছুটির দিন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

এই অবস্থান পরিবর্তন আসে এমন এক সময়ে, যখন আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচ ফ্রান্সের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতার মান কমিয়ে “এএ-” থেকে “এ+” করেছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের ঋণের পরিমাণ অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকবে যদি না জরুরি সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

ফিচের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কট্টর ডানপন্থী নেতা মেরিন ল্য পেন ও বামপন্থী নেতা জ্যঁ-লুক মেলঁশো উভয়েই প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নীতিকে “বিপজ্জনক” আখ্যা দিয়ে তার রাজনৈতিক ধারার অবসানের দাবি জানিয়েছেন। মেলঁশো সরাসরি প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

লেকর্নু অবশ্য কঠোর কৃচ্ছসাধন নীতির পরিবর্তে সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে বিকল্প সমাধান খুঁজে বের করার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমি দুটি সরকারি ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছি। এখন সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ২০২৬ সালের বাজেটের জন্য বিকল্প পথ খুঁজব।”

এদিকে, দেশটির নিয়োগকর্তাদের সংগঠন মেদেফ (MEDEF) সতর্ক করে বলেছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নতুন কর চাপানো হলে তারা কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। যদিও লেকর্নু ধনকুবেরদের ওপর প্রস্তাবিত ‘জুকম্যান ট্যাক্স’ পুনর্বিবেচনার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও “কর ন্যায়বিচার” নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি বর্তমানে জিডিপির ৫.৮ শতাংশ, আর সরকারি ঋণ ১১৩ শতাংশ, যা ইউরোজোনের নির্ধারিত সীমা—ঘাটতির ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ ও ঋণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ—এর দ্বিগুণেরও বেশি। ফিচ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৭ সালে ফ্রান্সের ঋণ জিডিপির ১২১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি।

রেটিং অবনমন স্বাভাবিকভাবে ফ্রান্সের সরকারি বন্ডের সুদের হার বাড়িয়ে তুলেছে। দশ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার এখন ৩.৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ইউরোজোনের সবচেয়ে দুর্বল অর্থনীতির দেশ ইতালির সমান প্রায়। এতে ঋণের সুদ পরিশোধ ব্যয় আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

লেকর্নু এখন এমন এক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার সংসদে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে বাজেট অনুমোদনের জন্য তাকে রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর নির্ভর করতে হবে। এ কারণে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিকও।

জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো ইনসে (INSEE) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ফ্রান্সের প্রবৃদ্ধি ০.৮ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে রেটিং সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এই প্রবৃদ্ধিকে কতটা প্রভাবিত করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

-আমির হোসেন


মেক্সিকো সিটিতে গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৩

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১১:০৩:১৩
মেক্সিকো সিটিতে গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৩
ছবিঃ সংগৃহীত

মেক্সিকো সিটির ইস্তাপালাপা জেলায় ভয়াবহ গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। শনিবার মেয়রের কার্যালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বুধবার প্রায় ৫০ হাজার লিটার গ্যাস বহনকারী একটি ট্রাক হঠাৎ বিস্ফোরিত হলে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় প্রথমে তিনজন নিহত ও বহু আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও পরে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।

সর্বশেষ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এখনো শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪০ জন গুরুতর আহত রোগীর চিকিৎসা চলছে। এদের অধিকাংশের শরীরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিগ্রির মারাত্মক দগ্ধের চিহ্ন রয়েছে।

মৃতদের মধ্যে আছেন ৪৯ বছর বয়সী আলিসিয়া মাতিয়াস, যাকে স্থানীয় গণমাধ্যমে “হিরো দাদিমা” বলা হচ্ছে। বিস্ফোরণের সময় তিনি নিজের দুই বছরের নাতনিকে শরীর দিয়ে ঢেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেলেও তিনি নাতনিকে জীবিত রাখতে সক্ষম হন। বিস্ফোরণের পর শিশুটিকে কোলে নিয়ে সাহায্যের জন্য ছুটে বেড়ানোর তার হৃদয়বিদারক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।

মেক্সিকো সিটির মেয়র ক্লারা ব্রুগাদা এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ লিখেছেন,

“আলিসিয়ার ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ আমাদের সবাইকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।”

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল এবং কোনো বস্তুতে ধাক্কা খেয়ে গ্যাস ট্যাঙ্কে ছিদ্র হয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। মেয়র ব্রুগাদা জানিয়েছেন, শহরের ৯২ লাখ বাসিন্দার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্যাসবাহী ট্রাকের গতিবিধির ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপের উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

-রাজু আহামেদ


আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১০:০৬:১৮
আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি
ছবি: সংগৃহীত

আফগান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মধ্যে। গত কয়েক দিনে চালানো এসব অভিযানে অন্তত ১৯ জন পাকিস্তানি সেনা ও ৩৫ জন সশস্ত্র যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়ার বাজৌর জেলায় চালানো অভিযানে ২২ জন টিটিপি সদস্য নিহত হয়। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের আরেক অভিযানে আরও ১৩ জন নিহত হয়েছে, যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১২ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। পাশাপাশি লোয়ার দির জেলায় এক আস্তানা ঘিরে ফেলার পর উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে সাত সেনা ও ১০ জন টিটিপি যোদ্ধা নিহত হয়।

টিটিপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা দিয়ে এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। এ কারণে ইসলামাবাদ কাবুলের তালেবান সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তাদের ভূখণ্ড পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার না হয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিহত টিটিপি সদস্যদের ‘খারেজি’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেছে, তারা ভারতের সহযোগিতা পাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। ভারত সব সময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে, আর কাবুল থেকেও এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানে টিটিপির হামলা বেড়ে গেছে। সীমান্ত পেরিয়ে টিটিপি নেতারা আফগানিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শনিবারের সংঘর্ষ সাম্প্রতিক মাসগুলোর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘটনা। উল্লেখ্য, একসময় টিটিপি এ প্রদেশের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করত, তবে ২০১৪ সালের সেনা অভিযানে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকায় টিটিপির নাম লেখা গ্রাফিতি দেখা যাচ্ছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এএফপি’র হিসাবে, চলতি বছরের শুরু থেকে পাকিস্তানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ৪৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

গত বছর নিহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ৬০০, যা ছিল গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি ছিলেন সেনা ও পুলিশ সদস্য।

-রাফসান


এবার মন্ত্রী নির্ধারণে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেপালে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ০৯:৪৯:৪০
এবার মন্ত্রী নির্ধারণে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেপালে
ছবি: সংগৃহীত

নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে নেপালি গণমাধ্যম খবর হাব জানিয়েছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এখনো চলছে এবং আজকের মধ্যেই ছোট পরিসরের একটি মন্ত্রিসভা গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।

গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি প্রতিনিধি সভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেন এবং তা দ্রুত অনুমোদন করেন প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে কার্কি আগামী ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন।

তবে নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএল এবং মাওবাদী কেন্দ্র—এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি জানিয়েছে। তাদের মতে, সংসদ বহাল রেখেই সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সুশীলা কার্কিকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব ছিল। দলগুলোর আশঙ্কা, এ ধরনের পদক্ষেপ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

নতুন মন্ত্রিসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়াও এবার ভিন্নধর্মী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রচলিত দলীয় কাঠামোর বাইরে গিয়ে গণআন্দোলনের চরিত্র ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রী কার্কি হয়তো জনভোট বা গণপরামর্শের মাধ্যমে মন্ত্রী নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।

ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক কুলমান ঘিসিং এবং আইনজীবী ওমপ্রকাশ আয়ারেলের নাম আলোচনায় এসেছে, যারা মূলধারার রাজনীতির বাইরে থেকেও জনসমর্থন অর্জন করেছেন।

এ প্রেক্ষাপটে মনে করিয়ে দেওয়া যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি, সরকারবিরোধী দমননীতি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন দমাতে নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়। কিন্তু কঠোর দমননীতি সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা দমে যায়নি।

পরদিনও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে এবং ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। সেই সময় বিভিন্ন নেতার বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। দেশজুড়ে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

-রাফসান


কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১১:৫৪:১০
কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
ছবিঃ সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, আসন্ন শাসকদল ওয়ার্কার্স পার্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এমন এক নীতি ঘোষণা করবেন যা একযোগে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার ও প্রচলিত সামরিক শক্তি বৃদ্ধির রূপরেখা দেবে। শনিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (KCNA) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যর্থ শীর্ষ বৈঠকের পর থেকেই পিয়ংইয়ং বারবার ঘোষণা দিয়ে আসছে যে তারা আর কখনও পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। দেশটি নিজেকে "অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র" হিসেবে ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কিম বলেন, "উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক বাহিনী এবং প্রচলিত সশস্ত্র বাহিনী – উভয়ের শক্তি বৃদ্ধি করবে।" তিনি প্রচলিত সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন। তবে বৈঠকের নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কিমের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে শুধু পারমাণবিক অস্ত্রই প্রতিরোধ ক্ষমতার একমাত্র ভরসা নয়। উত্তর কোরিয়া এখন তার যুদ্ধ-সক্ষমতা বাড়াতে চায় এবং আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী প্রচলিত অস্ত্রভাণ্ডার তৈরি করতে চায়। কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন বলেন, "রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে, যা কেবল পারমাণবিক প্রযুক্তি নয় বরং প্রচলিত অস্ত্রখাতেও বিস্তৃত হচ্ছে।" তিনি আরও যোগ করেন, আসন্ন বৈঠকে আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী দীর্ঘমেয়াদি আধুনিকায়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার এই অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে ইউক্রেন যুদ্ধ। মস্কোর পাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার উত্তর কোরীয় সৈন্য পাঠানোর পর পিয়ংইয়ং রাশিয়ার কাছ থেকে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন পাচ্ছে। গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় দুই দেশ পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে।

দক্ষিণ কোরিয়া বারবার সতর্ক করছে যে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হতে পারে।

এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসে কিম এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী সামরিক এজেন্ডা ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি সামরিক উপগ্রহ, কঠিন জ্বালানির আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রসহ উন্নত অস্ত্র তৈরি করার অঙ্গীকার করেছিলেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন বৈঠক আগামী বছরের শুরুতেই হতে পারে।

সম্প্রতি বেইজিংয়ে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম জং উন, পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একসঙ্গে অংশ নেন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অভিযোগ করেন, এই তিন নেতা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছেন।

-সুত্রঃ এ এফ পি


মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১১:৩৮:১৮
মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের রাজনীতিতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এক অদৃশ্য অথচ অত্যন্ত প্রভাবশালী শক্তি। শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় থাকলেও নেপথ্যে আরএসএসকেই নীতি-নির্ধারক হিসেবে দেখা হয়। দীর্ঘদিন ধরে উভয় সংগঠনকে পরস্পরের পরিপূরক ভাবা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ওয়্যার-এর এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে এক চাপা দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।

এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে রয়েছেন বিজেপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সঞ্জয় জোশী। একসময় গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত হলেও পরবর্তীতে তিনি মোদির প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত হন। আরএসএস-এর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা এবং বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোয় তার শক্তিশালী অবস্থান মোদিকে অস্বস্তিতে ফেলে। ২০০৫ সালে এক বিতর্কের জেরে জোশীকে পদত্যাগ করতে হয়। এরপর মোদির উত্থানের সময় তিনি ক্রমশ মূল রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন।

আরএসএস, বিশেষ করে মোহন ভাগবত চাইছিলেন সঞ্জয় জোশীকে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু মোদি সে প্রস্তাবে রাজি হননি। নাড্ডার স্থলাভিষিক্ত হিসেবেও আরএসএস সঞ্জয়কেই দেখতে চেয়েছিল বলে জানা যায়। এ ঘটনাই আরএসএস এবং মোদির মধ্যে সুপ্ত টানাপোড়েনকে স্পষ্ট করে তুলেছে।

এই দ্বন্দ্ব কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং আদর্শগতও। আরএসএস ঐতিহ্যগতভাবে দলীয় নেতৃত্বে সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণকে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্রমেই একক নেতৃত্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। এখন দলের নীতি নির্ধারণে মোদির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ ধারা আরএসএস-এর ঐতিহ্যবাহী কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

এ দ্বন্দ্বে আরেকটি মাত্রা যোগ করেছে বিজেপির অলিখিত ‘৭৫ বছর বয়সে অবসর’ নীতি। এই নিয়ম কার্যকর করে মোদি ও অমিত শাহ লালকৃষ্ণ আদবানী, মুরলী মনোহর জোশীর মতো প্রবীণ নেতাদের sidelined করেছেন। আরএসএস-এর প্রবীণ নেতাদের মতে, অভিজ্ঞদের এভাবে এক পাশে সরিয়ে দেওয়া সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদি বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোকে নিজের মতো করে গড়ে তুলতে চাইছেন, যেখানে আরএসএস-এর প্রভাব সীমিত থাকবে। অন্যদিকে আরএসএস বিজেপির ভেতরে তাদের ঐতিহ্যগত প্রভাব ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। সঞ্জয় জোশীকে মূলস্রোত থেকে সরিয়ে দেওয়াকে তারা নিজেদের ক্ষমতা খর্ব হওয়ার উদাহরণ হিসেবে দেখছে।

ভাগবতের ঘনিষ্ঠ মহল মনে করে, মোদি পরিকল্পিতভাবে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তিকে দুর্বল করছেন। মোদির সমর্থকরা পাল্টা যুক্তি দেন—আধুনিক রাজনীতিতে শক্তিশালী একক নেতৃত্ব ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাদের মতে, মোদির এই নেতৃত্বের ধরনই বিজেপির টানা নির্বাচনী সাফল্যের অন্যতম কারণ।

-রফিক


বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১১:২৩:৪৬
বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা
ছবিঃ সংগৃহীত

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণপন্থী নেতা জাইর বোলসোনারোকে অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের দায়ে ২৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এ রায়ের পর দেশটির রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নতুন অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।

৭০ বছর বয়সী সাবেক সেনা কর্মকর্তা বোলসোনারো আপাতত সরাসরি কারাগারে যাচ্ছেন না। আইন অনুযায়ী তিনি আপিল প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে বন্দি থাকবেন না। সুপ্রিম কোর্টের রায় সারসংক্ষেপ ২৩ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হবে এবং এরপর ৬০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করবে আদালত। এরপরই বোলসোনারোর আইনজীবীরা আপিল করতে পারবেন। তিনি চাইলে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে গৃহবন্দি অবস্থায় সাজা ভোগের আবেদনও করতে পারেন। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নির্বাচনী প্রচারণায় এক ছুরিকাঘাতের ঘটনায় তার গুরুতর পেটের আঘাত লেগেছিল, যার চিকিৎসাজনিত জটিলতা এখনও রয়েছে।

বোলসোনারোর আইনপ্রণেতা পুত্র ফ্লাভিও জানিয়েছেন, তারা সংসদে একটি সাধারণ ক্ষমা আইন পাসের চেষ্টা করবেন যাতে শুধু বোলসোনারো নয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ব্রাসিলিয়ায় সরকারি ভবন ও সুপ্রিম কোর্টে হামলার দায়ে দণ্ডিত শত শত সমর্থকও মুক্তি পান। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা চাইলে এই আইন ভেটো করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তত দুই বিচারপতি ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, বোলসোনারোর অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।

আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে ডানপন্থীদের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। বোলসোনারো ইতিমধ্যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা হয়েছেন, যদিও তিনি এই সিদ্ধান্ত পাল্টানোর চেষ্টা করছিলেন। তবুও তার সমর্থকরা বলছেন, বোলসোনারোই তাদের প্রার্থী। তবে আড়ালে আড়ালে নতুন নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। সাও পাওলো রাজ্যের গভর্নর ও সাবেক অবকাঠামুমন্ত্রী তারসিসিও দে ফ্রেইতাস এখন সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের মধ্যে শীর্ষে আছেন। তিনি নির্বাচিত হলে প্রথম কাজ হিসেবে বোলসোনারোকে ক্ষমা করবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, এই রায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলার জন্য রাজনৈতিক সুবিধা তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক জনমত জরিপে তার জনপ্রিয়তা এক মাসে চার শতাংশ বেড়ে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। লুলা এখনও ঘোষণা দেননি যে তিনি চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হবেন কি না, তবে সাম্প্রতিক কার্যকলাপে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তিনি রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বোলসোনারোর শাস্তি ব্রাজিলের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। এটি শুধু ডানপন্থীদের জন্য নয়, বরং পুরো দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হতে পারে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১১:০৯:১৯
রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা
ছবিঃ সংগৃহীত

রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের কামচাটকা উপকূলে শনিবার স্থানীয় সময় ভোরে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৪ এবং এর কেন্দ্রস্থল ছিল কামচাটকা অঞ্চলের প্রশাসনিক শহর পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার পূর্বে, ভূগর্ভের প্রায় ৩৯.৫ কিলোমিটার গভীরে।

প্রাথমিকভাবে USGS ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭.৫ হিসেবে জানিয়েছিল, পরে তা সামান্য কমিয়ে ৭.৪ ধরা হয়। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র সতর্ক করে জানিয়েছে, উপকূল থেকে ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে “বিপজ্জনক সুনামি তরঙ্গ” আঘাত হানতে পারে।

কামচাটকা অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জরুরি বিভাগ।

এ বছরের জুলাই মাসেই কামচাটকা উপকূলে ইতিহাসের অন্যতম শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮.৮। ভয়াবহ সেই কম্পন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চার মিটার পর্যন্ত উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি করেছিল। তখন হাওয়াই থেকে জাপান পর্যন্ত বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক সতর্কতা জারি করা হয় এবং জাপানে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় "রিং অফ ফায়ার" এলাকায় অবস্থিত কামচাটকা প্রায়ই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকে এবং যে কোনো বড় ধরনের কম্পনের পর আফটারশকের সম্ভাবনা থেকেই যায়। স্থানীয় জনগণকে তাই আপাতত নিরাপদ স্থানে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি

পাঠকের মতামত: