মুক্তির পথে ফিলিস্তিনি বন্দীরা: প্রথম বাসটি পৌঁছাল গাজায়

ফিলিস্তিনের গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর এবার ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের বহনকারী একটি বাস ইতোমধ্যে গাজায় পৌঁছেছে। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের বহনকারী আরও কিছু বাস গাজার দিকে যাত্রা করেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
চুক্তি ও জিম্মি মুক্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার শর্ত মেনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে।
মুক্তির সময়: স্থানীয় সময় সকাল ৮টার পর থেকে দুই ধাপে এই জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়।
নিশ্চিতকরণ: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) দুই ধাপে জিম্মি মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় সবশেষ ৪৮ জন ইসরায়েলি জিম্মি অবস্থায় ছিলেন, যাদের মধ্যে ২০ জন বেঁচে ছিলেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, মুক্তি পাওয়া সব জিম্মি গাজা থেকে ইসরায়েলে ফিরে এসেছেন।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের প্রত্যাবর্তন
চুক্তি অনুযায়ী, ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত কতজন ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। ফিলিস্তিনি বন্দীদের বহনকারী কিছু বাস ইতোমধ্যে গাজায় পৌঁছেছে এবং আরও কিছু বাস গাজার দিকে যাত্রা করেছে বলে আল-জাজিরা জানিয়েছে।
৭৩৮ দিন পর মুক্ত: হামাস ১৩ জন জিম্মিকে তুলে দিল রেডক্রসের হাতে
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বন্দি থাকা জীবিত বাকি ১৩ জন জিম্মিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) হাতে তুলে দিয়েছে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল আটটার পর এই জিম্মি মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস এলাকা থেকে এসব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই রেডক্রসের গাড়িগুলো তাদের সংগ্রহ করে গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তুলে দেবে। এদিন মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের দ্বিতীয় দল এটি।
মুক্তির প্রক্রিয়া
জিম্মিদের দ্বিতীয় এই দলটিকে হামাস রেডক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, এদিন সকালে প্রথম সাত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। মুক্তি পাওয়া ওই ইসরায়েলিদের গাজার সীমান্ত পার করে নিজ দেশে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ইসরায়েলের এক সামরিক ঘাঁটিতে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার করা হয়।
মুক্তির পর গাজায় হামাসের বন্দিশালায় ৭৩৮ দিন কাটানোর পর এসব জিম্মি নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন। নতুন মুক্তি পাওয়া ১৩ জন জিম্মিকে একই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আরও ৪৮ জন জিম্মির মৃতদেহ হামাসের কাছে আছে। সেগুলোও আজকের মধ্যেই রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
হামাসের বন্দি মুক্তিতে উল্লাস ইসরায়েলে, শান্তির ইঙ্গিত মধ্যপ্রাচ্যে
দীর্ঘ দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর গাজায় শান্তির এক নতুন অধ্যায় শুরু হলো। ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস সোমবার (স্থানীয় সময়) প্রথম সাতজন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি-বিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপ।
হামাস জানায়, মুক্তিপ্রাপ্তদের আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (ICRC) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিগগিরই আরও ১৩ জন জীবিত বন্দি এবং ২৮ জন ইসরায়েলির দেহাবশেষ ফেরত দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলও প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। সোমবার ১,৯৬৬ জন বন্দিকে বিভিন্ন কারাগার থেকে বাসে করে গাজার নাসের হাসপাতালে আনা হয়, যেখানে তাদের পরিবারকে হস্তান্তর করা হবে।
গাজায় বন্দি বিনিময়ের সময় রেডক্রস ও হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা কালো পোশাকে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ইসরায়েলে উচ্ছ্বাসের জোয়ার—তেল আবিবের ‘হোস্টেজেস স্কয়ারে’ শত শত মানুষ পতাকা হাতে বন্দিদের স্বাগত জানান।
ওয়াশিংটন থেকে ইসরায়েলগামী বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “যুদ্ধ শেষ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এখন মধ্যপ্রাচ্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে।” সোমবার তিনি ইসরায়েলের সংসদে ভাষণ দেবেন এবং পরে দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পাবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ।
অন্যদিকে, হামাসের সামরিক শাখা এক বিবৃতিতে জানায়, তারা চুক্তির সব শর্ত মেনে চলবে, তবে ইসরায়েলও যেন তা মানে—তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। হামাস দাবি করে, ইসরায়েল সামরিকভাবে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আলোচনার টেবিলে এসেছে।
এই সংঘাতের শুরু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে বন্দি করা হয়। এরপর থেকে ইসরায়েলের বিমান ও স্থল অভিযানে গাজা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৬৭,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির পরও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। সোমবার মিশরের শার্ম আল শেখে ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা এক বৈঠকে বসছেন, যেখানে গাজার ভবিষ্যৎ, পুনর্গঠন ও হামাসের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে।
তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো নির্ধারিত হয়নি। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—যুদ্ধ শেষে গাজা কে শাসন করবে, এবং হামাস কি সত্যিই অস্ত্র ছেড়ে দেবে?
-আলমগীর হোসেন
শি জিনপিং: সমাজে প্রকৃত সমতা চাইলে নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে
বেইজিংয়ে আয়োজিত বৈশ্বিক নারী সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নারীর রাজনৈতিক ও সরকারি অংশগ্রহণ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সমাজে প্রকৃত লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারী নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকে “গভীরভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ” দিতে হবে।
জাতিসংঘের সংস্থা ইউএন উইমেনের সহযোগিতায় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের নাম “গ্লোবাল লিডার্স মিটিং অন উইমেন”, যার উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা এবং সার্বিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া। সম্মেলনে আইসল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ঘানা, ডোমিনিকা ও মোজাম্বিকসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন বলে চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
শি জিনপিং তার বক্তব্যে বলেন, “প্রতিটি দেশকে নারীদের জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথ প্রসারিত করতে হবে, যাতে তারা জাতীয় ও সামাজিক প্রশাসনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “নারীর সার্বিক বিকাশের পূর্বশর্ত হলো শান্তি ও স্থিতিশীলতা। যুদ্ধ বা সংঘাতের পরিবেশে নারীর অগ্রগতি সম্ভব নয়।”
চীনের নারী শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, উচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিতে নারীর প্রতিনিধিত্ব এখনও তুলনামূলকভাবে কম। বর্তমানে উচ্চশিক্ষায় নারীরা প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং কর্মক্ষেত্রে ৪৩ শতাংশ অংশীদার হলেও, রাজনৈতিক শীর্ষস্তরে এই সংখ্যা আশানুরূপ নয়।
২০২২ সালে দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীনের শীর্ষ রাজনৈতিক সংস্থা পলিটব্যুরোর ২৪ সদস্যের মধ্যে কোনো নারী সদস্য ছিলেন না, এবং সাত সদস্যবিশিষ্ট স্থায়ী কমিটিতেও কোনো নারী অন্তর্ভুক্ত হননি। জাতিসংঘ ২০২৩ সালে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিল, নেতৃত্বের স্তরে নারীর অনুপস্থিতি চীনের লিঙ্গসমতার অগ্রযাত্রার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা দেশটিকে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আইনগত কোটা ও লিঙ্গসমতা ব্যবস্থা চালুর সুপারিশও করেছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে গত এক দশকে চীনের নারী রাজনীতিক ও প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রেও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য কিছুটা বেড়েছে। তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী শিক্ষায় বিনিয়োগ, পরিবারকেন্দ্রিক উন্নয়ননীতি ও মাতৃত্বকালীন সহায়তা কর্মসূচি কিছুটা ভারসাম্য তৈরি করেছে।
২০২৩ সালে শি জিনপিং বলেন, “নারীরা কেবল সমাজের অর্ধাংশ নয়, তারা সমাজের ভবিষ্যতেরও বাহক। পরিবারে নতুন সংস্কৃতি ও নতুন মূল্যবোধ গড়ে তোলা তাদেরই দায়িত্ব।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, নারীর উন্নয়ন কেবল তাদের ব্যক্তিগত উন্নতির বিষয় নয়; এটি পরিবারের সুশৃঙ্খলতা, সামাজিক সম্প্রীতি, জাতীয় উন্নয়ন ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
চীনের এই সম্মেলনকে অনেকে লিঙ্গসমতা নীতি পুনরুজ্জীবনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। যদিও শীর্ষ নেতৃত্বে নারীর উপস্থিতি এখনও সীমিত, তথাপি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এই আলোচনা নারী ক্ষমতায়নের রাজনৈতিক স্বীকৃতি হিসেবে নতুন বার্তা দিচ্ছে—বিশেষত এমন সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে নারী নেতৃত্বের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
-নাজমুল হাসান
পরমাণু ইস্যুতে কঠোর ইরান: আইএইএ-এর সঙ্গে চুক্তি স্থগিত, কারণ কী?
জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি রোববার (১২ অক্টোবর) রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরাঘচি বলেন, “আমরা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছি। জাতিসংঘ যদি এমন কোনো প্রস্তাব দেয়, যা ইরানের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক হয়—আমরা আবার চুক্তিতে ফিরে যাব।”
সংঘাত ও তিক্ততা
১৯৬৮ সালে ইরানের রাজা রেজা পাহলভীর শাসনামলে দেশটি আইএইএ-এর সঙ্গে নন-প্রোলিফারেশন অ্যাক্ট (এনপিটি) চুক্তি করে। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ইসরায়েলি হামলা: গত জুনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর আইএইএ-এর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। আইএইএ এক বিবৃতিতে জানায়, ইরানের কাছে বর্তমানে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে, যার বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশ।
যুদ্ধের কারণ: আইএইএ-এর ওই বিবৃতির এক সপ্তাহ পর ১২ জুন রাতে ইসরায়েল ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
১২ দিনব্যাপী সংঘাতে ইরানের সেনাপ্রধান, সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও অন্তত ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোরও। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এখনো সেই ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের কোনো হদিস মেলেনি।
আলোচনার পথে ইরান
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি জানান, সংঘাত শেষে আইএইএ তেহরান সফরের আগ্রহ জানালেও ইরান জানায়, সংলাপের জন্য তারা প্রস্তুত, তবে পরমাণু স্থাপনা দেখানোর বাধ্যবাধকতা তাদের নেই।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার পর জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়। ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসা হবে কি না জানতে চাইলে আরাঘচি বলেন, “আমরা তার প্রয়োজন দেখছি না। ইউরোপের সঙ্গে বৈঠকের আর কোনো ভিত্তি নেই।”
সূত্র: আরটি
মেক্সিকোর পাহাড়ি জনপদে ভয়াবহ বন্যা: মৃত্যু ৪৭, নিঃস্ব অসংখ্য পরিবার
পাহাড়ি শহর হুয়াউচিনাঙ্গোর কাদায় ভরা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৭৬ বছর বয়সী রোসালিয়া অরটেগা। চোখের সামনে পড়ে আছে তাঁর বোনের নিথর দেহ। তীব্র বর্ষণে হঠাৎ ধসে পড়া পাহাড়ি ঘর থেকে বোনের মরদেহ খুঁজে পেয়ে যেন একরকম স্বস্তিই পেয়েছেন তিনি। কণ্ঠ ভারী হয়ে আসলেও বললেন, “আমরা দুঃখিত, কিন্তু অন্তত এখন তাঁকে খ্রিস্টান রীতিতে শেষ বিদায় দিতে পারব।”
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া লাগাতার বৃষ্টিপাতে মেক্সিকোর মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে হিদালগো, পুয়েবলা, কুয়েরেতারো ও ভেরাক্রুজ রাজ্যে কমপক্ষে ৪৭ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
পুয়েবলায় অবস্থিত হুয়াউচিনাঙ্গো শহরটি, যার জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ, এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি। সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু এই রাজ্যেই নয়জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং শত শত ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে কাদা-মিশ্রিত বন্যার জলে।
এই বিপর্যস্ত অঞ্চলটি সিয়েরা মাদ্রে ওরিয়েন্তাল পর্বতমালা ঘিরে, যা মেক্সিকোর পূর্ব উপকূলের সমান্তরালভাবে বিস্তৃত। দুর্গম এসব পাহাড়ি এলাকায় এখনো টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতের পর, প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ি নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে গিয়ে হুয়াউচিনাঙ্গোর ঘরবাড়ি তলিয়ে দেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই অগণিত মানুষ হারিয়েছে তাদের বাসস্থান, কেউ কেউ হারিয়েছে প্রিয়জনও।
৪৯ বছর বয়সী গৃহিণী মারিয়া সালাস হারিয়েছেন তাঁর পাঁচজন আত্মীয়কে, যাদের ঘরটি পাহাড়ধসে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। নিজের ঘরও বিধ্বস্ত হয়েছে ভূমিধসে। চোখের কোণে অশ্রু নিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার জিনিসপত্র কিছুই উদ্ধার করতে পারিনি। থাকার জায়গা নেই, ঘুমানোর জায়গা নেই—সব শেষ।”
যারা বেঁচে আছেন, তারা এখন শেষকৃত্যের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ সামান্য টাকাপয়সা জমিয়ে ভাঙা ঘর মেরামতের চেষ্টা করছেন, কেউ খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।
শহরের অন্য প্রান্তে ৪০ বছর বয়সী গৃহকর্মী পেত্রা রদ্রিগেজ বর্ণনা দেন ভয়াল সেই মুহূর্তের—“পানি হাঁটু পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। আমি, আমার স্বামী ও দুই ছেলে হাত ধরে রেখেছিলাম। যদি একজনকে টানে, সবাই যেন একসঙ্গে যাই।”
অন্যদিকে শিক্ষক কারিনা গালিসিয়া দেখান তাঁর কাদা-মাখা বাড়িটি। তিনি বলেন, “আমরা দৌড়ে বেরিয়ে যেতে পেরেছিলাম, নইলে আজ আমাদেরও মাটিচাপা পড়তে হতো।”
যেসব ঘর তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্ত, সেখানে স্থানীয়রা প্লাস্টিক বোতল, ঝাড়ু ও কোদাল দিয়ে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন।
৪৮ বছর বয়সী আদ্রিয়ানা ভাসকেজ এক আত্মীয়ের খোঁজে পাহাড়ি পথে পাথর আর কাদার স্তূপ পেরিয়ে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন—পুরো এলাকার কাঠ ও টিনের ঘরবাড়ি ধসে একাকার। সেনারা ভারী যন্ত্রে ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করছে। ভাসকেজ বলেন, “আমার আত্মীয়া ফোন ধরেছিল, কিন্তু ঠিকভাবে কথা বলা যাচ্ছিল না। আশা করি এটা কেবল নেটওয়ার্ক সমস্যাই ছিল।”
প্রায় একশ’ ছোট গ্রাম এখনো সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, কারণ সড়ক ধসে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
এই বছর মেক্সিকো জুড়েই অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজধানী মেক্সিকো সিটিতেও রেকর্ড বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ হয়েছে। আবহাওয়াবিদ ইসিদ্রো কানো জানান, উষ্ণ ও আর্দ্র বাতাস মেক্সিকো উপসাগর থেকে উঠে পাহাড়ে ঠেকে মেঘঘন বর্ষণের সৃষ্টি করছে, যা এই মৌসুমি পরিবর্তনের ফল।
মেক্সিকোর পাহাড়ি জনপদগুলোতে এমন বন্যা প্রতি বছর কোনো না কোনোভাবে আঘাত হানে। কিন্তু এবারের দুর্যোগের ব্যাপ্তি ও ক্ষয়ক্ষতি একে সাম্প্রতিক বছরের অন্যতম ভয়াবহ বিপর্যয়ে পরিণত করেছে। এখনো পর্যন্ত উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ বিতরণ চলমান, তবে বিপর্যস্ত পরিবারগুলোর সামনে অনিশ্চয়তার ছায়া গভীর হচ্ছে।
-শবনম লিজা
ট্রাম্প: ৩ হাজার বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ইহুদি-মুসলিম বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ
গাজা-ইসরায়েলের সংঘাতের অবসান ঘটেছে এবং মধ্যপ্রাচ্য এখন ‘স্বাভাবিক’ অবস্থায় ফিরতে চলেছে বলে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার (১২ অক্টোবর) ওয়াশিংটন থেকে এয়ার ফোর্স ওয়ানে ইসরায়েল যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “জেনে রাখুন, যুদ্ধ শেষ।”
ঐতিহাসিক চুক্তি ও মধ্যপ্রাচ্যের ঐক্য
ট্রাম্প এই শান্তি চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, ৩ হাজার বছরের মধ্যে এই প্রথম ইহুদি, মুসলিম ও আরব দেশগুলো একসঙ্গে রাস্তায় নেমে আনন্দ উদযাপন করছে। তিনি বলেন, “এই চুক্তির মাধ্যমে একসময়ের কট্টর শত্রুরাও আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মিশর, সৌদি আরবসহ এ অঞ্চলের শক্তিধর দেশগুলো সবাই এই চুক্তির পক্ষে।”
ট্রাম্প আরও বলেন, এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে, কারণ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলা সংঘাতে মানুষ এখন ‘ক্লান্ত’। তিনি জানান, খুব শিগগিরই ‘বোর্ড অব পিস’ নামে একটি নতুন আন্তর্জাতিক পর্ষদ গঠিত হবে। সম্ভাব্য সদস্য হিসেবে তিনি সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নামও উল্লেখ করেন।
জিম্মি মুক্তি ও পুনর্গঠন
জিম্মি মুক্তি: ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র সাশা বেড্রোসিয়ান জানান, সোমবার ভোর থেকেই জিম্মিদের মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। জীবিত ২০ জন জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দেওয়া হবে, এরপর বাকি ২৮ জন মৃত জিম্মির দেহ হস্তান্তর করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, সোমবার দুপুরের মধ্যে হামাসের পক্ষ থেকে সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা।
পুনর্গঠন: ট্রাম্প স্বীকার করেন, গাজার এলাকা এখন ‘ধ্বংসস্তূপে’ পরিণত হয়েছে। পুনর্গঠনের আগে ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা অপসারণ এবং মৌলিক সেবা পুনরায় চালুর কাজ শুরু হবে।
নেতানিয়াহুর বার্তা: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, “আগামীকাল একটি নতুন পথের সূচনা—বিনির্মাণের পথ, নিরাময়ের পথ।”
ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তন
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গত দুই মাস ধরে ইসরায়েলি হামলার কেন্দ্রে থাকা গাজা সিটির উত্তরে ফিরে আসা শুরু করেছেন। তবে উত্তর গাজায় ফিরে আসা অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তারা অবিশ্বাস্য ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখেছেন।
৩৭ বছর বয়সী রামি মোহাম্মদ আলি, যিনি পায়ে হেঁটে গাজা সিটিতে ফিরেছেন, বলেন, “যে ধ্বংস আমরা দেখেছি, তা বিশ্বাস করা কঠিন। আমরা গাজায় ফিরে আনন্দিত, কিন্তু এই ধ্বংস দেখে মন তিক্ততায় ভরে গেছে।”
সৌদি আরবের মক্কা অঞ্চলে বিশাল সোনার খনি আবিষ্কার
সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা অঞ্চলে বিশাল এক সোনার খনি আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রায় ১২৫ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এই খনিজভাণ্ডারকে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ আবিষ্কার হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। মানসুরা–মাসারাহ সোনার খনির দক্ষিণে পাওয়া এই নতুন সোনার খনি ইতোমধ্যেই সৌদি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। খবর দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের।
অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত মাইলফলক
রাষ্ট্রীয় খনিজ কোম্পানি ‘মাআদেন’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে প্রায় ১০০ কিলোমিটারজুড়ে উচ্চমাত্রার সোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। পরীক্ষাগারে নেওয়া নমুনায় দেখা গেছে, প্রতি টন মাটিতে সর্বোচ্চ ২০.৬ গ্রাম পর্যন্ত সোনা পাওয়া গেছে—যা আন্তর্জাতিক মানে ‘অত্যন্ত সমৃদ্ধ’ হিসেবে ধরা হয়।
মাআদেনের প্রধান নির্বাহী রবার্ট উইলে বলেন, “এই নতুন আবিষ্কার মক্কাকে বৈশ্বিক সোনার মানচিত্রে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রেও এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।”
বর্তমানে মানসুরা–মাসারাহ খনিতে প্রায় ৭০ লাখ আউন্স সোনা মজুত আছে এবং প্রতিবছর এখান থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার আউন্স সোনা উত্তোলন করা হয়। নতুন আবিষ্কারের ফলে উৎপাদন বহুগুণে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো অঞ্চলজুড়ে ১২৫ কিলোমিটারব্যাপী এক ‘গ্লোবাল গোল্ড বেল্ট’ বা আন্তর্জাতিক মানের স্বর্ণপট্টি গড়ে উঠতে পারে।
ভিশন ২০৩০ ও বৈশ্বিক প্রভাব
এই সোনার খনি আবিষ্কার সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে খনিজ, প্রযুক্তি ও শিল্পখাতকে অর্থনীতির নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।
সৌদি শিল্প ও খনিজসম্পদমন্ত্রী বান্দার আলখোরাইফ বলেছেন, “এই নতুন সোনার খনি আবিষ্কার সৌদি অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণের যাত্রায় ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে।”
মাআদেন আরও জানিয়েছে, মক্কার কাছাকাছি ওয়াদি আল-জাও ও জাবাল শাইবান অঞ্চলেও নতুন সোনা ও তামার ভাণ্ডার আবিষ্কৃত হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই নতুন খনি হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করবে এবং বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে। এতে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক সোনার বাজারে আরও শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারবে।
আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের সামরিক অভিযান: বড় সংখ্যক তালেবানকে হত্যার দাবি
আফগান তালেবান এবং ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর হামলার জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মরক্ষামূলক অভিযানে ২০০ জনের বেশি সন্ত্রাসীকে হত্যা করার দাবি করেছে। রোববার (১২ অক্টোবর) পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
আফগান ভূখণ্ডে ঘাঁটি দখল
বিবৃতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আফগান ভূখণ্ডে থাকা তালেবান ঘাঁটি, সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণকেন্দ্র এবং সহায়ক নেটওয়ার্কে সুনির্দিষ্ট হামলা চালানো হয়েছে। এই অভিযানের সময়:
২১টি ঘাঁটি দখল: সীমান্তজুড়ে তালেবানের একাধিক স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে এবং আফগান ভূখণ্ডের ভেতরে ২১টি শত্রু ঘাঁটি অস্থায়ীভাবে দখল করা হয়েছে।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি: তালেবান পোস্ট, ক্যাম্প, সদর দপ্তর ও সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কগুলোর অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক, যা সীমান্তজুড়ে কৌশলগত ও কার্যক্রমগত স্তরে ছড়িয়ে আছে।
সন্ত্রাস ও ভারতের সংশ্লিষ্টতা
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেন, ইসলামাবাদ সহযোগিতামূলক কূটনীতি ও সংলাপকে অগ্রাধিকার দিলেও, আফগান মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের কার্যক্রম কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।
আইএসপিআর সতর্ক করে বলেছে, যদি তালেবান সরকার ভারতীয় সহযোগিতায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিয়ে অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা বাড়াতে থাকে, তাহলে পাকিস্তান থেমে থাকবে না। আফগানিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসবাদের মূল উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
সম্প্রতি আফগান বাহিনীর গুলিবর্ষণ থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। আঙ্গুরআডা, বাজাউর, কুররম, দির, চিত্রাল ও বারামচাসহ একাধিক সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
এদিকে, এই উত্তেজনা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, কাতার ও ইরান। প্রতিবেশী এই দুই দেশের প্রতি সংযম প্রদর্শন এবং সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূত্র : জিয়ো নিউজ
ইসরায়েল ধোঁকা দিতে পারে: গাজার চুক্তি মানা নিয়ে সংশয়ে ইরান
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও দখলদার ইসরায়েলের প্রতি কোনো আস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তিনি বলেছেন, “ইসরায়েলের পূর্বের চুক্তি এবং আগ্রাসনবিরতি নিয়ে আমরা সজাগ। জায়োনিস্ট শাসক ধোঁকা ও প্রতারণা করতে পারে। এই শাসকের প্রতি আমাদের কোনো আস্থা নেই।”
যুদ্ধ থামাতে সমর্থন
আরাঘচি লেবাননে পূর্বের আগ্রাসনবিরতির লঙ্ঘনের উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন, ইসরায়েলের পূর্বের চুক্তিভঙ্গের বিষয়ে ইরান সতর্ক। তবে তিনি আগ্রাসনবিরতির প্রতি ইরানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা যা এই অপরাধ থামাতে সাহায্য করবে, তাতে ইরানের সবসময় সমর্থন রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইরান সব ধরনের পদক্ষেপ বা উদ্যোগকে সমর্থন করে, যা গণহত্যামূলক যুদ্ধ থামানো, দখলদার বাহিনী প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের অন্তর্ভুক্ত।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের বার্তা
আরাঘচি জানান, মোটামুটি তিন-চার দিন আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি টেলিফোন আলাপ হয়েছিল। নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে নতুন যুদ্ধ শুরু করার কোনো ইচ্ছা তার নেই। রাশিয়ার মাধ্যমে ইরানকে এই বার্তাটি দেওয়া হয়েছে বলে আরাঘচি নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, ইরান ও ইসরায়েল জুনে ১২ দিনের যুদ্ধ করেছে, যা শুরু হয়েছিল ইসরায়েলের ইরানের নিউক্লিয়ার ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে অভূতপূর্ব হামলার মাধ্যমে।
পাঠকের মতামত:
- ৪ দফা দাবি নিয়ে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধারা সচিবালয়ে
- সেনানিবাসের ভবন সাময়িক কারাগার: প্রজ্ঞাপন জারি
- চার কোটি বেকারের সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার দেবে বিএনপি: মির্জা ফখরুল
- ৭৩৮ দিন পর মুক্ত: হামাস ১৩ জন জিম্মিকে তুলে দিল রেডক্রসের হাতে
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- হামাসের বন্দি মুক্তিতে উল্লাস ইসরায়েলে, শান্তির ইঙ্গিত মধ্যপ্রাচ্যে
- শি জিনপিং: সমাজে প্রকৃত সমতা চাইলে নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে
- এএফসি বাছাইয়ে আজ জর্ডানের মুখোমুখি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল
- ‘আর ফেরার উপায় নেই’: জলবায়ু সংকটে পৃথিবীর ইকোসিস্টেম বিপন্ন
- পরমাণু ইস্যুতে কঠোর ইরান: আইএইএ-এর সঙ্গে চুক্তি স্থগিত, কারণ কী?
- অর্থ সাশ্রয়ে বিশেষ পদক্ষেপ: জুলাই সনদ ও নির্বাচন একই দিনে করার প্রস্তুতি
- মেক্সিকোর পাহাড়ি জনপদে ভয়াবহ বন্যা: মৃত্যু ৪৭, নিঃস্ব অসংখ্য পরিবার
- ট্রাম্প: ৩ হাজার বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ইহুদি-মুসলিম বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ
- ‘সামাজিক ব্যবসা তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
- সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- কুরআন ও বিজ্ঞানের মহাবিস্ময়: যেভাবে মিলে যাচ্ছে ‘বিগ ক্রাঞ্চ’ তত্ত্ব ও কিয়ামতের ভবিষ্যদ্বাণী!
- সৌদি আরবের মক্কা অঞ্চলে বিশাল সোনার খনি আবিষ্কার
- গ্যাস-কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করবে হার্ভার্ডের চিকিৎসকের পরামর্শ দেওয়া ৭ সুপারফুড
- জুলাই বিপ্লবের চেতনা: ওসমানী উদ্যানে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের বাজেট নিয়ে বিতর্ক
- ইউটিউবে সাফল্য: আপনার চ্যানেলকে জনপ্রিয় করার ৮টি সহজ টিপস
- দুশ্চিন্তা-উদ্বেগে ভুগছেন? মন শান্ত করতে মেনে চলুন এই ৫ কৌশল
- আমার ছেলেমেয়ে দেশে, একা সেফ এক্সিট নিয়ে কী করব?: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব’ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন সারজিস আলম
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের সামরিক অভিযান: বড় সংখ্যক তালেবানকে হত্যার দাবি
- ঘুমের মধ্যে ঘন ঘন প্রস্রাব: ডায়াবেটিস ছাড়াও যে ৫ রোগের লক্ষণ হতে পারে
- অস্টিওপোরোসিস থেকে মুক্তি: গর্ভাবস্থায় হাড় শক্ত রাখতে মেনে চলুন এই নিয়ম
- বিলিয়নিয়ার হতে চান? যে ৪টি ব্যবসায় রয়েছে সফল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা
- জুলাই নিয়ে কাজ করলেই প্রশ্ন: বাজেট বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ মাহমুদ
- এনসিপি নেতা সারজিসকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিলেন প্রিন্স মাহমুদ
- খাবার খেয়েই বসে আছেন? এটি হতে পারে ধূমপানের মতোই মারাত্মক অভ্যাস
- অবিশ্বাস্য! ১১ বছর বয়সী শিশুর মুখে ৮১টি দাঁত
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- আজকের ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১২ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১২ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিচারকাজ সম্প্রচারে সাইবার হামলা
- ইসরায়েল ধোঁকা দিতে পারে: গাজার চুক্তি মানা নিয়ে সংশয়ে ইরান
- পিআর আন্দোলন নির্বাচন বিলম্বের অপচেষ্টা: মির্জা ফখরুল
- নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে ডিসি, এসপি ও ওসিদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনা
- আফগানিস্তানের ‘প্রতিশোধমূলক’ অভিযান: সীমান্তে তীব্র সংঘাত
- বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা
- মরণযাত্রায় শীর্ষে বাংলাদেশ,তবুও কমছে না অবৈধ অনুপ্রবেশ
- হামাস-ইসরায়েল চুক্তি কার্যকর: ধ্বংসস্তূপের মাঝে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
- ৪ বার সংশোধন হলো ট্রাইব্যুনাল আইন, যুক্ত হলো ‘নির্বাচনী অযোগ্যতা’ ধারা
- গাজায় শান্তির সন্ধিক্ষণ: সোমবার শারম এল-শেখে ট্রাম্প ও সিসির নেতৃত্বে বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলন
- সমুদ্রের মাঝে সভ্যতা: ইতিহাস, ঐতিহ্য, জলবায়ু ও কূটনীতির মিলনে মালদ্বীপের টিকে থাকার গল্প
- হজ নিবন্ধনে নেই আশানুরূপ সাড়া, কোটা খালি থাকার শঙ্কা
- ১২ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- আন্দেসের হৃদয়ে এক বিপ্লবী দেশ: বলিভিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- জিরো-ওয়েস্ট কুকিং’: সবজির খোসাও হবে সুস্বাদু রেসিপি
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- হোয়াটসঅ্যাপে আর লাগবে না নম্বর,ইউজার নেম দিয়েই করা যাবে যোগাযোগ
- চ্যাম্পিয়নের দুর্দিন: সেভিয়ার মাঠে ৪–১ গোলে হার বার্সেলোনার
- স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও বাড়ল মূল্য