উপহার না ঘুষ? কাতারের জেটে রাজনীতি উত্তপ্ত

সত্য নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য কাতার থেকে প্রস্তাবিত ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান উপহার গ্রহণের সম্ভাবনা দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। উপহারের প্রস্তাবটি গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করার পর ট্রাম্পের অবস্থান ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক ও জনমতভিত্তিক বিভাজন।

দ্বিধাবিভক্ত আমেরিকা

যদিও তীব্র রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও ট্রাম্প তার সমর্থকদের বড় একটি অংশকে এ সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন, তবে বিষয়টি ঘিরে তার বিপক্ষেও তৈরি হয়েছে বিরল ঐক্য। ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে কিছু প্রভাবশালী রক্ষণশীল এবং ট্রাম্প ঘনিষ্ঠরাও এর বিরোধিতা করছেন।

নানা মহলের মতে, এই উপহার বাস্তবিক অর্থে ঘুষ বা কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একটি প্রয়াস। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ভাষ্যকার বেন সাপিরো ও লরা লুমারের মতো রক্ষণশীলরাও একে 'ন্যক্কারজনক' ও ‘নৈতিক দাগ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

উপহারের মুখে কূটনৈতিক বার্তা?

কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এই বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগকে হস্তান্তরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বিমানটি ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হলে প্রেসিডেন্টের সংরক্ষণাগারে স্থানান্তর করা হবে। তবে সমালোচকরা মনে করছেন, বিমানটি আসলে ‘উপহার’ নয়— বরং এতে কাতারের কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তারের গন্ধ রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রশাসন এই পুরো প্রক্রিয়ায় ‘পূর্ণ স্বচ্ছতা’ বজায় রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে না ট্রাম্পের এই অবস্থানে।

নিউ ইয়র্ক পোস্ট তাদের সম্পাদকীয়তে স্পষ্ট করে লিখেছে, “এই জেট কোনোভাবেই নিছক উপহার নয়। ট্রাম্পের উচিত এটিকে ফিরিয়ে দেওয়া।”

এই বিতর্ক আরও ঘনীভূত হলে এটি শুধু ট্রাম্পের ভাবমূর্তির ওপর নয়, যুক্তরাষ্ট্র-কাতার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতের কূটনৈতিক নীতির ওপরও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কাতারের বিমান অবশেষে ট্রাম্পের জন্য আকাশে ওড়ে, না কি তা রাজনৈতিক ঝড়ে ভেসে যায়।