পুতিনকে পোপের ফোন, ইউক্রেনে যুদ্ধ অবসানে আহ্বান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৫ ১৫:৪৭:১৬
পুতিনকে পোপের ফোন, ইউক্রেনে যুদ্ধ অবসানে আহ্বান

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেছেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ নেতা পোপ চতুর্দশ লিও। বুধবার (৪ জুন) এই গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপে পোপ পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধে অর্থবহ ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান এবং কিয়েভের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

ফোনালাপে পোপ বলেন, “এই যুদ্ধে জড়িত সব পক্ষের অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত সংলাপ শুরু করা জরুরি।” তিনি সাম্প্রতিক ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সংলাপ শুরুর উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং বলেন, “ঘোর অন্ধকারে এটি একটি আশার আলো।”

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায় রাশিয়া। এর আগে দীর্ঘ সময় ধরে উত্তেজনা চলছিল—বিশেষ করে মিনস্ক চুক্তির শর্ত না মানা এবং ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টার প্রেক্ষিতে। যুদ্ধ শুরুর আগে তিন মাস রুশ সেনারা সীমান্তে মোতায়েন ছিল।

যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় যুক্তরাষ্ট্র এক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দেয় ইউক্রেনকে। তবুও রাশিয়া ইতোমধ্যে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন—এই চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ দখল করে নিজের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক পঞ্চমাংশ।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিত করা হয়। একইসঙ্গে তিনি যুদ্ধ অবসানে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান-এর সঙ্গে যৌথভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখছেন ট্রাম্প। এরই ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ইস্তাম্বুলে শান্তি সংলাপ শুরু হয়েছে।

পোপ চতুর্দশ লিও বলেছেন, “এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে। শান্তি, জীবন ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।” তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধকে সামনে রেখে সংলাপ ও সহনশীলতাকে সমাধানের মূল পথ হিসেবে তুলে ধরেন।

বিশ্ব রাজনীতিতে এই ফোনকলকে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা, যেখানে ধর্ম, মানবতা এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতি একসঙ্গে একটি যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে কাজ করছে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি


ভারত ও রাশিয়া গভীর, অন্ধকার চীনের দিকে চলে গেছে: ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১২:০১:১৪
ভারত ও রাশিয়া গভীর, অন্ধকার চীনের দিকে চলে গেছে: ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেছেন, ভারত ও রাশিয়া যেন ‘গভীর, অন্ধকার চীনের দিকে চলে গেছে’। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এই দুই দেশের নেতাদের বৈঠকের একটি ছবি পোস্ট করে তিনি এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্পের এই বক্তব্যে স্পষ্টত নিউ দিল্লি ও মস্কোর ওপর তার বিরক্তি প্রকাশ পেয়েছে।

ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, “আমরা ভারত ও রাশিয়াকে গভীর, অন্ধকার চীনের কাছে হারিয়েছি। তারা একসাথে দীর্ঘায়ু ও সমৃদ্ধশালী হোক!” তিনি শি জিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদির একটি ছবিও শেয়ার করেছেন।

এই মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করেনি। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ক্রেমলিনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন শি জিনপিং চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর শীর্ষ সম্মেলনে ২০টিরও বেশি অ-পশ্চিমা দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উপস্থিত ছিলেন। সামিটে পুতিন ও মোদি একসাথে শি জিনপিংয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এবং পরে তিনজনকে একসাথে দাঁড়াতেও দেখা যায়।

ট্রাম্প বারবার অভিযোগ করে আসছেন যে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য থেকে অসমভাবে লাভবান হচ্ছে। এই সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, পুতিনের প্রতি খুবই হতাশ হলেও রাশিয়া-চীন সম্পর্ক বৃদ্ধিকে নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন। তবে তিনি খুব শীঘ্রই পুতিনের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন বলেও জানান।


এক ঘটনাতেই উত্তাল ইন্দোনেশিয়া, পাশে দাঁড়িয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলো

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১১:৪১:০৮
এক ঘটনাতেই উত্তাল ইন্দোনেশিয়া, পাশে দাঁড়িয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলো
ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় চলমান বিক্ষোভকে প্রতিবেশী দেশগুলোও সমর্থন জানাচ্ছে। সম্প্রতি একজন ডেলিভারি রাইডারের মৃত্যুর পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের নাগরিকরা জনপ্রিয় ডেলিভারি অ্যাপ গ্র্যাব ও গোজেক ব্যবহার করে ইন্দোনেশিয়ার রাইডারদের জন্য খাবার অর্ডার করছেন।

গত ২ সেপ্টেম্বর গোজেকের চালক আফফান কুরনিয়াওয়ান পুলিশের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে নিহত হওয়ার পর এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। এই ঘটনায় জনরোষ তীব্র আকার ধারণ করে এবং বিভিন্ন সরকারি ভবনে আগুন দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি দেশজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বাড়তে থাকে। বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

প্রতিবেশী দেশগুলোর নাগরিকরা #SEAblings হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে এই প্রতিবাদে সমর্থন জানাচ্ছেন। ফিলিপাইনের সেবু দ্বীপের বাসিন্দা তারা (৩৪) জাকার্তায় দুই দফায় খাবার ও পানীয় পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে অনলাইনে অন্যদেরও সাহায্যের জন্য নির্দেশিকা পোস্ট করেছেন। মালয়েশীয় শিক্ষার্থী আয়মান হারিজ মুহাম্মদ আদিব বলেছেন, “অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাদের সাহস আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে।”

ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে খাদ্য ও পানীয় বিতরণে প্রতিবেশী দেশগুলোর সমর্থন পেয়ে বিক্ষোভকারীরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, রাইডাররা আবেগাপ্লুত হয়ে বিদেশ থেকে আসা অর্ডারের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার বাইরে থেকে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব এশিয়া থেকে খাবারের অর্ডার সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে।


বিহারের বিমানবন্দরে অদ্ভুত দৃশ্য: বিমানে ওঠার আগে রানওয়ের পাশে প্রস্রাব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১০:৫৩:৪২
বিহারের বিমানবন্দরে অদ্ভুত দৃশ্য: বিমানে ওঠার আগে রানওয়ের পাশে প্রস্রাব
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বিহারের দ্বারভাঙা বিমানবন্দরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। বিমানে ওঠার ঠিক আগে রানওয়ের পাশে বসে প্রস্রাব করতে দেখা যায় এক বয়স্ক যাত্রীকে। সেই মুহূর্তের ভিডিও ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রায় নয় সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা কুর্তা-পাজামা পরিহিত এক বৃদ্ধ রানওয়ের ঘাসের ওপর বসে প্রস্রাব করছেন। একই সময়ে বোর্ডিংয়ের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের লাইনও পেছনে দেখা যায়। ভিডিওটি প্রকাশের পর নেটিজেনদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কেউ ঘটনাটিকে হাস্যরস হিসেবে নিচ্ছেন, আবার কেউ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

একজন মন্তব্য করেন, “বিমান ভ্রমণ এখন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এসেছে, কিন্তু ন্যূনতম শৃঙ্খলা মেনে চলাও জরুরি।” অন্য একজন বলেন, “ভুল তো হতেই পারে, কিন্তু পাইলটের উচিত হয়নি ভিডিওটি শেয়ার করা।”

ঘটনাটি বিমানবন্দর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সাধারণত রানওয়ে ও এর আশপাশে শক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নজরদারি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তারক্ষীদের উপস্থিতি থাকে। সেখানে এভাবে যাত্রীর বসা বা চলাফেরা বিমান চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জরিপ শুরু হয়েছে—বিমানবন্দরে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা প্রয়োজন কি না। অনেকেই ‘হ্যাঁ’ ভোট দিয়েছেন। তবে কেউ কেউ বলছেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল, তাই অতি বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার নেই।


গাজা নগরীর কেন্দ্রে প্রবেশ করছে ইসরায়েলি সেনারা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ০৮:৫২:২৯
গাজা নগরীর কেন্দ্রে প্রবেশ করছে ইসরায়েলি সেনারা
গাজা সিটিতে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী/ ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় শহর গাজা সিটির প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা দখলে নেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। এছাড়া, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) গাজার সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তম এই নগরীর একাধিক সুউচ্চ ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা, যার মধ্যে একটি ১২ তলা ও একটি পাঁচতলা ভবন রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, তারা এখন গাজা নগরীর ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। ইসরায়েলি হামলা শুরুর আগে এই নগরীতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করতেন। গত মাসের শুরুর দিকে গাজা নগরী পুরোপুরি দখলের ঘোষণা দেয় ইসরায়েল। ঘোষণার কিছুদিনের মধ্যেই প্রায় ৪০ বর্গকিলোমিটার নগরীর উপকণ্ঠে বিমান ও গোলা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। তারা ধীরে ধীরে নগরীর কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বোমা হামলা চালিয়ে নগরীর দ্য ম্যানেজমেন্ট অব মুশতাহা টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। ভবনটিতে অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলায় অনেকে হতাহত হয়েছেন। গাজা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, শুক্রবার ইসরায়েলের হামলায় গাজা নগরীসহ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ৬৯ জন নিহত ও ৪২২ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

ইসরায়েলের দাবি, ম্যানেজমেন্ট অব মুশতাহা টাওয়ারে হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা অবস্থান করছিলেন। কিন্তু টাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে হামাসের কোনো সদস্য ছিলেন না। ভবনটিতে অবস্থানকারীদের সবাই ছিলেন বেসামরিক ফিলিস্তিনি।

এদিকে, গাজা নগরীতে আরেকটি পাঁচতলা ভবনের বাসিন্দাদেরও সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ভবনটির একাংশ বোমা হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলাইজা ম্যাগনিয়ার আল জাজিরাকে বলেন, নিজেদের সেনাদের হতাহতের সংখ্যা কমাতে গাজা নগরীর বহুতল ভবন লক্ষ্যবস্তু করছে ইসরায়েল। তবে বহুতল ভবন নিশানা করার অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। যেমন বেসামরিক বাসিন্দাদের ভীতসন্ত্রস্ত করা, যাতে তারা এই নগরী ছেড়ে চলে যান।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, গাজার নরকদ্বারের তালা এখন খুলে ফেলা হচ্ছে। দ্বারটি খোলার পর আর বন্ধ হবে না এবং ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম আরও বাড়বে।

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের ৭০০তম দিন পূর্ণ হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা শুরুর পর থেকে অন্তত ১৯ হাজার ৪২৪টি শিশু নিহত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৫২ মিনিটে একটি শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে। নিহত শিশুদের মধ্যে নবজাতক ও এক বছরেরও কম বয়সীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার। একই সময়ে গাজায় ১০ হাজার ১৩৮ জন নারী ও ৪ হাজার ৬৯৫ জন বয়স্ক মানুষ নিহত হয়েছেন। এর অর্থ, নিহতের মধ্যে নারী ও বয়স্ক মানুষ প্রায় ২৩ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ নিহত হয়েছেন ২৯ হাজার ৯৭৫ জন বা ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে হামাস বা অন্যান্য ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা কত, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে সম্প্রতি ইসরায়েলের ফাঁস হওয়া এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজায় নিহত ব্যক্তিদের প্রায় ৮৩ শতাংশই বেসামরিক মানুষ।

সূত্র: আল-জাজিরা


জিম্মি মুক্তি না হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে: ট্রাম্পের সতর্কবার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ০৭:৪৮:৫৬
জিম্মি মুক্তি না হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে: ট্রাম্পের সতর্কবার্তা
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে গভীর আলোচনা চলছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য দেন। ট্রাম্প বলেন, হামাসের সঙ্গে আমাদের গভীর আলোচনা হচ্ছে। আমি হামাসকে আহ্বান জানাব, জিম্মিদের মুক্তি দিন। তাহলে ভালো কিছু ঘটবে। তবে হামাস যদি গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে পরিস্থিতি জটিল হবে এবং খারাপ দিকে যাবে।

ট্রাম্প আরও বলেন, হামাসের হাতে বর্তমানে খুব বেশি জীবিত জিম্মি নেই, ফলে আলোচনার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, আমি সবসময় বলেছি—যখন জিম্মির সংখ্যা ১০ থেকে ২০ জনে নেমে আসে, তখন তাদের ফিরিয়ে আনা সহজ হয় না। যদি পর্যাপ্ত প্রচেষ্টা না করা হয়, তাহলে জিম্মিদের ফেরত পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। আবার অনেক ছাড় দিলে সেটি আত্মসমর্পণের মতো হবে, যা মোটেও ভালো কিছু নয়। এটি নিঃসন্দেহে একটি কঠিন পরিস্থিতি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলে সাধারণ মানুষের ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এসব বিক্ষোভে জনগণ হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও সমঝোতার দাবি জানায়। ট্রাম্পের মতে, ইসরায়েলি সমাজের এই চাপের কারণে গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সরকারের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।

এর আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি লিখেছিলেন, দুই, পাঁচ বা সাতজন নয় সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। হামাস যদি তা করে, তবে ভালো কিছু ঘটবে।

-রফিক


নেপালের কঠোর পদক্ষেপ ফেসবুক ও টুইটারের বিরুদ্ধে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৫ ১০:৫০:২৬
নেপালের কঠোর পদক্ষেপ ফেসবুক ও টুইটারের বিরুদ্ধে
ছবিঃ সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ এবং ভুয়া আইডির মাধ্যমে ঘৃণা ও গুজব ছড়ানো ঠেকাতে নেপাল সরকার বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দেশটির সরকার ঘোষণা দেয়, নিবন্ধনের শর্ত পূরণ না করায় ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার) সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের সেবা নেপালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে সাইবার অপরাধ, ভুয়া তথ্য প্রচার এবং সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বর্তমানে নেপালের প্রায় তিন কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৯০ শতাংশই ইন্টারনেট ব্যবহার করে, ফলে এসব প্ল্যাটফর্মের প্রভাব দেশজুড়ে বিস্তৃত।

এর আগে সরকার সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিকে যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের নির্দেশ দেয়। নিবন্ধনের সময় স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগ, অভিযোগ নিষ্পত্তিকারী কর্মকর্তা এবং কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তির নাম দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। নিবন্ধনের শেষ সময়সীমা ছিল বুধবার। শর্ত না মানলে প্ল্যাটফর্মগুলোর সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও স্পষ্ট জানানো হয়েছিল।

নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার এক সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নেপাল টেলিকমিউনিকেশনস অথরিটিকে (এনটিএ) নির্দেশ দেওয়া হয়, যারা নিবন্ধন করেনি তাদের প্ল্যাটফর্মের অ্যাক্সেস অবিলম্বে বন্ধ করতে। যদিও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কোন কোন প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, টিকটক, ভাইবার, উইটক, নিমবাজ এবং পপো লাইভ ইতোমধ্যেই নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে, কিন্তু ফেসবুকসহ বেশ কয়েকটি বড় প্ল্যাটফর্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি।

যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং বলেন, “আমরা তাদের নিবন্ধনের জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছি এবং বারবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমাদের আহ্বানকে উপেক্ষা করেছে। তাই তাদের সেবা নেপালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

অন্যদিকে, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

-রফিক


বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির মহাপ্রদর্শনী:বেইজিং থেকে বিশ্বকে চীনের কৌশলগত বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১৫:০৭:১৩
বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির মহাপ্রদর্শনী:বেইজিং থেকে বিশ্বকে চীনের কৌশলগত বার্তা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ এ চীন শুধু ইতিহাসের স্মৃতি স্মরণ করেনি, বরং একে রূপান্তর করেছে সামরিক আধুনিকায়নের মহামঞ্চে। তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত এই কুচকাওয়াজে চীনের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, কৌশলগত ক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ যুদ্ধনীতির দিকনির্দেশনা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুই ডজনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে এটিকে চীনের সামরিক শক্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক জোট ও প্রভাবেরও প্রতীকী প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নতুন প্রজন্মের বিমান প্রতিরক্ষা: HQ-20, HQ-9C ও HQ-29

চীনের সামরিক প্রদর্শনীর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল HQ-20 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে উন্মোচিত হয়। আটচাকার ট্রান্সপোর্টার-ইরেক্টর লঞ্চার সমৃদ্ধ এই ব্যবস্থা অন্তত আটটি ইন্টারসেপ্টর বহন করতে সক্ষম। HQ-9 এর নকশাগত মিল থাকলেও HQ-20 ছোট মিসাইল ব্যবহার করে, যা দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীলতা ও উচ্চ গতিশীলতার বার্তা দেয়।

এছাড়া প্রদর্শিত হয় HQ-9C, যা HQ-9B এর উন্নত সংস্করণ। এতে উন্নত নির্দেশনা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা যোগ হয়েছে। ভারতের “অপারেশন সিন্ধুর”-এ পাকিস্তানের হাতে থাকা HQ-9B ও HQ-16 ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার অভিজ্ঞতার পর HQ-9C এর উন্নয়নকে বিশ্লেষকরা চীনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফল বলছেন।

অন্যদিকে, HQ-29 উচ্চতর প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রদর্শিত হয়, যা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যপথে প্রতিরোধ ও নিম্ন-কক্ষপথ উপগ্রহ ধ্বংসে সক্ষম। বিশ্লেষকরা এটিকে মার্কিন নৌবাহিনীর SM-3 ইন্টারসেপ্টর-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করছেন।

এগুলো প্রমাণ করে, চীন শুধুমাত্র আঞ্চলিক প্রতিরক্ষার দিকে নয়, বরং মহাশূন্য ও বৈশ্বিক স্তরে অ্যান্টি-অ্যাকসেস/এরিয়া ডিনায়াল (A2/AD) ক্ষমতা তৈরি করছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্দো-প্যাসিফিক’ কৌশলের সরাসরি চ্যালেঞ্জ।

মহাশূন্য ও সাইবার যুদ্ধক্ষেত্র

কুচকাওয়াজে অন্তর্ভুক্ত ছিল নেটওয়ার্ক সাপোর্ট ও সাইবার ইউনিট, যা ইঙ্গিত দেয় সামরিক আধুনিকায়ন কেবল প্রচলিত অস্ত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং মহাশূন্য, সাইবারস্পেস এবং তড়িৎচৌম্বক ক্ষেত্রেও চীনের উপস্থিতি জোরদার হচ্ছে। প্রদর্শনীতে ছিল ইলেকট্রনিক জ্যামিং যান, মোবাইল রাডার ইউনিট ও সাইবার ব্রিগেড, যা সর্বাঙ্গীণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে উপস্থাপিত হয়।

‘লয়্যাল উইংম্যান’ ও পানির নিচের ড্রোন

সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণকারী প্রদর্শনীর একটি ছিল FH-97 “লয়্যাল উইংম্যান” ড্রোন। এটির ডানা ছয় মিটার ও দৈর্ঘ্য ১০ মিটার। এটি জে-২০ ও জে-৩৫ স্টেলথ ফাইটারের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করতে পারে। ড্রোনটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ, নজরদারি, এমনকি সুনির্দিষ্ট হামলার সক্ষমতা রাখে। অভ্যন্তরীণ বোম্ব বে-তে অস্ত্র বা সেন্সর বহনের ব্যবস্থা রয়েছে।

ডিজাইনার ডেং শুয়াই রাষ্ট্রীয় গ্লোবাল টাইমসকে জানান, এ ড্রোন “সেন্সর, অস্ত্রভাণ্ডার এবং পাইলটদের জন্য বুদ্ধিমান সহকারী” হিসেবে কাজ করে। এর নামকরণ হয়েছে “লয়্যাল উইংম্যান” কারণ এটি মানবচালিত বিমানের পাশাপাশি “সশস্ত্র দেহরক্ষীর মতো” উড়ে।

ভূমি পর্যায়ে প্রদর্শিত হয় দুইটি বিশালাকার মানববিহীন পানির নিচের যান (UUV), এর একটি চিহ্নিত হয় AJX002 নামে। টর্পেডোর মতো আকৃতির এ যান দীর্ঘ-পাল্লার নজরদারি, আন্ডারসি কেবল ট্যাপিং, মাইন বিছানো বা হামলার মতো মিশনের জন্য তৈরি। এছাড়া উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লেজার ও মাইক্রোওয়েভ নির্গমনকারী ট্রাকও প্রদর্শিত হয়, যা ড্রোন প্রতিরোধে ত্রিমুখী ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিতি পায়।

ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী ও পারমাণবিক ত্রিমুখী ক্ষমতা

প্রথমবারের মতো চীন তার পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক ত্রিমুখী বাহিনী প্রদর্শন করে—স্থল, নৌ ও বিমানভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা একসঙ্গে। জিংলেই-১ বিমান থেকে নিক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক মিসাইল ছিল এর কেন্দ্রে, সঙ্গে ছিল জুলাং-৩ সাবমেরিন-ভিত্তিক মিসাইল এবং স্থল-ভিত্তিক DF-61, DF-31 ও DF-5C আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র।

DF-5C কে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী আইসিবিএম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যা ২০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাল্লা ও একাধিক ওয়ারহেড বহনের ক্ষমতা রাখে। এছাড়া প্রদর্শিত হয় ডিএফ-১৭ হাইপারসনিক মিসাইল এবং ডিএফ-২৬ডি, যা “গুয়াম কিলার” নামে পরিচিত।

প্রচলিত অস্ত্র ও আকাশ শক্তি

প্রচলিত সামরিক সরঞ্জামও কুচকাওয়াজে গুরুত্ব পায়। প্রদর্শিত হয় আধুনিক ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও আর্টিলারি ইউনিট। টাইপ ৯৯বি মেইন ব্যাটল ট্যাংক প্রথমবারের মতো কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। PHL-16 স্বচালিত মাল্টিপল রকেট লঞ্চারও প্রদর্শিত হয়। আকাশ থেকে উড়োজাহাজ প্রদর্শনীতে ছিল জে-২০, জে-৩৫ ও জে-১৫ ফাইটার জেট, হালনাগাদ বোম্বার এইচ-৬জে এবং ক্যারিয়ার-ভিত্তিক প্রাথমিক সতর্কীকরণ বিমান KJ-600। KJ-600 কে PLAN-এর টাইপ 003 ফুজিয়ান এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এটি ১,২০০ কিমি পর্যন্ত দীর্ঘ-পাল্লার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা রাখে।

ভূরাজনৈতিক তাৎপর্য

চীনের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক সুস্পষ্ট বার্তা বহন করে। প্রথমত, এটি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি একটি সরাসরি প্রতিরোধমূলক সংকেত, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ও ঘাঁটিগুলোর প্রেক্ষাপটে। চীন দেখাতে চেয়েছে যে সে কেবল আঞ্চলিক শক্তিই নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ বৈশ্বিক সামরিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, যা মহাশূন্য থেকে সাইবারস্পেস পর্যন্ত প্রতিটি যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত। দ্বিতীয়ত, কুচকাওয়াজে রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানের নেতাদের উপস্থিতি একটি প্রতীকী রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছে যে চীন বিকল্প আন্তর্জাতিক জোট গড়ে তুলতে চাইছে, যা পশ্চিমা জোটের পাল্টা ভারসাম্য তৈরি করতে পারে। তৃতীয়ত, এই প্রদর্শনী আঞ্চলিক দেশগুলোর জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো এই প্রদর্শনের প্রেক্ষিতে নিজেদের প্রতিরক্ষা কৌশল আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে। ফলে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নতুন সামরিক প্রতিযোগিতা ও কৌশলগত অস্থিরতার দিকে ধাবিত হতে পারে।

বেইজিংয়ের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কেবলমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিচারণ নয়, বরং এটি ছিল চীনের সামরিক আধুনিকায়ন ও বিশ্বশক্তি হওয়ার ঘোষণা। লয়্যাল উইংম্যান ড্রোন, পানির নিচের যান, ডিরেক্টেড এনার্জি অস্ত্র থেকে শুরু করে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক ত্রিমুখী বাহিনী—সবকিছুই প্রমাণ করে যে চীন যুদ্ধক্ষেত্রের প্রতিটি মাত্রায় প্রস্তুত। এর ফলে বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্যে নতুন পরিবর্তনের সূচনা হবে এবং বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক প্রতিযোগিতা তীব্রতর হবে। এই প্রদর্শনী থেকে স্পষ্ট যে চীন শুধু প্রতিরক্ষার সীমাবদ্ধতায় নেই, বরং বৈশ্বিক নেতৃত্বের আসনে বসার জন্য সামরিক, প্রযুক্তিগত ও কূটনৈতিক সব দিক থেকেই নিজেকে প্রস্তুত করছে।


ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব বিমানবন্দর বন্ধ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১২:১২:১২
ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব বিমানবন্দর বন্ধ
ছবি: সংগৃহীত

ইয়েমেন থেকে ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে ইসরায়েলের তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ১০টার কিছু আগে ইয়েমেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়, যার ফলে তেল আবিব এবং মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করেছে।

তবে, গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলার পর হাজার হাজার ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে। একই সঙ্গে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।


বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৪ ১১:২১:৪৬
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অর্থ কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, হোয়াইট হাউসের রহস্যজনক পদক্ষেপ
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদরদপ্তর। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস সম্প্রতি ৪৯০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা কর্তনের তালিকা থেকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) বাদ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি আইনপ্রণেতা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

গত শুক্রবারের ঘোষণায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির অংশ হিসেবে ডব্লিউটিওতে যুক্তরাষ্ট্রের ২ কোটি ৯০ লাখ ডলারের অর্থ সহায়তা কর্তনের কথা বলা হয়েছিল। এই অর্থ কর্তনের ঘোষণার পর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা এর তীব্র নিন্দা জানান এবং একে কংগ্রেসের বরাদ্দকৃত অর্থের ওপর একতরফা হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা এই সমস্যার সমাধানে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিসের প্রধান জেমিসন গ্রিয়ারসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন। ব্যবসায়িক মহল মনে করে, ডব্লিউটিওতে অর্থায়ন বন্ধ করা হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চীনের আধিপত্য বেড়ে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়বে।

ট্রাম্প প্রশাসন অতীতে ডব্লিউটিওকে ‘দন্তহীন’ বলে সমালোচনা করেছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইট থেকে ডব্লিউটিও-সম্পর্কিত তথ্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যা এই বিতর্কের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে একটি বাণিজ্যিক সূত্র জানিয়েছে, ডব্লিউটিওর আর কোনো তহবিল কর্তন করা হবে না। এই বিষয়ে হোয়াইট হাউস, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস বা ডব্লিউটিও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় প্রশাসনই ডব্লিউটিওর সমালোচনা করে আসছে, কারণ তাদের মতে, সংস্থাটি বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে মানদণ্ড নির্ধারণে ব্যর্থ হয়েছে।

পাঠকের মতামত: