আ.লীগকে উদ্দেশ করে তীব্র ভাষায় প্রেস সচিব শফিকুল"

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৫:৫৩:৪৪
আ.লীগকে উদ্দেশ করে তীব্র ভাষায় প্রেস সচিব শফিকুল"

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এক আবেগঘন ও দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন। তার মতে, "জুলাই আমাদের চেতনায় স্থায়ীভাবে এক অগ্নিশিখার জিন বসিয়ে দিয়েছে যা আর নিভে যাওয়ার নয়।" মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক খোলামেলা পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, “জুলাই আমাদের সাহস দিয়েছে, শিখিয়েছে কীভাবে প্রতিকূলতার মধ্যেও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হয়। এই মাস আমাদের শেখায় লড়াই কীভাবে আত্মপরিচয়ের অংশ হয়ে ওঠে। এখন আমরা আর আগের মতো নই আমরা বদলে গেছি, গড়ে উঠেছে এক নতুন প্রজন্ম, যারা দমন-পীড়ন আর ভীতি নয়, বরং আত্মত্যাগ আর ন্যায়ের পতাকাতলে সংগঠিত।”

তিনি দাবি করেন, বিগত দশ মাস ধরে বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগের প্রতি একটিমাত্র প্রত্যাশা ছিল তারা তাদের অতীত অপরাধ স্বীকার করবে এবং একটি নতুন বৈষম্যহীন রাষ্ট্রগঠনে সহযোদ্ধা হিসেবে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবে যা দেখা গেছে তা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত আপনারা (আওয়ামী লীগ) শহীদদের নিয়ে উপহাস করেছেন, গণআন্দোলনকে হেয় করেছেন এবং ১৭ কোটি মানুষকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে জাতিকে কলঙ্কিত করেছেন।”

শফিকুলের ভাষায়, এই আচরণ ছিল যেন আন্তর্জাতিক প্রভুদের মন রক্ষার প্রয়াস যাতে কোনোভাবে আবারও ক্ষমতার চোরাগলিতে প্রবেশ করে লুণ্ঠন আর নিপীড়নের পুরনো চক্র চালু করা যায়। কিন্তু জুলাই আন্দোলন ছিল ‘শেষ পাতার সূচনা’। তার ভাষায়, “জুলাই আমাদের শিখিয়েছে হাল না ছেড়ে গুলির ঝড়েও দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি। আমাদের শহীদরা কোনো সংখ্যার পরিসংখ্যান নয়, তারা চেতনার আগুন। আমরা ভুলে যাইনি যাদের চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে, যাদের শরীর ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। তাদের আত্মাহুতি ছিল একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর।”

তিনি আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “আপনাদের সঙ্গে কখনো শান্তি সম্ভব নয়, যতক্ষণ না আপনাদের বিবেক আপনাদের বাধ্য করে ‘দুঃখিত’ বলতে, যতক্ষণ না আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের হাতে রক্ত দেখতে পান।” এই বার্তায় রাজনৈতিক ক্ষমা নয়, বরং ন্যায়ের দাবি স্পষ্টভাবে উচ্চারিত হয়েছে।

শফিকুল আলম একপ্রকার প্রতিজ্ঞার সুরে লেখেন, “আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে লড়বো জলে, স্থলে, অন্তর্জালে। আমরা আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলবো আপনারা গণহত্যার সহযোগী, মানবাধিকারের ডাকাত। আপনাদের রেখে যাওয়া কুৎসিত প্রভাব আমরা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলব, আমাদের শহীদের রক্ত দিয়েই।”

পোস্টের সমাপ্তিতে তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, “আপনারা কখনো শান্তি পাবেন না, যতক্ষণ না শহীদদের প্রতি সম্মান দেখান, আহতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন।”

এই পোস্টটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক বার্তা নয়, বরং এটি একটি স্পষ্ট আদর্শিক অবস্থান, যেখানে শাসনের বিরুদ্ধে শোষিতদের পক্ষে আত্মবিকাশের লড়াই জারি রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এটি ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান নয়, বরং ন্যায় ও আত্মসম্মানের জন্য এক নন-নেগোশিয়েবল দাবি।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ