গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনেই নিহত ৭৯, মোট প্রাণহানি ছাড়াল ৫৩৯০০

ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বিমান ও স্থল অভিযানে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আবারও প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে। শনিবার (২৪ মে) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২১১ জন। এ নিয়ে চলমান সংঘাতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৯০১ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯ জনে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আনাদোলু জানায়, অনেক লাশ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে। উদ্ধারকারীরা নিরাপত্তা সংকটের কারণে সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না, ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় আবারও হামলা শুরু করে, যা জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিকে সম্পূর্ণ ভেঙে দেয়। এই দ্বিতীয় দফা আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৭৪৭ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার ৬০০ জন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের এ সামরিক অভিযান শুরু হয়। তার পর থেকে এক বছরের কম সময়ে গাজায় মৃতের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো, মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘ বারবার গাজায় মানবিক বিপর্যয় ও যুদ্ধাপরাধের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও হামলা থামেনি।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) ইতোমধ্যেই গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট–এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গাজায় গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার মুখোমুখি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান এই আগ্রাসন শুধু ফিলিস্তিনের ভৌগোলিক সীমানা নয়, সারা বিশ্বের মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। তীব্র মানবিক সংকট এবং নিরীহ মানুষের মৃত্যু থামাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত ও কার্যকর হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

ইশতিয়াক আহমদ ইমন, নিজস্ব প্রতিবেদক