যুদ্ধবিরতির মাঝেই ফের ইসরাইলি হামলা 

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ০৯:০৫:৫৬
যুদ্ধবিরতির মাঝেই ফের ইসরাইলি হামলা 

দক্ষিণ লেবাননে যুদ্ধবিরতির মাঝেই ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) ইসরাইলি ড্রোন হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। এই ঘটনা আবারও লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে বিরাজমান অনিশ্চয়তা এবং যুদ্ধবিরতির ভঙ্গুর বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে এসেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় কুনিন এলাকায় একটি গাড়িতে চালানো ইসরাইলি ড্রোন হামলায় এক ব্যক্তি নিহত এবং আরেকজন আহত হয়েছেন। ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে, নিহত ব্যক্তি হলেন হাসান মোহাম্মদ হামুদি, যিনি হিজবুল্লাহর সদস্য এবং সম্প্রতি ইসরাইলের ভূখণ্ডে ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জড়িত ছিলেন।

এর কয়েক ঘণ্টা পর দক্ষিণ লেবাননের মাহরুনা এলাকায় আরেকটি ড্রোন হামলায় একটি মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি নিহত হন এবং আরও একজন আহত হন। নিহতদের একজন নারী বলে নিশ্চিত করেছে মন্ত্রণালয়।

এর আগের দিনও ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় দক্ষিণ লেবাননের নাবাতিয়েহ শহরে এক নারী নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হন। লেবাননের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানায়, নিহত নারী একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে অবস্থান করছিলেন, যেখানে ইসরাইলি ড্রোন হামলা চালানো হয়।

তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অবিচাই আদরী এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইসরাইলি বাহিনী কোনো বেসামরিক ভবনে হামলা চালায়নি। বরং হিজবুল্লাহর রকেট গুদামে আগুন লেগে বিস্ফোরণের কারণেই ওই নারী নিহত হন বলে দাবি করেন তিনি। আদরীর মতে, হামলার সময় ওই ভবনে থাকা রকেটগুলো বিস্ফোরিত হয় এবং তা থেকেই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহ তাদের যোদ্ধাদের ইসরাইল সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের লিটানি নদীর উত্তরে সরিয়ে নিতে সম্মত হয়। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় শুধুমাত্র লেবাননের সেনাবাহিনী এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা অস্ত্রধারী থাকবে এই মর্মে সমঝোতা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী ইসরাইলেরও তাদের সৈন্যদের লেবানন থেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও, বাস্তবতা ভিন্ন। এখনো দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি কৌশলগত এলাকায় ইসরাইলি সৈন্য মোতায়েন রয়েছে, যা ওই অঞ্চলে উত্তেজনার অন্যতম উৎস হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

এই ধারাবাহিক সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় স্পষ্ট, যুদ্ধবিরতির কাঠামোটি একমাত্র রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর নির্ভরশীল নয় বরং স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য, বিশ্বাস ও সামরিক উপস্থিতির মধ্যে ভারসাম্যেরও গভীর সংকট রয়েছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরাইল উভয় পক্ষই তাদের অবস্থানকে ন্যায্য বলে দাবি করলেও, এর বলি হচ্ছে সাধারণ বেসামরিক মানুষ।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ