কাশ্মীর ইস্যুতে চীনের স্পষ্ট বার্তা: পাকিস্তানের পাশে থাকবে চীন

সত্য নিউজ:কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন সামরিক উত্তেজনা চরমে, ঠিক সেই সময় পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে চীন। বেইজিংয়ে সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই অবস্থান ব্যক্ত করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। চীনের এই অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বৈঠকে ওয়াং ই বলেন, ভারত-পাকিস্তান বিরোধ শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। তিনি পাকিস্তানকে ‘আয়রন-ক্ল্যাড বন্ধু’ আখ্যা দিয়ে দুই দেশের ‘সব-মৌসুমী কৌশলগত সহযোগিতা’ আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দেন। পাল্টা বক্তব্যে ইসহাক দার পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চীনের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি, পাকিস্তান-চীন কৌশলগত সম্পর্ক, এবং চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি) ২.০ প্রকল্প নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। উভয়পক্ষ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

সফরের অংশ হিসেবে দার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাওয়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। সেখানে চীন-পাকিস্তান রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হয়।

এই সফরটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং তার প্রতিক্রিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৫ ও ৬ মে ভারতীয় বিমান হামলায় পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরে কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। জবাবে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় জেট ভূপাতিত করে এবং পরবর্তীতে ড্রোন হামলা চালায়। চূড়ান্তভাবে ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

তবে ভারত এখনো আগ্রাসী অবস্থান ধরে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তান ইতোমধ্যে ভবিষ্যৎ উত্তেজনা এড়াতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে চীনের প্রকাশ্য সমর্থন কেবল পাকিস্তানের কূটনৈতিক অবস্থানকেই জোরদার করছে না, বরং ভারতের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।