রেনেটা লিমিটেডের শেয়ার ইস্যুতে নতুন সিদ্ধান্তে, আনল যে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন

দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রেনেটা লিমিটেড শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ফার্মা ও রসায়ন খাতের অন্যতম মৌলভিত্তির কোম্পানি। সম্প্রতি কোম্পানিটি ৩২৫ কোটি টাকার প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর পূর্ব ঘোষিত পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। মূলত, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও সুদজনিত ব্যয় হ্রাস করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে নতুন সিদ্ধান্তে বড় পরিবর্তন এসেছে একটি ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে প্রেফারেন্স শেয়ার বাধ্যতামূলকভাবে সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরিত হবে, যা পূর্বে কোম্পানির ইচ্ছাধীন ছিল।
পূর্ব প্রস্তাবনায় কী ছিল?
প্রথমে রেনেটা জানিয়েছিল, এই প্রেফারেন্স শেয়ারগুলো হবে নন-কিউমুলেটিভ, নন-পার্টিসিপেটিভ এবং রিডিমেবল অথবা রূপান্তরযোগ্য। অর্থাৎ কোম্পানি চাইলে নির্ধারিত সময় শেষে শেয়ার ফিরিয়ে নিতে বা সাধারণ শেয়ারে রূপান্তর করতে পারত। কিন্তু সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রিডিমেবল বৈশিষ্ট্যটি বাদ দেওয়া হয়েছে, ফলে বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা প্রেফারেন্স শেয়ার নির্ধারিত সময় শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রূপান্তর হবে সাধারণ শেয়ারে।
কোম্পানির সচিব মো. জুবায়ের আলম জানিয়েছেন, প্রেফারেন্স শেয়ারের রূপান্তর ধাপে ধাপে ঘটবে এবং কোম্পানির আর্থিক কাঠামোর ওপর তাৎক্ষণিক কোনো উল্লেখযোগ্য চাপ ফেলবে না। বরং দীর্ঘমেয়াদে ঋণ কমে যাবে এবং সুদ ব্যয় হ্রাস পাবে। তৃতীয় বছর থেকে রূপান্তর শুরু হয়ে ষষ্ঠ বছরে সম্পূর্ণ হবে।
এছাড়া, প্রেফারেন্স শেয়ারহোল্ডাররা রূপান্তরের আগ পর্যন্ত বার্ষিক ১৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ (সুদ) পাবেন। প্রতি বছর মূলধনের ২৫ শতাংশ করে রূপান্তর হবে। সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরের সময় প্রতি শেয়ারের মূল্য ধরা হবে ৪৭৫ টাকা, যা বাজারমূল্যের তুলনায় তুলনামূলক উচ্চ।
শেয়ার ইস্যু ও প্রভাব
১০ টাকা মূল্যের এই প্রেফারেন্স শেয়ার শুধুমাত্র বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যেই ইস্যু করা হবে। অবিক্রিত অংশ থাকলে তা ব্যক্তিগত প্রস্তাবের মাধ্যমে ইস্যু হবে চাহিদা অনুযায়ী। রূপান্তরের পর কোম্পানির মোট ইক্যুইটি বেড়ে যাবে, ফলে রেনেটার সাধারণ শেয়ারের সংখ্যা প্রায় ৫.৫ শতাংশ বাড়বে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষা
পরিচালনা পর্ষদ এ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে এবং তা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এর আগে, ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডাররা প্রাথমিক প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছিলেন।
রিডিমেবল প্রেফারেন্স শেয়ার মানে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেয়। অন্যদিকে, রূপান্তরযোগ্য প্রেফারেন্স শেয়ারগুলো মেয়াদ শেষে সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরিত হয়, যা মূলধন কাঠামোর দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতায় সহায়ক। রেনেটার সিদ্ধান্ত মূলত ব্যাংক ঋণের বিকল্পে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহ এবং কোম্পানির ব্যালান্স শিট হালকা রাখার কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রেনেটা লিমিটেডের এই পরিকল্পিত পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করে—কোম্পানিটি ঋণনির্ভরতা কমিয়ে মূলধনী কাঠামো শক্তিশালী করতে চায়। একইসঙ্গে এটি বাজারে একটি স্থিতিশীল বার্তা দিচ্ছে যে, প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, চূড়ান্ত অনুমোদন ও কার্যকারিতার দিকগুলো বাজারে বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিকোণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- দীর্ঘ পতনের পর শেয়ারবাজারে এল সুখবর!
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের ১০টি বড় ক্ষতি
- জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মুখোমুখি বিশ্ব শক্তিগুলো
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট হবে কিনা জানালেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- এবার পাকিস্তানকে হামলার হুমকি দিল ইসরায়েল