গঙ্গার পানি নিয়ে ফের টানাপোড়েন: চুক্তি বদলাতে চায় ভারত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৭ ২৩:৩২:০০
গঙ্গার পানি নিয়ে ফের টানাপোড়েন: চুক্তি বদলাতে চায় ভারত

পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদী চুক্তি স্থগিত করার পর এবার বাংলাদেশের সঙ্গে ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়েও কূটনৈতিকভাবে পুনর্বিবেচনায় নেমেছে ভারত। ইকোনোমিক টাইমসের বরাতে জানা গেছে, ২০২৬ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নয়াদিল্লি এই ঐতিহাসিক চুক্তির শর্তাবলি সংশোধনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিচ্ছে।

চুক্তিটি বাংলাদেশে শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে স্বাক্ষরিত হয় এবং ফরাক্কা বাঁধ এলাকায় জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গার পানির প্রবাহ কীভাবে ভাগ হবে—তার একটি কাঠামো এতে নির্ধারিত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত চুক্তির শর্ত পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে, বিশেষ করে তাদের সেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বন্দর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনে অতিরিক্ত পানির দাবি জানিয়ে।

চুক্তি অনুসারে, শুষ্ক মৌসুমে ফরাক্কা পয়েন্টে উভয় দেশ পর্যায়ক্রমে প্রতি ১০ দিনে ৩৫,০০০ কিউসেক পানি পেয়ে থাকে। কিন্তু ভারত এখন এই সময়সীমায় আরও ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ কিউসেক অতিরিক্ত পানির দাবি করছে। তাদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পরিমাণ পানি তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে অপরিহার্য।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারও কেন্দ্রের এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। তাদের মতে, বর্তমান চুক্তির কাঠামো পশ্চিমবঙ্গের বাস্তব প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে তারা মনে করছে, নতুন করে চুক্তির ধারা ও শর্ত পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে গঙ্গার পানি হুগলি নদীতে প্রবাহিত করে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষা করতে ফরাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে ভারত। এরপর থেকেই নদীর পানি নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়, যার মীমাংসা করতে গিয়ে ১৯৯৬ সালের পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নতুন প্রস্তাবনা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জলনীতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষত দুই দেশের রাজনৈতিক ও পরিবেশগত স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষার প্রেক্ষাপটে। এখন দেখার বিষয়, ২০২৬ সালের আগে এই আলোচনার কী পরিণতি দাঁড়ায় এবং বাংলাদেশ সরকার এ নিয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ