সামরিক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষতির পর কোন পথে হাটছে ভারত?

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক একতরফা সামরিক অভিযানে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষতির পর এখন কূটনৈতিক কৌশলে মনোযোগ দিচ্ছে ভারত এমনটাই দাবি করেছে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের অভিযানে অন্তত ছয়টি যুদ্ধবিমান হারানো ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কার্যত ব্যর্থতা ভারতের কূটনৈতিক ঘরানায় নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। যুদ্ধ-পরবর্তী চাপ সামাল দিতে নয়াদিল্লি গঠন করেছে সাত সদস্যের সংসদীয় কূটনৈতিক মিশন, যেখানে অংশ নিচ্ছেন দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা।

আন্তর্জাতিক ব্যাখ্যায় মনোযোগ

এই কূটনৈতিক দলগুলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোসহ ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলো সফর করবে। সফরের উদ্দেশ্য হবে ‘অপারেশন সিঁদুর’কে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করা এবং আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করা।

সফরটি শুরু হতে পারে চলতি মাসের শেষের দিকে। দলগুলো বৈঠক করবে বিদেশি সরকার, থিঙ্ক ট্যাংক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।

প্রতিরক্ষা জোরদার প্রচার

এছাড়া, প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করতে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। সেখানে উপস্থাপন করা হবে স্যাটেলাইট চিত্র, গোয়েন্দা রিপোর্ট ও ইন্টারসেপ্টেড যোগাযোগসহ নানা কারিগরি উপাত্ত। ভারত দাবি করছে, এই তথ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে হওয়া হামলার সঙ্গে লস্কর-ই-তৈয়বা ও দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের সংশ্লিষ্টতা স্পষ্টভাবে পাওয়া গেছে।

ভারতের পক্ষ থেকে অভিযানে লক্ষ্যবস্তু হওয়া ব্যক্তি ও অবকাঠামোগুলোকে ‘সন্ত্রাসী সম্পৃক্ততা’ যুক্ত বলে তুলে ধরা হবে বলে জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ব্যাকফুট?

জিও নিউজের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, সামরিক ব্যর্থতা ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে ভারত এখন প্রতিরক্ষা নয়, ব্যাখ্যার মাধ্যমে বৈধতা প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অভিযানের ক্ষয়ক্ষতি বা কূটনৈতিক সফর পরিকল্পনার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

প্রসঙ্গত

‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের এই সামরিক অভিযানের সূত্রপাত হয়েছিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সেনা সদস্যদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায়। এরপর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছায়। সামরিক ও রাজনৈতিক পর্যায়ে দুই দেশের সম্পর্ক একবারে তলানিতে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।