নববধূর স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল ট্রেনের চাকা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২০ ২৩:৫৪:৪১
নববধূর স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল ট্রেনের চাকা

স্বামীর মৃত্যুর পর বিলাপ: “এই জীবন আর রাখব না…”

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আনিসুর রহমান (২৮) নামের এক নববিবাহিত যুবক। বিয়ের মাত্র ১৭ দিনের মাথায় স্ত্রীর চোখের স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন আনিস।

দুর্ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মিরসরাই উপজেলার আরশিনগর ফিউচার পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট সংলগ্ন এলাকায়। নিহত আনিসুর রহমান পেশায় একটি স্টিল কারখানার ড্রাম ট্রাকচালক ছিলেন। তার বাড়ি মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের রূপনগরে। তিনি আবু তাহেরের ছেলে।

আনিস ৩ জুন টাঙ্গাইলের মেয়ে মারুফা আক্তারকে বিয়ে করেছিলেন। দু’বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ছিল এই শুভ পরিণয়। কিন্তু সুখের সংসার গড়ার স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে গেছে একটি ট্রেনের ধাক্কায়।

স্বামীর মৃত্যুর পর স্তব্ধ ও বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন স্ত্রী মারুফা। কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন,

“আমার এ জীবন রেখে লাভ কী, আমি এই জীবন আর রাখব না। আমাকে ছেড়ে কেন চলে গেল আনিস?”

পরদিন শুক্রবার সকালেই মেয়েকে নিয়ে টাঙ্গাইল ফিরে যান তার বাবা-মা।

আনিসের বাবা আবু তাহের কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,

“১৭ দিনের মাথায় মেয়ের মতো বউমা বিধবা হয়ে গেল। আমি ওকে সান্ত্বনা দিতে পারছি না। কেন আল্লাহ এমন করলেন! কাজেই যাচ্ছিল ছেলেটা, নতুন ট্রাক চালানোর কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।”

এই দুর্ঘটনায় আনিস ছাড়া আরও দুই তরুণ নিহত হন— রিয়াজ উদ্দিন (১৮) ও আরাফাত হোসেন (১৮)। দু’জনই আনিসের সহকর্মী, একজন ছিলেন হেলপার, অপরজন স্টিল মিলেই কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, রেললাইনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় আলোকস্বল্পতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনা নতুন নয়। এলাকাবাসী বারবার অভিযোগ করলেও কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

এই মর্মান্তিক ঘটনাটি যেন প্রশ্ন তোলে— কত স্বপ্ন, কত জীবন এভাবে ট্রেনের চাকার নিচে পিষ্ট হবে আর?

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত