মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিব মাঠে ছিলেন না, তাজউদ্দীন ছিলেন: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক। বুধবার (৪ জুন) সকাল ১০টায় দেওয়া ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানে বন্দি থাকায় সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন না, অথচ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে—এটি “অপ্রয়োজনীয় ও অন্যায়”।

সারজিস আলম লেখেন,

“মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে বন্দি হয়ে শেখ মুজিব বিজয়ের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে কারাবন্দি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতিতে তার অবদান অনস্বীকার্য, কিন্তু যুদ্ধের সময় তিনি সরাসরি মাঠে ছিলেন না। সেই সময়ে তাজউদ্দীন আহমদই নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি মাঠে থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন।”

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন সরাসরি যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি কীভাবে বাতিল হয়? এটা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।”

ফেসবুক পোস্টে সারজিস আরও অভিযোগ করেন, “বর্তমান সরকার ‘নতুনভাবে মুক্তিযোদ্ধা সাজানো’ এবং ‘ভুয়া সনদধারীদের’ বৈধতা দিতে গিয়ে প্রকৃত বীরদের অপমান করছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন, তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে লেখেন,

“আপনারা ইতিহাসকে নিজের মতো করে লিখতে চাইবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ইতিহাস যেন কখনও ক্ষমতাসীনদের খণ্ডচিত্র না হয়। ইতিহাসকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিন।”

এই বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ মুজিবুর রহমানের যুদ্ধ চলাকালে অনুপস্থিত থাকলেও তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং স্বাধীনতার ঘোষণা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরিতে অনস্বীকার্য। তবে সারজিসের বক্তব্যে “ইচ্ছাকৃত বন্দিত্ব” শব্দটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক উঠেছে, যা সরাসরি বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রশ্ন তুলেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।