মোহাম্মদপুরে ফের কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহ তাণ্ডব!

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফের কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহ তাণ্ডবের শিকার হয়েছে একটি পরিবার। দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে গভীর রাতে একই পরিবারের সাত সদস্যের ওপর হামলা চালিয়েছে একদল কিশোর গ্যাং সদস্য। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর, তাদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার (১৪ মে) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকার ইত্যাদির মোড় সংলগ্ন ৩৬১/বি নম্বর বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এই নৃশংস হামলায় আহত হন—স্বপন, সাব্বির, রাব্বি, কাসেম, আফজাল, ফাতেমা বেগম ও মামুন। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য আফজাল হোসেন জানান, রাতের নির্জনে বাড়ির সামনে বসে থাকার সময় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিল কয়েকজন কিশোর। পরিচয় জানতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষে জড়ায় তারা এবং কিশোরদের একজন ফোনে সহযোগীদের ডেকে আনে।

মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ১০-১৫ জনের একটি দল দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ হাজির হয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। হামলায় আফজালের হাতের রগ কেটে যায়, গুরুতর আহত হন তার বড় ভাই স্বপনসহ পরিবারের আরও ছয় সদস্য। আহতদের মধ্যে স্বপনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানায়, সম্প্রতি মোহাম্মদপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ছোটখাটো ঘটনায় গ্যাং সদস্যদের এমন নিষ্ঠুর সহিংসতা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।

এ বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) বলেন, “ঘটনার পরপরই আমাদের একাধিক টিম অভিযানে নেমেছে। আমরা জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, কিশোর গ্যাং সংস্কৃতির উত্থান রাজধানীর সামাজিক ও নিরাপত্তা কাঠামোকে বিপদসংকুল করে তুলছে। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর নীতিমালা, সামাজিক সচেতনতা এবং কঠোর আইন প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি।