ইসরায়েল-সিরিয়া: গোপন সংলাপে নতুন জোটের ইঙ্গিত

সত্য নিউজ: মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক অঙ্গনে সম্ভাব্য বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, ইসরায়েল ও সিরিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে চলমান একাধিক গোপন বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আব্রাহাম চুক্তিতে সিরিয়ার অন্তর্ভুক্তি এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ।

টাইমস অব ইসরায়েল-এর বরাতে জানা যায়, এই সংলাপের পেছনে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার। চ্যানেল ১২ জানায়, আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক এক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) শীর্ষ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ওডেড বাসিউক, সিরিয়ার প্রতিনিধিরা এবং তুরস্কের কর্মকর্তারা।

এই আলোচনার মাত্র একদিন আগে রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা–র মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ট্রাম্প সরাসরি শারাকে আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে ট্রাম্প জানান, শারা চুক্তিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তবে তার দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এখনো নিশ্চিত নয়।

আলোচনার আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো শারার অতীত পরিচয়। একসময় আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট এই নেতাকে ইসরায়েল সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচনা করত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। তেহরানের প্রভাবমুক্ত একটি সিরিয়া গঠনে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও উপসাগরীয় দেশগুলো সক্রিয়। ইসরায়েলও এই নতুন প্রেক্ষাপটে সিরিয়াকে নিজেদের কৌশলগত জোটে আনার সুযোগ দেখছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ার আব্রাহাম চুক্তিতে যোগদানের সম্ভাবনা কেবল সিরিয়া-ইসরায়েল নয়, বরং পুরো অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্য পুনর্গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব ও তুরস্কের ভূমিকা ঘিরে এই আলোচনা ক্রমেই জটিল আকার নিচ্ছে।

যদিও এখনো সবকিছু গোপন পর্যায়ে, তবে এ আলোচনার ধারাবাহিকতা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে এক যুগান্তকারী রূপান্তরের ইঙ্গিত দিচ্ছে।