পলাতক আওয়ামীকর্মীরা গ্রেফতার ভারতে!

সত্য নিউজ: পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের সবাই বাংলাদেশের সাবেক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে পুলিশি সূত্রে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মজনু গাজী (৫২), মোহাম্মদ কামাল শেখ ওরফে ইদ্রিস আলী (৪০) এবং মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ওরফে মিলন।

জানা গেছে, গত ৫ দিন আগে এক গোপন অভিযানে প্রথমে রহড়া এলাকা থেকে মজনু ও কামাল শেখকে এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিউ টাউনের ঘুনি লস্কর পাড়া এলাকা থেকে মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের রোববার (১৮ মে) ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে হাজির করা হয়।

রাজনৈতিক পটভূমি

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তরা বাংলাদেশের বর্তমান নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কামাল শেখ দাবি করেন, তিনি খুলনার একটি ইউনিয়নে যুবলীগের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি ৮ আগস্ট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। অপর দুই অভিযুক্তের ক্ষেত্রেও অনুরূপ প্রেক্ষাপট পাওয়া গেছে।

আত্মগোপন ও ধরপাকড়

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সম্ভাব্য গ্রেফতার এড়াতে তারা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিভিন্ন অঞ্চলে আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য ও ছবি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে রহড়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। তিনজনের বিরুদ্ধেই ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রশাসনিক উদ্বেগ ও প্রশ্ন

এই ঘটনায় সীমান্ত নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রশাসন মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এটি কেবল বেআইনি অনুপ্রবেশের ঘটনা নয়, বরং রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষিতে আশ্রয় প্রার্থনার জটিল পরিণতি হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ

ভারতীয় আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাথেও তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। এদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে নাকি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার প্রসঙ্গে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হবে তা সময়ই বলবে।

এই ঘটনা নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে রাজনৈতিক পরিবর্তনের অভিঘাতে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা, আশ্রয়, ও মানবিকতার সীমানা নিয়ে চলমান বিতর্ককে।