মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চূড়ায়: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় নেই তেহরান

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চলমান কূটনৈতিক আলোচনা নতুন মোড় নিয়েছে। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় তেহরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নির্ধারিত আলোচনায় অংশগ্রহণ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ইরান। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট গবেষক মোহাম্মদ এসলামি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানান, "ইসরায়েলের এই আগ্রাসী হামলা কূটনৈতিক সমাধানের সব পথ কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছে। ইরানি ও মার্কিন প্রতিনিধিদের মধ্যে যেসব গোপন আলোচনা চলছিল, তা এখন সম্পূর্ণ থমকে গেছে।"

তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, এই হামলা একা ইসরায়েলের নয়—এর পেছনে আমেরিকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওমানে নির্ধারিত আসন্ন বৈঠকে অংশ নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা ইরান দেখছে না।”

এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার টেবিলেও আস্থাহীনতা দেখাচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ককে কিছুটা ঠাণ্ডা করতে যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছিল, তা আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হলো।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই সঙ্কট ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে আরও গোপন ও স্বাধীন করে তুলতে পারে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) এখন নতুন করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

ওয়াশিংটন এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না দিলেও, হোয়াইট হাউজের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, “এই অবস্থার জন্য ইরান একতরফাভাবে আলোচনার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে,” এমন বার্তা দিতেই পারে যুক্তরাষ্ট্র।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে একদিকে গাজা ও লেবাননের সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি, অন্যদিকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনার স্থবিরতা সব মিলিয়ে উত্তেজনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে কূটনীতিকদের মতে, এখনই প্রয়োজন বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় মধ্যস্থতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক