ভয়াবহ দাবানল কানাডায়, জরুরি অবস্থা জারি

ভয়াবহ বিপদের মুখোমুখি হয়েছে কানাডা। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ম্যানিটোবা প্রদেশে দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যার ফলে সেখানে প্রদেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং ১৭ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

কানাডার স্থানীয় সময় বুধবার (২৮ মে) এ তথ্য জানিয়ে ম্যানিটোবার প্রিমিয়ার ওয়াব কিনিউ বলেন,

“এটি ম্যানিটোবার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা, যা আমাদের অধিকাংশের জীবদ্দশায় দেখা যায়নি।”

ম্যানিটোবা প্রদেশে দাবানল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা অগ্নিশিখার ঘন ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে ফেলছে, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন আবাসিক এলাকায়। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মাত্র ৪-৫ কিলোমিটার দূর থেকেও আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যাচ্ছে, এবং সেটি বিপজ্জনক গতিতে শহরগুলোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

শেরিল ম্যাথেসন, ম্যানিটোবার ফ্লিন ফ্লনের উত্তরের শেরিডনে একটি মৎস্য লজের মালিক, বলেন—

“দাবানল আমাদের ছোট্ট শহরটিকে ঘিরে ফেলেছে। ধোঁয়ার ঘনত্ব এত বেশি ছিল যে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। আতঙ্কিত মানুষ প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছে।”

প্রিমিয়ার কিনিউ জানান, তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে অনুরোধ করেছেন সামরিক বাহিনী মোতায়েনের জন্য, যাতে দ্রুত মানুষ সরানো এবং দাবানল নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত সহায়তা পাওয়া যায়।সামরিক বাহিনীর বিমান ও উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হচ্ছে যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণকে সরিয়ে নেওয়া যায় এবং দমকল সরঞ্জাম পৌঁছানো যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কানাডায় দাবানল আগের চেয়ে ঘন ঘন ও তীব্র হয়ে উঠছে। ২০২৩ সালেই দেশটি ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানলের মুখোমুখি হয়েছিল, যেখানে লাখ লাখ হেক্টর জমি পুড়ে যায়, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।

বর্তমানে কানাডায় ১৩৪টি সক্রিয় দাবানল রয়েছে, যার মধ্যে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, আলবার্টা, সাসকাচুয়ান, ম্যানিটোবা এবং অন্টারিও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই দাবানলের অর্ধেকই এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে।