পোলট্রি খাতে ধস: ২৭ টাকার বাচ্চা এখন মাত্র ৩ টাকা

পোলট্রি খাতে মারাত্মক দরপতনের মুখে পড়েছে ব্রয়লারের একদিন বয়সী বাচ্চার বাজার। এক মাস আগেও যে বাচ্চার দাম ছিল ২৭ টাকা, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩ থেকে ৫ টাকায়। এই বিপুল দরপতনে দিশেহারা হ্যাচারি মালিক ও খামারিরা।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে খামারি সাদ্দাম হোসেন জানান, সম্প্রতি তিনি ২৭ টাকায় ১২০০টি বাচ্চা কিনলেও এখন একই বাচ্চার দাম ৩-৫ টাকায় নেমে এসেছে। শুধু তাই নয়, পূর্ণবয়স্ক ব্রয়লার মুরগির বাজারেও এই প্রভাব পড়েছে। বর্তমান মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়েও কম হওয়ায় অনেক খামারি উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন বা খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন।

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) জানায়, অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণে এই দামের বিপর্যয় ঘটেছে। একদিকে চাহিদা কমেছে, অন্যদিকে উৎপাদন থেমে না থাকায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। মানুষের আয় কমে যাওয়া, গার্মেন্টস খাতে চাকরিচ্যুতি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার ফলে ব্রয়লারের চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

বিএবি’র তথ্যমতে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ব্রয়লার বাচ্চা গড়ে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হলেও মে মাসে তা নেমে এসেছে ৮-১০ টাকায়। কালার জাত ও লেয়ার বাচ্চার ক্ষেত্রেও একই চিত্র—দরপতনের ধারাবাহিকতায় বিক্রি কমেছে প্রায় অর্ধেক।

হ্যাচারি মালিকরা বলছেন, উৎপাদন চালু রাখলেও প্রতি বাচ্চায় ১০-২০ টাকার বেশি লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় বহু হ্যাচারি কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করছে।

বিএবি সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “এটি নিছক বাজারের ওঠানামা নয়, এটি একটি বিপর্যয়। খামারি থেকে শুরু করে হ্যাচারি—সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারকে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা নিতে হবে।”

কাজী ফার্মসের পরিচালক কাজী জাহিন হাসান জানান, বাচ্চার দাম ব্রয়লারের বাজারদরের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। যখন বাজারে ব্রয়লারের দাম কমে, খামারিরা বাচ্চা তুলতে চান না, তখন দাম পড়ে যায়। এই ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।