এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে: আদালতে জুনায়েদ আহমেদ পলক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২০ ১৬:৩০:৩২
এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে: আদালতে জুনায়েদ আহমেদ পলক
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘এক মুজিব লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে। যার প্রমাণ আজিজুর রহমান।’ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মারধরের শিকার রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেন।

বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে সাবেক মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, আতিকুল ইসলাম এবং পলককে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাদেরকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।

জুলাই আন্দোলনে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ট্রাকচালক হোসেন নিহতের মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে তিনজনকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট দিয়ে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় এজলাসে তোলা হয়। এ সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পলক ওই মন্তব্য করেন।

তাদেরকে এজলাসে ওঠানোর কিছুক্ষণ পর বিচারক আসেন। প্রথমে ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদ হত্যাচেষ্টা মামলার শুনানি শুরু হয়। পরে পলকের মামলার ডাক পড়ে। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে পলক বিচারকের উদ্দেশে জানতে চান—‘ঘটনা কত তারিখের, আমি কত নম্বর আসামি এবং কেন এ মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে?’

রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবী জানান, তিনি এ মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. আকতারুজ্জামান আদালতে বলেন, ‘গতবছর ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে ট্রাকচালক হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় আসামি জুনাইদ আহমেদ পলকের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করছি।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমনও এ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। পরে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিতে মারা যান ট্রাকচালক হোসেন। এ ঘটনায় তার মা রিনা বেগম ৩১ আগস্ট মামলা দায়ের করেন।

/আশিক


‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’—ফেসবুক ভিডিওতে শাহিদুল আলমের দাবি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১১:৫৬:২০
‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’—ফেসবুক ভিডিওতে শাহিদুল আলমের দাবি
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও লেখক শাহিদুল আলম দাবি করেছেন, গাজামুখী ‘ফ্লোটিলা মিশন’-এর অংশ হিসেবে ভূমধ্যসাগরে যাত্রাকালে তাকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে অপহরণ করেছে।

বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় শাহিদুল আলম বলেন, “আমাদের জাহাজটি সাগরে আটক করা হয়েছে, এবং আমি ইসরায়েলের দখলদার বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছি। এই রাষ্ট্র গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতায়।”

তিনি তার ভিডিও বার্তায় আরও আহ্বান জানান—“আমার সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি অনুরোধ, ফিলিস্তিনের মুক্তির সংগ্রাম থেমে থাকতে পারে না; এই লড়াই অব্যাহত রাখুন।” তবে ভিডিওটিতে তার বর্তমান অবস্থান বা পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বুধবার জানায়, তারা গাজা অবরোধ ভাঙার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ‘গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা’র নয়টি নৌযানকেই সাগরে আটক করেছে এবং যাত্রীদের ইসরায়েলি একটি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তাদের দ্রুত বহিষ্কার করা হবে।

ফ্লোটিলা সংগঠকরা এর আগে নিশ্চিত করেন যে, ‘দ্য কনসায়েন্স’ নামের জাহাজটি, যাতে শাহিদুল আলমসহ ৯৩ জন শান্তিকর্মী ছিলেন, সেটি ইসরায়েলি বাহিনী আক্রমণ করেছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে এই জাহাজটি ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করেছিল।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ এক বিবৃতিতে জানায়, “গাজা উপকূলে অবৈধ নৌ অবরোধ ভাঙার আরেকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা শেষ হয়েছে কিছুই না পেয়েই। সকল যাত্রী নিরাপদে আছেন এবং ভালো আছেন। তাদের দ্রুতই নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।”

এদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ইসরায়েলের এই নৌআক্রমণ ও আটক অভিযানকে “অবৈধ ও মানবাধিকারবিরোধী” বলে তীব্র নিন্দা জানান। তিনি মালয়েশীয় শান্তিকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছেন, যারা একই ফ্লোটিলায় অংশ নিয়েছিলেন।

বুধবারের এই ঘটনাটি আসে মাত্র এক সপ্তাহ পর, যখন ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের আরেকটি বড় বহর আটক করেছিল। সেই অভিযানে ৪২টি জাহাজে ছিলেন প্রায় ৪৭৯ জন কর্মী, যাদের বেশিরভাগকেই ইতোমধ্যে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই মিশনে অংশ নিয়েছিলেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থানবার্গও।

শান্তিকর্মীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গাজা উপকূলের ওপর ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যেই এসব ফ্লোটিলা অভিযান সংগঠিত হয়। অন্যদিকে, ইসরায়েল দাবি করে, তাদের অবরোধ “আইনসম্মত” এবং গাজা উপকূলকে তারা একটি “যুদ্ধক্ষেত্র” হিসেবে গণ্য করে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই সাম্প্রতিক আটক অভিযান কেবল আন্তর্জাতিক মানবিক নীতির লঙ্ঘন নয়, বরং গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলার প্রচেষ্টাকেও ব্যাহত করছে। শাহিদুল আলমের অপহরণের খবর বাংলাদেশের মানবাধিকার ও সাংবাদিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি করেছে।

শাহিদুল আলম বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয় কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তার অংশগ্রহণ ছিল শান্তিপূর্ণ মানবিক সহায়তা মিশনে, যার লক্ষ্য ছিল গাজার অবরোধ ভাঙা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। তবে এখন পর্যন্ত তার অবস্থান বা মুক্তি সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

-নাজমুল হাসান


নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সেফ এক্সিট’ বিতর্ক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১১:৩৩:১২
নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সেফ এক্সিট’ বিতর্ক
ছবিঃ ডেইলি সান

জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখন থেকে মাত্র তিন মাস দূরে। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনের আয়োজন বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর একটি। একাধিকবার প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন—নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে। সেই প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনীতি এখন সম্পূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছেন, জনসংযোগ ও প্রচারণা শুরু করেছেন।

এই সংবেদনশীল সময়ে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি এক মন্তব্যে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। তারা এখন নিজেদের নিরাপদ প্রস্থানের কথা ভাবছেন।”তার এই বক্তব্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। টেলিভিশন টকশো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় উত্তপ্ত আলোচনা। এমনকি সরকার ঘনিষ্ঠ মহলেও বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন ছড়ায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নাহিদ ইসলাম সরকারের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন, যদিও তিনি এখন সরকারে নেই। তাই তার এমন মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নয়—এটি এক ধরনের বার্তাও বহন করে যে, সরকারের ভেতরেই এখন অনিশ্চয়তা ও অবিশ্বাস বাড়ছে।

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “উপদেষ্টারা যদি বিশ্বাস করতেন যে তাদের নিয়োগের উৎস ছিল গণঅভ্যুত্থানের শক্তি—সেই সাধারণ মানুষ যারা রাস্তায় নেমে প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন—তাহলে আজ এই বিচ্যুতি ঘটত না। তারা সেই শক্তির প্রতি আস্থা হারিয়েছেন।”

পরদিন উত্তরাঞ্চলের এনসিপি প্রধান সংগঠক সারজিস আলম আরও কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, “কিছু উপদেষ্টা কেবল নিজেদের সুরক্ষার কথা ভাবছেন, দায়িত্ব পালন করছেন অর্ধেক মনোযোগে। কিন্তু যারা গণঅভ্যুত্থানের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছেন, তাদের এ ধরনের মনোভাব চলতে পারে না। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে তাদের নিরাপদ প্রস্থান বলে কিছু থাকবে না—যেখানেই যান না কেন, বাংলাদেশিরা তাদের খুঁজে নেবে।”

এনসিপি অভিযোগ করেছে যে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের দাবি, কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। এই হতাশা থেকেই ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গটি রাজনৈতিক আলোচনায় এসেছে।

অন্যদিকে, সরকারের প্রতি সমর্থন জানানো কয়েকটি রাজনৈতিক দলও উপদেষ্টাদের কিছু বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ—কিছু উপদেষ্টা ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চেয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে জটিল করার চেষ্টা করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী মনে করেন, “ইউনুস সরকার বেশ কিছু গুরুতর ভুল করেছে। এর ফলেই জনগণ ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ফল ভোগ করতে পারেনি। তাই এখন উপদেষ্টাদের নিরাপদ প্রস্থানের আলোচনা জোরালো হচ্ছে।”তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ রাজনীতিকদের অন্তর্ভুক্ত না করা। তিনি এনজিও ও বিশ্বব্যাংক ঘরানার ব্যক্তিদের নিয়ে প্রশাসন সাজিয়েছেন, যাদের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় বিদেশমুখী ও স্বার্থকেন্দ্রিক। এটি জনগণের সরকার হিসেবে প্রত্যাশিত ছিল না।”

এ প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, “এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল, তাই এটি মূলত জনগণের সরকার। উপদেষ্টাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল—তারা সংস্কার, ন্যায়বিচার ও জনকল্যাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন। কিন্তু নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণার পর প্রশাসনে যেন এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। উপদেষ্টারা অনুৎসাহী হয়ে পড়েছেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।”

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “উপদেষ্টাদের কিছু অসংলগ্ন মন্তব্য থেকেই ‘সেফ এক্সিট’ ইস্যুটি সামনে এসেছে। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম প্রথম এই ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দেন। আমি মনে করি, নাহিদ ইসলামের মতো ব্যক্তিরা আশা করেছিলেন কিছু উপদেষ্টা সংস্কারমূলক ভূমিকা নেবেন, কিন্তু তা হয়নি। শুরুতে এনসিপি ও সরকারের মধ্যে ভালো সমন্বয় থাকলেও পরে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সরকার যদি নিরপেক্ষতা হারায়, তাহলে আসন্ন নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা কমবে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করা। কারণ, আগামী নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করছে সেই আস্থার ওপর।

-সুত্রঃ ডেইলি সান


কূটনৈতিক জয়: ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে হারিয়ে ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ২১:০০:৩৮
কূটনৈতিক জয়: ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে হারিয়ে ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোর ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

কূটনৈতিক জয়

ইউনেস্কোর এই মর্যাদাপূর্ণ নির্বাচনে বাংলাদেশ ৩০-২৭ ভোটে জাপানকে পরাজিত করে এই সম্মান অর্জন করেছে। নির্বাচনের প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিল, তবে শেষ পর্যায়ে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।

এই জয়কে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য ও সাংস্কৃতিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলন বিশ্বের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ, যার সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাওয়া আন্তর্জাতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অর্জন।

ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের ৪৩তম অধিবেশনটি শুরু হবে চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর উজবেকিস্তানের সামারকান্দ শহরের সিল্ক রোড কনফারেন্স সেন্টারে। সম্মেলনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ১৩ নভেম্বর।


আজ রাতে দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন ‘হার্ভেস্ট মুন’

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৭:২৬:২২
আজ রাতে দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন ‘হার্ভেস্ট মুন’
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের প্রথম সুপারমুন আজ (মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর) রাতে দেখা যাবে। এদিন চাঁদ তার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছাবে। ফলে স্বাভাবিক পূর্ণিমার তুলনায় চাঁদকে বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে। গত বুধবার (১ অক্টোবর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

হার্ভেস্ট মুন: কেন এটি বিশেষ?

জ্যোতির্বিদদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সুপারমুনকে বলা হয় ‘হার্ভেস্ট মুন’। এটি প্রতি বছর শরৎ ঋতুর শুরুতে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণত পূর্ণিমার চাঁদ রাতভর ওঠে না, তবে হার্ভেস্ট মুনের সময় চাঁদ স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত ওঠে এবং একাধিক রাত ধরে আকাশে দৃশ্যমান থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময়ে এটি আরও উজ্জ্বল দেখায়।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর মোট তিনটি সুপারমুন উপভোগ করার সুযোগ মিলবে, যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে অক্টোবরের এই হার্ভেস্ট মুন।

কোথা থেকে দেখা যাবে?

পাকিস্তান স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন (SUPARCO) জানিয়েছে, পাকিস্তান ছাড়াও বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ থেকেই সুপারমুন দেখা যাবে। আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকে এটি খালি চোখে উপভোগ করা যাবে।

সুপারকো কর্মকর্তাদের মতে, আজকের সুপারমুন গড় পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল হবে। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২,২৪,৫৯৯ মাইল (৩,৬১,৪০০ কিলোমিটার) দূরে থাকবে। সুপারমুন দেখার জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। খোলা আকাশে দিগন্ত বরাবর তাকালেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যাবে।


বিপদের এলাকা’য় প্রবেশ করতে আর দেরি নেই, জানালেন শহিদুল আলম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৬:৩২:১২
বিপদের এলাকা’য় প্রবেশ করতে আর দেরি নেই, জানালেন শহিদুল আলম
ছবি: সংগৃহীত

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের অংশ হিসেবে গাজা অভিমুখী কনশেনস জাহাজটি আগামীকাল বুধবার (৮ অক্টোবর) ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক অঞ্চলে পৌঁছে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান।

শহিদুল আলম ‘রেড জোন’ বলতে সেই অঞ্চলকে বুঝিয়েছেন, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে আটকে অধিকারকর্মীদের আটক করেছিলেন।

ধীরগতির কারণে বিলম্ব

শহিদুল আলম লিখেছেন, “আমরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছি। কারণ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস’ নৌবহরে থাকা ছোট ও ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।” তিনি জানান, এসব জাহাজও এফএফসির (ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন) অংশ।

তবে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের জাহাজ সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের চেয়ে অনেক দ্রুত এগিয়েছে। ওই নৌবহর প্রচণ্ড বাতাস ও ঝড়ের কারণে সাময়িকভাবে থেমে গিয়েছিল।

শহিদুল আলম আরও লেখেন, “ধীরগতির নৌযানগুলো এখন আমাদের সমকাতারে এসেছে। আমরা এখন ‘রেড জোন’ থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি। এটি সেই অঞ্চল যেখানে আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী অবৈধভাবে ফ্লোটিলার নৌযানগুলোকে আটক করেছিল।”


টানা কমছে এলপিজি’র দাম: ১২ কেজি সিলিন্ডারের নতুন মূল্য কত?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৫:৫২:৫২
টানা কমছে এলপিজি’র দাম: ১২ কেজি সিলিন্ডারের নতুন মূল্য কত?
ছবি: সংগৃহীত

ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম আবারও কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি অক্টোবর মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মাসে এই দাম ছিল ১ হাজার ২৭০ টাকা।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দাম কমানোর এই নতুন ঘোষণা দিয়েছে বিইআরসি। সংস্থাটি জানিয়েছে, এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।

ধারাবাহিকভাবে কমছে দাম

বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত ১ হাজার ২৭০ টাকা থেকে এবার ২৯ টাকা কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তারও আগে আগস্ট মাসে ৯১ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে অটোগ্যাসের দামও ৪ টাকা ১৮ পয়সা কমিয়ে ৫৮ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

জুনে ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ২৮ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪০৩ টাকা এবং ২ জুলাই তা ৩৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।


এবারের নির্বাচনকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি: সিইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৪:০৭:০৪
এবারের নির্বাচনকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি: সিইসি
ছবি: সংগৃহীত

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, এবারের নির্বাচনকে তিনি তার জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন এবং ‘জাতিকে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চান’। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

সহযোগিতার আহ্বান ও চ্যালেঞ্জ

সিইসি বলেন, “দেশের জন্য কিছু করতে এবারের নির্বাচন জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার বিকল্প নেই।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন নির্বাচনে কোথায় কোথায় কী কী সমস্যা হয়, কোথায় কোথায় কী কী গ্যাপ রয়েছে। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতগুলো বিবেচনা করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

সিইসি জানান, ইসি অনেকগুলো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, যার মধ্যে রয়েছে:

নতুন চ্যালেঞ্জ: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-এর অপব্যবহার মোকাবিলা করা।

ভোটাধিকার: প্রবাসী ভোটার, সরকারি কর্মকর্তা ও কয়েদিদের ভোটের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অন্যান্য সংস্কার: ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নারী-পুরুষ ভোটারের পার্থক্য কমানো হয়েছে এবং একটি হাইব্রিড পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

বয়স ও লক্ষ্য

সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, “আমার বয়স ৭৩ বছর। আর চাওয়ার কিছু নেই। শুধু সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া লক্ষ্য।” এই লক্ষ্য পূরণের জন্য তিনি সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংলাপে ইসির সাবেক সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. জকরিয়া, সাবেক যুগ্মসচিব খন্দকার মিজানুর রহমান, নূরুজ্জামান তালুকদার, এবং নারী নেত্রী মাহফুজা আক্তার, মুনিরা খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


“ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত”—তারেক রহমান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১১:০৮:২৪
“ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত”—তারেক রহমান
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তাঁর দল আশা করে—বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। পাশাপাশি সরকার যেন ন্যূনতম কিছু প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করে।

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা। সেই প্রক্রিয়ায় তারা যদি প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে তা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক হবে।”

তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের নির্বাচন আয়োজনের দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাই ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের ধরন নির্ধারণ করবে। অর্থাৎ, বর্তমান প্রশাসন কতটা সফলভাবে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, সেটিই হবে রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থার নির্ধারক।

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের এই নেতা তাঁর দলের অবস্থান ও প্রত্যাশা তুলে ধরেন বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে। সাক্ষাৎকারটির দ্বিতীয় পর্ব মঙ্গলবার সকালে অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে।

বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও সিনিয়র সাংবাদিক কাদির কল্লোলের সঙ্গে আলাপচারিতায় তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি চায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এমন এক ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ সৃষ্টি করুক, যেখানে সব দলের জন্য সমান সুযোগ থাকবে এবং জনগণ তাদের মতামত অবাধে প্রকাশ করতে পারবে।”

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা

তারেক রহমানের এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন একধরনের ‘শর্তাধীন আস্থা প্রকাশ’ হিসেবে। তিনি সরাসরি সরকারের সমালোচনা না করে বরং একটি স্পষ্ট প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন—সরকার যেন অন্তর্বর্তী সময়ের লক্ষ্যচ্যুত না হয় এবং ন্যায্য নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি নিশ্চিত করে।

অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে রাজনৈতিক মেরুকরণ, নির্বাচনী কাঠামো এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি নেতার এমন অবস্থান আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, বিশেষ করে যেসব দেশ বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের অগ্রগতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, তারেক রহমানের বক্তব্য একদিকে সরকারের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করছে—যে, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার একমাত্র পথ, অন্যদিকে এটি বিএনপির গণতান্ত্রিক অবস্থান ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিতও দেয়।

বিএনপির প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্ক

তারেক রহমানের বক্তব্যে উঠে এসেছে এক বাস্তবধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি—অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ‘আচরণনির্ভর’ হবে, অর্থাৎ সরকারের কার্যক্রম ও নির্বাচন প্রস্তুতির মানের ওপর নির্ভর করবে পারস্পরিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ।

তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা চাই এই সরকার তাদের দায়িত্ব পালনে সফল হোক। যদি তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে পারে, তাহলে সেটি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে।”

এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিএনপির পক্ষ থেকে একদিকে যেখানে সরকারের প্রতি সংযমী প্রত্যাশা প্রকাশ করা হয়েছে, অন্যদিকে ভোটার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছেছে—যে বিএনপি সংঘাত নয়, বরং ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক পুনর্গঠনের পথে আগ্রহী।

-এম জামান


সিঙ্গাপুরে প্রধান উপদেষ্টার দূতের ব্যস্ত সফর: বিনিয়োগ ও সহযোগিতায় নতুন গতি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১০:০৯:২৮
সিঙ্গাপুরে প্রধান উপদেষ্টার দূতের ব্যস্ত সফর: বিনিয়োগ ও সহযোগিতায় নতুন গতি
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী ও ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন।

তিনি সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অং ইয়ে কুং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান এবং শ্রম ও মানবসম্পদবিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী দিনেশ বাসু দাশের সঙ্গে তাঁদের নিজ নিজ দপ্তরে বৈঠক করেন। আলোচনায় বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়।

সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী গ্রেস ফু-এর আমন্ত্রণে লুতফে সিদ্দিকী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিঙ্গাপুর গ্র্যান্ড প্রিক্স উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে যোগ দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুরের শ্রম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ড. তান সি লেং, পররাষ্ট্রবিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যান সিও হুয়াং এবং পরিবহনবিষয়ক জ্যেষ্ঠ রাষ্ট্রমন্ত্রী মুরালি পিল্লাই।

একই অনুষ্ঠানে তিনি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী লি সিয়ান লুং, উপপ্রধানমন্ত্রী গ্যান কিম ইয়ং, প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের মন্ত্রী ইন্দ্রাণী রাজাহ এবং জাতীয় উন্নয়নবিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালভিন তানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসব বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিনিয়োগের পরিবেশ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ তুলে ধরেন।

এ সময় লুতফে সিদ্দিকী বিশ্বব্যাপী শীর্ষ বেসরকারি খাতের নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ রে ডালিও, গ্র্যাব-এর প্রধান নির্বাহী অ্যান্থনি তান, অ্যান্টলারের প্রধান নির্বাহী ম্যাগনাস গ্রিমেল্যান্ড, জিআইসি-এর প্রধান নির্বাহী লিম চাউ কিয়াত, সিঙ্গাপুর স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী লোহ বুন চাই, এভারকোর-এর এশিয়া চেয়ারম্যান কিথ ম্যাগনাস এবং ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য মণ্ডলীর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য বকরি।

তার সফরের শেষ দিনে লুতফে সিদ্দিকী এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের চেয়ারম্যান লি চুয়ান টেক, পিএসএ (বন্দর কর্তৃপক্ষ)-এর আঞ্চলিক প্রধান ভিনসেন্ট এনজি এবং পেপ্যালের আঞ্চলিক প্রধান আমির ভ্যালিয়ানির সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে উভয় দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনা অনুসন্ধান করা হয়।

বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রম ও বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে তিনি প্রত্যক্ষভাবে বিভিন্ন পক্ষকে অবহিত করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের বহুমাত্রিক সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ দূতের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “তরুণ ও পরিশ্রমী জনগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল উদ্ভাবন ও যোগাযোগ অবকাঠামোয় বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে তার পরবর্তী প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ধাপে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।”

এ সফরে লুতফে সিদ্দিকী চ্যানেল নিউজ এশিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্বাচনের আগে অনলাইন বিভ্রান্তিমূলক তথ্যপ্রবাহের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেন এবং সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

তিনি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট বায়োমেট্রিকের জন্য আবেদনকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সময় পাচ্ছেন, যেখানে কয়েক মাস আগেও অপেক্ষা করতে হতো চার মাসের বেশি। সেই সঙ্গে ১২ হাজারেরও বেশি আবেদন বকেয়া ছিল।

এ ছাড়া, কাজের ভিসা (IPA) হাইকমিশনে গিয়ে শারীরিকভাবে অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা উভয়ের জন্যই বড় স্বস্তি এনেছে।

উল্লেখ্য, এসব বিষয় সমাধানে লুতফে সিদ্দিকী স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রবাসীকল্যাণবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।

-নাজমুল হোসেন

পাঠকের মতামত: