দীর্ঘ পতনের পর শেয়ারবাজারে এল সুখবর!

শেয়ারবাজার ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২১ ১২:৩৮:২৬
দীর্ঘ পতনের পর শেয়ারবাজারে এল সুখবর!

ঈদের ছুটি শেষে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) শেয়ারবাজারে স্বস্তির বাতাস বয়ে গেছে। ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৩ দিনে সূচক বাড়ার পাশাপাশি মূল্য বৃদ্ধির হারও আশাব্যঞ্জক রকমের উন্নতি করেছে। এর ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বেড়ে বাজারের মোট মূলধনও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া লেনদেনের পরিমাণও গতিরোধী হয়ে উঠে, যা দীর্ঘ সময়ের পতনের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।

গত আট সপ্তাহ ধরে টানা দরপতনে ডিএসইর বাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছিল। ওই সময়কালে বাজার মূলধন প্রায় ২৬,৮৮২ কোটি টাকা হ্রাস পায় এবং প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৫৮২ পয়েন্ট কমে যায়। তবে ঈদের পরের সপ্তাহে পরিস্থিতি কিছুটা বদলে যায়; ডিএসইর বাজার মূলধন ৩,৬০৭ কোটি টাকা বেড়ে এবং সূচক বেড়ে ৭১.১৭ পয়েন্ট উঠে যায়, যা আগামী সপ্তাহে আরও ধারাবাহিকতা পায়।

গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ১৫২ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকায়। এ সময় প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৪৫.৩২ পয়েন্ট বা ০.৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য সূচকেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮.৮০ পয়েন্ট (০.৮৬%) এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৯.৮৩ পয়েন্ট (১.১৩%) বৃদ্ধি পেয়েছে।

লেনদেনের গতিও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে দৈনিক লেনদেন হয়েছে ৩২৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের গড় দৈনিক লেনদেন ২৪১ কোটি ১ লাখ টাকার তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি। এই লেনদেনের মধ্যে লাভেলো আইসক্রিম শেয়ারের গুরুত্বপূর্ন অংশ রয়েছে, যেখানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ কোটি ২৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৯.৩০ শতাংশ। এছাড়া বিচ হ্যাচারি (১৩.৩৯ কোটি টাকা) ও ব্র্যাক ব্যাংক (১২.৯৮ কোটি টাকা) শীর্ষস্থানীয় লেনদেনকারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় অগ্নি সিস্টেম, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, ওরিয়ন ইনফিউশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনও রয়েছে। এদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাজারে স্থিতিশীলতা ও গতি বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ সময়ের পতনের পর বাজারের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস পুনঃস্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে বিশ্ববাজারের অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অবস্থা বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে, তাই বিনিয়োগকারীদেরকে ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সর্বোপরি, ঈদের ছুটি পরবর্তী সময়ের ডিএসইর এই ইতিবাচক ফলাফল দেশের অর্থনীতিতে পুনরুজ্জীবনের লক্ষণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। বাজারের এই উন্নতি বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সান্ত্বনা এনে দিচ্ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত