জামায়াত বৈধ, ইসি কি প্রতীক দেবে?

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে পুনঃনিবন্ধনের পথ খুলে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজ রোববার (১ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ দলটির নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত রায় প্রত্যাহার করে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের নির্দেশ দেন।

তবে দলটির বহু প্রতীক্ষিত ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি কোনো রায় না দিয়ে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের বিবেচনায় ছেড়ে দিয়েছেন আদালত।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক নিবন্ধন ফিরে পাওয়াকে দলটির আইনজীবী ও নেতারা ‘বিচার ও গণতন্ত্রের বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দলের পক্ষে আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন এবং ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম।

নির্বাচন কমিশনের অবস্থান

রায়ের পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম জানান, আদালতের রায় পর্যালোচনা করে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে বলে তিনি জানান।

প্রেক্ষাপট ও রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে রায়

২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্টের এক রিটের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে এবং দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বরাদ্দ প্রত্যাহার করে।

এছাড়া, ২০২৪ সালের ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে ওই বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে।

রাজনৈতিক ময়দানে নতুন মাত্রা

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও বৈধতা সংকট কাটিয়ে দলটি এখন নতুন করে সাংগঠনিক তৎপরতায় মনোযোগ দেবে। তবে প্রতীক ফিরে পাওয়ার বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে দলটির নির্বাচনী প্রস্তুতির বাস্তব রূপরেখা।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক