জাতিসংঘের নির্বাচনী সহায়তা নিয়ে বৈঠক

নির্বাচনী সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এবং ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকীর মধ্যে মঙ্গলবার (১৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সহযোগিতা এবং আগামি নির্বাচনের জন্য সহায়তা বিষয়ক আলোচনা। গোয়েন লুইস পররাষ্ট্রসচিবকে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রকল্প এবং কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করেন যা দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে কার্যকর রয়েছে।

বৈঠকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া, যেখানে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের মর্যাদা উন্নয়নে সহায়তা করছে। এছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অভিবাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহায়তাও আলোচ্য হয়।

ওয়ান হেলথ প্রোগ্রামকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যখাতে একযোগে কাজ করার পরিকল্পনাও বৈঠকে তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শক্তিশালীকরণে জাতিসংঘের সহযোগিতার গুরুত্ব সামনে আনা হয়। নির্বাচনী সহায়তা সম্পর্কিত বিষয়গুলোতেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, যাতে নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হয় এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

রোহিঙ্গা সংকটের দিকেও নজর দেয়া হয় বৈঠকে। গোয়েন লুইস জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের তহবিল সংকট ক্রমবর্ধমান এবং এই তহবিল ঘাটতি পূরণে ব্যয় দক্ষতা বৃদ্ধি ও সম্পদের সুষম বণ্টনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, তহবিলের ঘাটতি কমানোর জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন উন্নত কৌশল এবং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

পররাষ্ট্রসচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী জাতিসংঘের অব্যাহত সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং দেশের উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চায়। তিনি জাতিসংঘের প্রযুক্তিগত ও পরামর্শমূলক সহায়তার প্রশংসা করেন, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করতে সাহায্য করবে।

এই বৈঠকের মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার পরস্পরের সহযোগিতায় উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রসারে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এই অংশীদারিত্ব আরও সুদৃঢ় করে দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।

-অনন্যা, নিজস্ব প্রতিবেদক