গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১৭:২৪
গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা
গাজা, ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা সলিডারিটি ফ্লোটিলা (GSF) জানিয়েছে, তাদের বহরে থাকা ‘ফ্যামিলি বোট’ নামের জাহাজে এক ড্রোন হামলার ফলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় জাহাজটির প্রধান ডেক এবং নিচতলার সংরক্ষণাগারে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংগঠনটি নিশ্চিত করেছে।

সংগঠনটি তাদের সরকারি প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজের অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী চিত্র তুলে ধরেছে। সেখানে দেখা যায়, সামনের ডেকের মেঝে ও দেয়াল সম্পূর্ণ কালো হয়ে গেছে এবং চারপাশে দগ্ধ চিহ্ন স্পষ্ট।

GSF এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিশনকে ভয় দেখানো বা বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে এমন আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হলেও আমরা থেমে থাকব না। গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং অবরোধ ভাঙার আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকার নিয়ে।”

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের সময় জাহাজে ছয়জন ক্রু সদস্য অবস্থান করছিলেন। তবে সৌভাগ্যক্রমে তারা সবাই নিরাপদে আছেন বলে জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা এবং গাজার অবরোধ ভাঙার শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে নিয়োজিত এই বহরটি দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। তবুও GSF-এর দাবি, তারা গাজার মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

সূত্র: আল জাজিরা


প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১৪:০৭
প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
ছবিঃ সত্য নিউজ

ফ্রান্সের জাতীয় সংসদ সোমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, যা দেশটির আধুনিক ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। মাত্র নয় মাস ক্ষমতায় থাকার পরই বাইরু তাঁর মিতব্যয়ী বাজেট নিয়ে জটিল অচলাবস্থা কাটাতে আস্থা ভোট ডাকেন। বাজেটে প্রস্তাব ছিল ৪৪ বিলিয়ন ইউরো (৫২ বিলিয়ন ডলার) সাশ্রয় করে ফ্রান্সের ঋণের বোঝা কমানো। কিন্তু ফল এসেছে উল্টো—৩৬৪ জন সাংসদ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানান, আর আস্থা জানান মাত্র ১৯৪ জন।

ফরাসি সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরপরই প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সংসদের স্পিকার ইয়েল ব্রন-পিভেট। বাইরু এভাবে আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ফ্রান্সের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক বিবৃতিতে জানান, তিনি এই ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। মঙ্গলবার বাইরুর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে।

ম্যাক্রোঁর সামনে নতুন সংকট

২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ছয়জন প্রধানমন্ত্রী দেখলেন ম্যাক্রোঁ। তবে ২০২২ সাল থেকে পাঁচবার নেতৃত্ব বদলের ফলে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ এখন অস্থিরতায় ভরা। ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে সক্রিয় থাকলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট এখন তাঁর জন্য বড় মাথাব্যথা।

বাইরু আস্থা ভোটের ঝুঁকি নিয়ে বলেন, “সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হতো কোনো ঝুঁকি না নেওয়া—যেন সব আগের মতো চলতে থাকে। অথচ ঋণের পাহাড় ফ্রান্সের জন্য প্রাণঘাতী। কয়েক বছরের মধ্যে দেশকে ঋণের স্রোত থেকে বাঁচাতেই আমরা এই পরিকল্পনা নিয়েছিলাম।”

নতুন নেতৃত্ব কে?

এখন প্রশ্ন, ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? সমাজতান্ত্রিক পার্টির নেতা অলিভিয়ার ফোরে ঘোষণা দিয়েছেন, বামপন্থীরা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “আমাদের সময় এসেছে ফ্রান্সকে নতুন পথে নিয়ে যাওয়ার।” তবে এমন সরকার কতটা টিকবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।

অন্যদিকে, ম্যাক্রোঁর আস্থাভাজন হলেও ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থী হতে পারেন বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানাঁ। তুলনামূলকভাবে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাথরিন ভত্রাঁ কিংবা অর্থমন্ত্রী এরিক লম্বার।

তবে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ফরাসিদের ৬৪ শতাংশ চান ম্যাক্রোঁ নিজেই পদত্যাগ করুন, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ নয়। যদিও সংবিধান অনুযায়ী তিনি ২০২৭ সালের নির্বাচনে তৃতীয়বার প্রার্থী হতে পারবেন না।

লে পেনের ছায়া

রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি সামাজিক অস্থিরতাও বাড়ছে। “ব্লক এভরিথিং” নামের একটি বামপন্থী জোট বুধবার দেশে গণআন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বড় শ্রমিক সংগঠনগুলোও আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, ২০২৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) দলের সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে এর নেতা মেরিন লে পেন মার্চ মাসে ভুয়া চাকরির মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড (যার মধ্যে দুই বছর স্থগিত) ও পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ হন।

লে পেন অবশ্য রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। সোমবার আদালত জানিয়েছে, তাঁর আপিল শুনানি ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। যদি আপিলে জয় পান, তবে আবারও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড়ে ফিরতে পারেন তিনি। ইতোমধ্যেই তিনি ম্যাক্রোঁকে দ্রুত সংসদীয় নির্বাচনের ডাক দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “এটি আর কোনো বিকল্প নয়, এটি একটি বাধ্যবাধকতা।”

ফ্রান্সের এই রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল সরকারের স্থায়িত্ব নয়, বরং ইউরোপীয় রাজনীতিতেও নতুন অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


জাতিসংঘ ক্ষুব্ধ, স্পেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি—গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞ তীব্রতর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১২:৩৫
জাতিসংঘ ক্ষুব্ধ, স্পেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি—গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসযজ্ঞ তীব্রতর

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজা সিটির বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেছেন, “এখনই শহর ছাড়ো”। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক ইসরাইলকে “গণহত্যা”র দায়ে অভিযুক্ত করে বলেন, দেশটি একের পর এক “যুদ্ধাপরাধ” চালাচ্ছে এবং বেসামরিক লোকদের বাঁচার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের কড়া ভাষা

ভলকার টার্ক বলেছেন, গাজার ধ্বংসযজ্ঞ এখন “বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিচ্ছে”। তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) জানুয়ারির রায় অনুযায়ী ইসরাইলকে গণহত্যা প্রতিরোধে বাধ্য করা হয়েছিল, অথচ বাস্তবে তার উল্টো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

গাজায় বোমাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞ

ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, রবিবার সকাল থেকে সোমবার পর্যন্ত ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজা সিটিতে অন্তত ৫০টির বেশি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ১০০ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। spokesman মাহমুদ বাসাল অভিযোগ করেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর শিবির সংলগ্ন আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে, যাতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২০০–এর বেশি তাঁবু ধ্বংস হয়। গাজার তুফ্ফাহ ও আজ-জারকা এলাকায় ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে এখনও মরদেহ উদ্ধার করছে উদ্ধারকর্মীরা। স্থানীয়রা বলছে, মসজিদ ও খেলার মাঠও হামলার শিকার হয়েছে।

নিহত ও ক্ষুধাজনিত মৃত্যু

স্থানীয় হাসপাতালগুলো জানিয়েছে, সোমবার একদিনেই কমপক্ষে ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৩২ জন গাজা সিটির। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, খাদ্যসংকট ও অপুষ্টিতে দুই শিশুসহ আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ দিন ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন সাংবাদিক ওসামা বালুশাও। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় প্রায় ২৫০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন—সবাই ফিলিস্তিনি, কারণ ইসরাইল বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়নি। এটি আধুনিক ইতিহাসের সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।

‘মানবিক এলাকা’ও নিরাপদ নয়

ইসরাইল গাজা সিটির জামাল আব্দেল নাসের সড়কের বাসিন্দাদের জন্য নতুন মানচিত্র প্রকাশ করে বলেছে, তারা যেন শহর ছেড়ে দক্ষিণের আল-মাওয়াসিতে চলে যায়। অথচ এই আল-মাওয়াসিই বারবার বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে। যেখানে আগে ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ ছিল, সেখানে এখন প্রায় ৮ লাখ মানুষ গাদাগাদি করে বসবাস করছে।

স্পেনের কঠোর পদক্ষেপ

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সাঞ্চেজ জাতিসংঘের সুরে সুর মিলিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরাইলে অস্ত্র বহনকারী জাহাজ ও বিমান স্পেনের বন্দর ও আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানো হবে এবং অবৈধ ইসরাইলি বসতিতে উৎপাদিত পণ্য আমদানিও নিষিদ্ধ করা হবে। সাঞ্চেজ আরও ঘোষণা দেন, যেকোনো ব্যক্তি যারা সরাসরি এই “গণহত্যা”য় জড়িত, তাদের স্পেনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ও হামাসের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, “এটাই হামাসের জন্য শেষ সতর্কবার্তা।” ওয়াশিংটন নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, যার অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। তবে শর্ত রাখা হয়েছে—গাজার নতুন সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে তবেই এই প্রত্যাহার সম্ভব হবে। হামাস এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, এটি আসলে ইসরাইলকে গাজার ওপর ভেটো ক্ষমতা দেওয়ার ফাঁদ।

পশ্চিম তীরে রক্তপাত

একই দিনে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের হামলায় ছয়জন নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হন। ইসরাইলি সেনা হামলাকারীদের হত্যা করে। এর পর ইসরাইলি বাহিনী পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের বিভিন্ন গ্রাম অবরোধ ও অভিযান চালায়।

জেনিনে অভিযানের সময় দুই কিশোর নিহত হয়। মানবাধিকারকর্মী মুস্তাফা বারঘুতি অভিযোগ করেন, ইসরাইল প্রতিবার এ ধরনের ঘটনা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে সমষ্টিগত শাস্তি দেয়, যার লক্ষ্য পশ্চিম তীর দখল ও জনসংখ্যা উচ্ছেদ।


পাকিস্তান–চীন যৌথ অনুসন্ধানে নতুন দিগন্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১১:২৩
পাকিস্তান–চীন যৌথ অনুসন্ধানে নতুন দিগন্ত
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের আরব সাগরের তলদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যাপক ভাণ্ডারের সন্ধান পাওয়া গেছে। দেশটির নৌবাহিনী এবং চীনের যৌথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান নৌবাহিনীর সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল ফাওয়াদ আমিন বেগ।

গত ৮ আগস্ট সোমবার পাকিস্তান নৌবাহিনী দিবস উপলক্ষে দেশটির বেসরকারি গণমাধ্যম জিও নিউজ আয়োজিত বিশেষ টক শো ক্যাপিটাল টক-এ অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সম্প্রতি পাকিস্তানের জলসীমার ভেতরে আরব সাগরের তলদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এই আবিষ্কার পাকিস্তানের সামুদ্রিক সীমার খনিজ সম্পদসম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করেছে।

ফাওয়াদ আমিন বেগের মতে, “আমাদের জলসীমা শুধু সামুদ্রিক প্রাণবৈচিত্র্য বা সম্পদেই সমৃদ্ধ নয়, বরং খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার হিসেবেও তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা এই সম্পদকে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগাতে পারি, তবে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হব।”

তবে এ পর্যায়ে কত পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস সঞ্চিত রয়েছে তা নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট হিসাব বের করতে হলে আরও গভীর ও বিস্তৃত অনুসন্ধান জরুরি, যার জন্য বড় আকারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, বিনিয়োগকারী খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।

রিয়ার অ্যাডমিরাল ফাওয়াদ আরও জানান, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগকারী সংস্থা স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কাউন্সিল (SIFC) ইতোমধ্যে এই খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এটি পাকিস্তানের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ বলে তিনি মনে করেন।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরও পাকিস্তানের ভেতরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান কার্যক্রম খুব সীমিত পরিসরে হয়েছে। বিস্তৃত ভূগর্ভস্থ ও সামুদ্রিক সম্পদ এখনো অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। গত বছর চীন পাকিস্তানকে এই খাতে সহযোগিতার প্রস্তাব দিলে ইসলামাবাদ তা গ্রহণ করে এবং এরপর থেকেই বেইজিং ও ইসলামাবাদ যৌথ উদ্যোগে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে।

-শরিফুল


ভারত-নেপাল সীমান্তে সতর্কতা জারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ০৯:৪৩:৫৬
ভারত-নেপাল সীমান্তে সতর্কতা জারি
ছবি: সংগৃহীত

নেপালে দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে হাজার হাজার যুবক রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভে অংশ নেয়। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে তারা বিক্ষোভ করলে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সরকারি দমন-পীড়নের মুখে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ইতোমধ্যে সহিংসতায় অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করেছেন।

বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী ভারতও উচ্চ সতর্কতা ঘোষণা করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) এক কর্মকর্তা জানান, নেপালে চলমান অস্থিরতার কারণে সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “সতর্কতা সম্পূর্ণ পূর্বসতর্কতামূলক। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে আমরা নিবিড়ভাবে তা পর্যবেক্ষণ করছি।”

ভারত-নেপাল সীমান্ত প্রায় ১ হাজার ৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম রাজ্যের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত। দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে অবাধ চলাচল দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে মজবুত করেছে। তবে প্রতিবেশী দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিলে এই উন্মুক্ত সীমান্তকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

এসএসবি নিশ্চিত করেছে, নেপালের অস্থিরতা যাতে ভারতীয় ভূখণ্ডে ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে সীমান্তরক্ষীরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করছে।

-রফিক


 অনুমোদনের অপেক্ষায় রাশিয়ার ক্যান্সার ভ্যাকসিন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৬:৩৮:১৩
 অনুমোদনের অপেক্ষায় রাশিয়ার ক্যান্সার ভ্যাকসিন
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার উদ্ভাবিত একটি পরীক্ষামূলক ক্যান্সার ভ্যাকসিন সফলভাবে প্রাক-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটি নিরাপদ এবং কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

ফেডারেল মেডিকেল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল এজেন্সির (এফএমবিএ) প্রধান ভেরোনিকা স্কভোর্তসোভা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “কয়েক বছর ধরে এই ভ্যাকসিনের উন্নয়ন চলছে এবং গত তিন বছর ধরে বাধ্যতামূলক প্রাক-ক্লিনিক্যাল গবেষণা পরিচালিত হয়েছে।” স্কভোর্তসোভার মতে, ভ্যাকসিনটি এখন ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত, শুধু আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষা।

তিনি জানান, একাধিক ডোজ প্রয়োগের পরেও ভ্যাকসিনে কোনো ঝুঁকি দেখা যায়নি। বরং এটি ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল দিয়েছে। ক্যান্সারের ধরনভেদে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে টিউমার সংকুচিত হয়েছে এবং রোগের অগ্রগতি ধীর হয়েছে। একইসঙ্গে রোগীদের বেঁচে থাকার হারও বেড়েছে।

ভেরোনিকা স্কভোর্তসোভা আরও জানান, প্রথমে এই ভ্যাকসিন কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হবে। পাশাপাশি গ্লিওব্লাস্টোমা ও মেলানোমার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণা চলছে।

এই ঘোষণা তিনি ভ্লাদিভোস্তকে ৩ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ১০ম ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে (ইইএফ) দেন। এবারের ফোরামে ৭৫টিরও বেশি দেশ থেকে ৮ হাজার ৪০০ জনের বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে, বর্তমানে প্রোস্টেট ও ব্লাডার ক্যান্সারের জন্য কিছু ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে আরও কার্যকর ক্যান্সার ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলছে।


নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৬:২৮:২২
নেপালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথ
ছবি: সংগৃহীত

নেপালে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ এবং ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছে ‘জেনারেল জেড’ নামে পরিচিত তরুণরা। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এই আন্দোলন রাজপথে সহিংস রূপ নেয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে পাঁচজন নিহত এবং ৮০ জনেরও বেশি আহত হন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভোর থেকেই পরিস্থিতি অস্থির হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনের কাছে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করলে পুলিশ একাধিক স্থানে গুলি চালায়। এরপর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানীতে কারফিউ জারি করে।

সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন

বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভের মাঝে গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপাল সরকার ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরই ‘জেন-জি’ নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা এই পদক্ষেপকে ভিন্নমত ও সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর দমনের একটি প্রত্যক্ষ চেষ্টা হিসেবে দেখছে।

সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ থাকলেও তরুণরা টিকটক এবং রেডিটের মতো বিকল্প প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়। সোমবার বিক্ষোভে স্কুল ও কলেজের পোশাক পরা অনেক শিক্ষার্থীকেও দেখা গেছে। তাদের হাতে ছিল ‘স্বাধীন কণ্ঠস্বর আমাদের অধিকার’ এবং ‘করদাতাদের টাকা কোথায় গেল?’ লেখা প্ল্যাকার্ড। তারা পুলিশের দিকে ডালপালা এবং পানির বোতল নিক্ষেপ করে।

প্রধানমন্ত্রী ওলির কঠোর অবস্থান

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি অনিবন্ধিত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করার সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) এক সম্মেলনে তিনি বলেন, “মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তির চাকরি হারানোর চেয়ে জাতির স্বাধীনতা অনেক বড়।” তিনি আরও বলেন, “আইন অমান্য করা এবং সংবিধানকে অবজ্ঞা করা গ্রহণযোগ্য নয়।”


ইসরায়েলে বাসে হামলা: হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, চলছে ব্যাপক অভিযান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৪:৫৫:০২
ইসরায়েলে বাসে হামলা: হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে, চলছে ব্যাপক অভিযান
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের জেরুজালেম শহরের রামোট জংশনের প্রবেশপথে একটি বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত পাঁচজন নিহত এবং ২২ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এই হামলা হয় বলে জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে।

এমডিএ জানিয়েছে যে, বন্দুকধারীরা ৬২ নম্বর বাসে উঠে যাত্রীদের ওপর গুলি চালাতে শুরু করে। পরে হামলায় জড়িত দুইজনকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এই ঘটনার পর জেরুজালেমের ভেতরে এবং বাইরের সব প্রবেশ ও বেরোনোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এমডিএ-র প্যারামেডিক নাদাভ তাইব বলেন, "আমরা গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। যখন আমরা পৌঁছাই, তখন রাস্তায় এবং বাসস্টপের কাছে ফুটপাতে অচেতন অবস্থায় মানুষ পড়ে থাকতে দেখেছি। মেঝেতে প্রচুর ধ্বংসযজ্ঞ এবং ভাঙা কাঁচ ছিল। আমরা আহতদের চিকিৎসা প্রদান শুরু করেছি এবং তাদের হাসপাতালে স্থানান্তর অব্যাহত রেখেছি।"

ইউনাইটেড হাতজালাহ মেডিকেল টিমও ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজন আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে যে, ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে ব্যাপক অভিযান চলছে। তবে হামলাকারীরা নিহত হয়েছে নাকি পালিয়ে গেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

সুত্র: জেরুজালেম পোস্ট


যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে এই শাবানা মাহমুদ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৪:১৩:১৪
যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে এই শাবানা মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত শাবানা মাহমুদকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে শাবানা মাহমুদ দেশটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয় অভিবাসন, পুলিশিং এবং জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা তদারকি করে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এ তথ্য জানায়।

অ্যাঞ্জেলা রেইনার ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারির কারণে উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পরই শাবানা মাহমুদের এই নিয়োগ ঘোষণা করা হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি বলেন, “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়া। সরকারের প্রথম দায়িত্ব হলো নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আর প্রতিদিন আমি সে লক্ষ্যেই কাজ করব।”

১৯৮০ সালে বার্মিংহামে জন্ম নেওয়া শাবানা মাহমুদের শিকড় পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের মিরপুরে। তার বাবা-মা লুধারের ভোহরিয়ান গ্রামে বসবাসের পর সৌদি আরবে কিছুদিন কাটান এবং পরবর্তীতে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। অক্সফোর্ডের লিংকন কলেজ থেকে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষে তিনি ব্যারিস্টারি পেশায় যুক্ত হন।

২০১০ সালে বার্মিংহামের লেডিওয়ুড আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করেন শাবানা। তিনি ছিলেন দেশটির প্রথম দিককার মুসলিম নারী এমপিদের একজন। পরবর্তীতে ছায়া অর্থমন্ত্রী, ছায়া কারাগারবিষয়ক মন্ত্রীসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

২০২৪ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির বিজয়ের পর তিনি বিচারমন্ত্রী ও লর্ড চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পান। এ সময়ে তিনি কারাগারে অতিরিক্ত বন্দির চাপ কমানো এবং বিচারব্যবস্থার জট নিরসনে নানা পদক্ষেপ নেন। কারাগার সংস্কার বিষয়ে সম্প্রতি তিনি বড় একটি বিল সংসদে উপস্থাপন করেন। তবে এবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাকে আরও জটিল দায়িত্ব নিতে হচ্ছে—বিশেষ করে অভিবাসন সংকট, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য হোটেল, রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসীর চ্যানেল অতিক্রম এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের মতো চ্যালেঞ্জ তার সামনে।

শাবানা স্পষ্ট করে বলেছেন, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ছাড়া ব্রিটেন বিভাজিত হয়ে পড়তে পারে। তবে তিনি লেবার পার্টির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেছেন, ব্রিটেনকে তিনি “পড়শি-সুলভ জাতি”তে রূপ দিতে চান। ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশন নিয়েও সংস্কারের প্রস্তাব এনেছেন তিনি। বিশেষ করে অভিবাসন মামলায় ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের অধিকার (আর্টিকেল ৮) প্রয়োগে কড়াকড়ি আনার পরিকল্পনা রয়েছে তার। বিচারমন্ত্রী থাকাকালে তিনি বিদেশি অপরাধীদের দ্রুত বহিষ্কারের প্রস্তাব করেছিলেন। তার ভাষায়, “যদি কেউ আমাদের আতিথেয়তার অপব্যবহার করে আইন ভাঙে, তবে তাকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো হবে।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পর লর্ড গ্লাসম্যান তাকে লেবার পার্টির গুরুত্বপূর্ণ অংশের নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে শাবানা মাহমুদ নানান হয়রানি, ভুয়া তথ্য প্রচার এবং ঘৃণার শিকার হয়েছেন। স্থানীয় পাকিস্তানি কমিউনিটিতেও তাকে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় নারী বিদ্বেষী প্রচারণা, পোস্টার ছেঁড়াসহ নানা হয়রানি তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবুও তিনি বলেছেন, “মুসলিম নারী হয়েও সংসদে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়া আমাকে অনুপ্রাণিত করে।”

ফিলিস্তিন–ইসরায়েল সংঘাত প্রসঙ্গে শাবানা বলেন, গাজার যুদ্ধ ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে নিরীহ শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অমানবিক। তিনি স্পষ্ট করে জানান, লেবার পার্টি দুই রাষ্ট্র সমাধানে বিশ্বাসী এবং এটিই একমাত্র শান্তির পথ।

-রফিক


রাশিয়ার নজিরবিহীন হামলার পর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১১:২৭:১৪
রাশিয়ার নজিরবিহীন হামলার পর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
ছবিঃ সংগৃহীত

রাশিয়ার নজিরবিহীন আকাশ হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার মস্কোর বিরুদ্ধে আরও নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইউক্রেনজুড়ে চালানো এই হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয় এবং রাজধানী কিয়েভের মন্ত্রিপরিষদ ভবনসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনায় আগুন ধরে যায়।

ভোরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন একযোগে আছড়ে পড়ে কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায়। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানায়, মাত্র এক রাতে রাশিয়া অন্তত ৮১০টি ড্রোন ও ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে—যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আক্রমণ। হামলায় সরকারি স্থাপনার পাশাপাশি আবাসিক ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে অনেক নারী-শিশু রয়েছে। একজন গর্ভবতী নারী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেছেন; মা ও নবজাতক দুজনের জীবনই ঝুঁকিতে রয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি ‘দৃঢ় প্রতিক্রিয়া’ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “পুতিন বিশ্বের ধৈর্য পরীক্ষা করছেন। আমাদের অংশীদারদের শক্ত প্রতিক্রিয়াই এখন সময়ের দাবি।” তিনি আরও জানান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং ফ্রান্স ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদারে সহায়তা দেবে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিদেঙ্কো কিয়েভের মন্ত্রিপরিষদ ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের ভিডিও প্রকাশ করে বলেন, “আমরা ভবনগুলো পুনর্নির্মাণ করব, কিন্তু প্রাণগুলো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।” এদিকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, হামলায় সাতটি ঘোড়াও মারা গেছে। তারা এক বিবৃতিতে লিখেছে, “বিশ্ব হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না, যখন একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র প্রতিদিন মানুষ ও প্রাণের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।”

হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ বলেছেন, রাশিয়া ‘যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের যুক্তিতে’ ক্রমেই ডুবে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার এটিকে ‘কাপুরুষোচিত হামলা’ আখ্যা দিয়েছেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লেইয়েন মন্তব্য করেছেন, ক্রেমলিন এখন কার্যত ‘কূটনীতির প্রতি উপহাস’ করছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন, রুশ তেল আমদানি করা দেশগুলোর ওপরও শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তাঁর মতে, এতে রাশিয়ার অর্থনীতি ভেঙে পড়বে এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আসতে বাধ্য করা যাবে।

রাশিয়া অবশ্য দাবি করেছে, তারা কেবল কিয়েভের একটি প্ল্যান্ট ও লজিস্টিকস হাবকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, সাধারণ জনগণকে নয়। তবে আন্তর্জাতিক মহল রাশিয়ার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

উল্লেখ্য, আগস্টের মাঝামাঝি ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ার পর থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা আরও তীব্র করেছে। এদিকে যুদ্ধবিরতির যেকোনো প্রস্তাব তদারকির জন্য ইউরোপের দুই ডজনের বেশি দেশ নিজেদের সম্পৃক্ত করার অঙ্গীকার করেছে। এমনকি কয়েকটি দেশ প্রয়োজনে মাটিতে সেনা পাঠাতেও আগ্রহ দেখিয়েছে, যা নিয়ে মস্কো কঠোর আপত্তি জানিয়েছে।

তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাতে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করেছে রাশিয়া। ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এই সংঘাতে ইতিমধ্যেই লাখো মানুষ গৃহহীন এবং কয়েক হাজার প্রাণ হারিয়েছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি

পাঠকের মতামত: