বাজেট ঘোষণা ২ জুন, নির্বাচনে অর্থ বরাদ্দ থাকবে

অর্থবছরের বাজেট আগামী ২ জুন বিকেল ৩টায় জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। রাজনৈতিক সরকার না থাকায় ও জাতীয় সংসদ স্থগিত থাকায় এবারের বাজেট প্রস্তাবনা হবে ব্যতিক্রমধর্মী টেলিভিশন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে বাজেট উপস্থাপনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবারের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ বাজেট। ঘাটতির পরিমাণ ধরা হতে পারে প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যার একটি বড় অংশ বিদেশি সহায়তা এবং বাকিটা অভ্যন্তরীণ উৎস, বিশেষ করে ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্র থেকে সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।

নতুন বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষার সম্প্রসারণ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হতে পারে ৫.৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, এবারের বাজেটে নির্বাচন উপলক্ষে ২ হাজার ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। যদিও নির্বাচন কমিশন জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ৫ হাজার ৯২২ কোটি টাকা চেয়েছিল, তবে প্রস্তাবিত বরাদ্দ তা থেকে অনেক কম অর্ধেকেরও নিচে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বরাদ্দ নির্বাচন কমিশনের চাহিদা পূরণে সীমিত হলেও অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সামষ্টিক কাঠামো বিবেচনায় তা একটি ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে।

এবারের বাজেটে পরিচালন খাতে বরাদ্দ ধরা হতে পারে প্রায় ৫ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) আওতায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা। এর আগের (২০১৮) নির্বাচনে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে নির্বাচনী বরাদ্দ ও আর্থ-সামাজিক খাতসমূহে ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে অর্থ উপদেষ্টাকে নিতে হচ্ছে সতর্ক হিসাব। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজেট বাস্তবায়ন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি—দু’দিকেই এই বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক