জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল উন্নত যে দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১০:০৩:১০
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল উন্নত যে দেশ
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ বেলজিয়াম। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি বিশ্ববাসীকে জানান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত এ সিদ্ধান্ত বেলজিয়ামের কূটনৈতিক অবস্থানকে নতুন মাত্রা দিয়েছে এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে পশ্চিমা বিশ্বে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

প্রেভো তাঁর পোস্টে লিখেছেন, বেলজিয়াম দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হলো। শুধু স্বীকৃতিই নয়, বেলজিয়াম সরকার ইসরায়েল সরকারের বিরুদ্ধে অন্তত ১২ দফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—অধিকৃত পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি থেকে যেকোনো ধরনের আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারি ক্রয়-বিক্রয় ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক সরঞ্জাম বা প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ প্রকল্পে অংশগ্রহণ বন্ধ করা।

এমন এক সময়ে বেলজিয়ামের এই ঘোষণা এলো যখন গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ। হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় লাখো মানুষ চরম মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রশ্নটি নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।

এর আগে গত জুলাই মাসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্যারিস ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ফ্রান্সের পর আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ একই পথে হাঁটলেও কিছু রাষ্ট্র আবার শর্তসাপেক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বেলজিয়াম এবার প্রকাশ্যে ও আনুষ্ঠানিকভাবে যে অবস্থান নিল, তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ফিলিস্তিন প্রশ্নে আরও বিভাজন তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি জাতিসংঘের মোট সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ। ফলে স্পষ্ট হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশ ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। বেলজিয়ামের সিদ্ধান্তে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হলো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়ে বেলজিয়াম শুধু একটি কূটনৈতিক অবস্থানই নিল না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্ত বার্তাও দিল যে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইউরোপের ভেতরেও রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে। এর প্রভাব ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিতেও পড়তে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যে ইসরায়েলপন্থী, সেখানে বেলজিয়ামের এই পদক্ষেপ পশ্চিমা ঐক্যকে দুর্বল করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনপন্থী দেশগুলো মনে করছে, এ ধরনের স্বীকৃতি ও নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক চাপে ফেলতে সাহায্য করবে এবং হয়তো যুদ্ধবিরতি ও সমঝোতার দিকে ঠেলে দিতে পারবে। তবে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলো আশঙ্কা করছে, এতে করে কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও বাড়বে এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরানো কঠিন হয়ে পড়বে।

-রাফসান


আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৯:৫৭:১২
আফগানিস্তানে নতুন আতঙ্ক: বাড়ি থেকেও আশ্রয়হীন হাজারো পরিবার
আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর চলছে উদ্ধার তৎপরতা। ছবি : সংগৃহীত

পূর্বাঞ্চলীয় আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর অনেক বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। খাবারের সংকট এবং আফটার শকের আতঙ্কে তারা নিজেদের ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না। তাদের এই দুর্দশার খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ।

গত রোববার পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত আফগানিস্তানের একটি পাহাড়বেষ্টিত দুর্গম এলাকায় ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ভূমিকম্পের পর থেকে এখন পর্যন্ত ছয়টি বড় ধরনের আফটার শক অনুভূত হয়েছে।

সবুজ পাহাড়ের ঢাল এখন সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভূমিকম্পের কয়েক দিন পর এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। এদিকে, যেসব বাড়ি আংশিক ধ্বংস হয়েছে, সেগুলোর বাসিন্দারা মেরামতের সাহস পাচ্ছে না, কারণ তারা আশঙ্কা করছে যেকোনো মুহূর্তে এগুলো পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে।

নানগাহার প্রদেশের দার-আই-নুরের বাসিন্দা ইমরান মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ভূমিকম্পের পর থেকে তিনি তার পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে একটি প্লাস্টিকের মাদুরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমাদের এখন থাকার কোনো জায়গা নেই, এজন্য সবার কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।”

যাদের সামর্থ্য ছিল, তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। আর যাদের সেই সুযোগ হয়নি, তারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যা কিছু পেয়েছেন, তা দিয়েই অস্থায়ী আশ্রয় বানিয়েছেন। নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও সেখানকার বাসিন্দারা আফটার শকের আতঙ্কে আছেন। ৪২ বছর বয়সী চিকিৎসক ফেরেশতা বলেন, “প্রতিবার যখন আমি পা ফেলি, মনে হয় মাটি কেঁপে উঠছে। আমরা ঘরের ভেতরে থাকি না, বাগানেই ঘুমাই, সারাক্ষণ মনে হয় আরেকটা ভূমিকম্প হবে।”

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৪ হাজার তাঁবু বিতরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এএফপিকে জানিয়েছে, ৭০০টি তাঁবু এখনও বিতরণ করা সম্ভব হয়নি, কারণ অনেক এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না।


চায়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একই প্রেমিকের সঙ্গে দুই গৃহবধূর পলায়ন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৮:৫৫:৪০
চায়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে একই প্রেমিকের সঙ্গে দুই গৃহবধূর পলায়ন
নাজমা বেগম ও কুলচান বেগম। ছবি : সংগৃহীত

একই পরিবারের দুই গৃহবধূ এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। শ্বশুর-শাশুড়ি ও পরিবারের তিন মেয়েকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে দুজনেই মিলে পালিয়ে যান একই পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে। তবে স্বপ্নের ঘর বাঁধার আগেই পুলিশ তাদের আটক করেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছেন সেই প্রেমিক। স্থানীয় সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে হঠাৎ করেই ইয়াসিন শেখ এবং তার ভাই আনিসুর শেখের স্ত্রীরা নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা তাদের কোথাও খুঁজে না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তারা জানান, তাদের স্ত্রীরা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে যাননি, বরং প্রতিবেশী যুবক আরিফ মোল্লা তাদের প্রলুব্ধ করে নিয়ে গেছেন। আরিফের স্ত্রীও পুলিশের কাছে একই দাবি করেন।

পরপর দুটি পরিবার থেকে একই ধরনের অভিযোগ আসায় পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। তারা দুই গৃহবধূর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে। তবে পুলিশ সেখানে পৌঁছানোর আগেই প্রেমিক আরিফ মোল্লা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।

অবশেষে মঙ্গলবার রাতে ওই দুই গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বুধবার তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা স্বীকার করেন, একই প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর জন্যই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তারা জানান, বাড়ির লোকজন যেন তাদের আটকাতে না পারে, সেজন্য তারা চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন।

পুলিশের প্রশ্নের জবাবে বড় জা কুলচান বেগম অকপটে জানান, “হ্যাঁ, আমরা দুজন একই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিলাম।” পুলিশের জন্য এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা। কারণ সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় একাধিক প্রেমিকের নাম উঠে আসে। কিন্তু এখানে দুই নারীর লক্ষ্য একই ব্যক্তি হওয়ায় তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।

এই ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলছেন, একই পরিবারের দুই গৃহবধূ যে একই পুরুষের প্রেমে পড়বেন এবং এমন ভয়ংকর পরিকল্পনা করবেন, তা তারা কখনো ভাবেননি। অনেকেই বলছেন, এই ঘটনা সমাজ ও পারিবারিক সম্পর্কের ভাঙন কতটা গভীর হয়েছে, তা স্পষ্ট বোঝাচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই নারীকে আদালতে তোলা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে। একইসঙ্গে মূল অভিযুক্ত প্রেমিক আরিফ মোল্লাকে ধরতে সর্বাত্মক অভিযান চলছে।


সৌদি রাজতন্ত্রের অজানা অধ্যায়: ক্ষমতার জন্য বাবা ও ভাইদের ছাড় দিলেন না মোহাম্মদ বিন সালমান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৭:২৬:০৪
সৌদি রাজতন্ত্রের অজানা অধ্যায়: ক্ষমতার জন্য বাবা ও ভাইদের ছাড় দিলেন না মোহাম্মদ বিন সালমান
ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর সৌদি আরবের সিংহাসনে বসেন সালমান বিন আবদুল আজিজ। কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতার এই পালাবদল মোটেই সহজ ছিল না। এটি ছিল নাটকীয় সিদ্ধান্ত আর অপ্রত্যাশিত উত্থানের এক নতুন অধ্যায়।

শুরুতে বাদশাহ সালমান ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তার ৬৯ বছর বয়সী সৎভাই মুকরিন বিন আবদুল আজিজের নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু মাত্র তিন মাস পরেই তিনি হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত বদল করেন। মুকরিনকে সরিয়ে তার স্থানে নিয়ে আসেন নিজের ভাইপো ৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ বিন নায়েফকে। পাশাপাশি ২৯ বছরের ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।

প্রায় ৯ বছর আগে যখন একের পর এক এসব ঘটনা ঘটছিল, সে সময় মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম সৌদি আরবের রাজনীতিতে কেউ শোনেননি। তাঁর সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানতেনও না কেউ।

অন্যদিকে মোহাম্মদ বিন নায়েফের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল মার্কিন প্রশাসন। তিনি প্রতিরক্ষা বিষয়ে এফবিআইয়ের (যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো) কোর্স করেছিলেন। নিয়েছিলেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে সন্ত্রাস দমন কৌশলের প্রশিক্ষণও; কিন্তু ২০০৯ সালের আগস্টে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা চালানো হয়। ওই হামলার জন্য সে সময় দায়ী করা হয়েছিল আল-কায়েদাকে।

সৌদি বাদশাহর ‘দ্বাররক্ষক’

মোহাম্মদ বিন সালমান এমবিএস নামে বহুল পরিচিত। লেখক ডেভিড বি ওটাওয়ে তাঁর বইয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পর্কে লিখেছেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পরপরই তিনি (মোহাম্মদ বিন সালমান) বাদশাহর গেট কিপার (দ্বাররক্ষক) হওয়ার জন্য নিজের পদকে ব্যবহার করতে শুরু করেন।’ উদ্দেশ্য ছিল, বাবাকে নজরে রাখা।

বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্রুতই মোহাম্মদ বিন সালমান তাঁর বাবাকে পরিবার ও বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের থেকে আলাদা করে ফেলেন। এমনকি এ-ও বলা হয় যে বাদশাহকে তাঁর স্ত্রী, মানে এমবিএসের মায়ের সঙ্গেও দেখা করতে বাধা দেওয়া হয়।

লেখক বেন হাবার্ড তাঁর বই ‘দ্য রাইজ টু পাওয়ার, মোহাম্মদ বিন সালমান’-এ উল্লেখ করেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও তাঁর দুই রক্ষী বাদশাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য লিফটে উঠেছিলেন। দোতলায় লিফটের দরজা খুলতেই বাদশাহর সৈন্যরা এগিয়ে গিয়ে নায়েফের রক্ষীদের অস্ত্র ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।’

ডেভিড বি ওটাওয়ের বইয়ে দাবি করা হয়েছে, মোহাম্মদ বিন সালমান কার্যত তাঁর মা এবং দুই বোনকে গৃহবন্দী করেন এবং বাবাকে এ সম্পর্কে ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পেতে দেননি। বাদশাহ নিজের স্ত্রীর কথা জিজ্ঞাসা করলেই বলা হতো চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।

ইয়েমেন আক্রমণ

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দ্রুতই নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তাঁর তত্ত্বাবধানে সে বছরের ২৬ মার্চ (২০১৫ সাল) হুতি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানাকে মুক্ত করতে হামলা চালায় সৌদি বিমানবাহিনী।

মোহাম্মদ বিন সালমান ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলেন। ইংরেজি পড়ার চেয়ে ওয়াকিটকিতে প্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতেই বেশি আগ্রহ ছিল তাঁর।—রশিদ সেকাই, সৌদি যুবরাজের ইংরেজি শিক্ষক

ওটাওয়ে তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে সৌদি জনগণ ওই হামলার প্রশংসা করেছিলেন। ভেবেছিলেন, শেষ পর্যন্ত ইরানের সম্প্রসারণবাদী প্রবণতার বিরোধিতা করার সাহস দেখিয়েছে তাঁদের দেশ।’

‘কিন্তু কিছুদিন পর এ হামলা বাদশাহ, মোহাম্মদ বিন সালমান ও সৌদি আরবের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এটিকে মোহাম্মদ বিন সালমানের পররাষ্ট্রনীতির গাফিলতি হিসেবে বিবেচনা করা হতে থাকে।’

মোহাম্মদ বিন নায়েফকে আটক

কাছাকাছি সময়েই তৎকালীন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফকে অপসারণ করে ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স করার সিদ্ধান্ত নেন বাদশাহ সালমান।

পবিত্র রমজান মাসের শেষ দিকে ২০১৫ সালের ২০ জুন রাতে রাজপরিবারের একাধিক সদস্য পবিত্র মক্কায় জড়ো হন। সেই রাতে, রাজনৈতিক ও সুরক্ষাবিষয়ক কাউন্সিলের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, যার সভাপতিত্ব করার কথা ছিল মোহাম্মদ বিন নায়েফের; কিন্তু বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ আগেই তিনি একটি বার্তা পান। সেখানে বলা হয়েছিল, বাদশাহ সালমান তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান।

বলা হয়, সৌদি আরবে অন্তত ১০ হাজার প্রিন্স রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। তাঁদের সবাইকে সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। সর্বনিম্ন ভাতা ৮০০ ডলার এবং সর্বোচ্চ পৌনে ৩ লাখ ডলার। ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পরই এ ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেন মোহাম্মদ বিন সালমান।

তড়িঘড়ি হেলিকপ্টারে সওয়ার হয়ে বাদশাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য সাফা মহলে পৌঁছান বিন নায়েফ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই দেহরক্ষী।

লেখক বেন হাবার্ড তাঁর বই ‘দ্য রাইজ টু পাওয়ার, মোহাম্মদ বিন সালমান’-এ উল্লেখ করেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও তাঁর দুই রক্ষী বাদশাহর সঙ্গে দেখা করার জন্য লিফটে উঠেছিলেন। দোতলায় লিফটের দরজা খুলতেই বাদশাহর সৈন্যরা এগিয়ে গিয়ে নায়েফের রক্ষীদের অস্ত্র ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন।’

‘পাশের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় নায়েফকে। তিনি চলে যেতে উদ্যত হলে, বাধা দেওয়া হয় এবং ক্রাউন প্রিন্স পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে। কিন্তু তাঁদের কথা শুনতে নারাজ ছিলেন বিন নায়েফ।’

নায়েফের পদত্যাগ

ওই রাতেই বিন নায়েফকে গৃহবন্দী করা হয় এবং রয়্যাল কোর্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়্যাল কাউন্সিলের সদস্যদের ডেকে জানতে চান, তাঁরা মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ বানানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে একমত কি না।

কাউন্সিলের ৩৪ সদস্যের মধ্যে ৩১ জন সমর্থন জানান। তাঁদের ফোনকল রেকর্ড করা হয় এবং মোহাম্মদ বিন নায়েফকে জানানো হয়, তাঁর কতজন আত্মীয় বাদশাহর এ সিদ্ধান্তে সমর্থন করেছেন।

মোহাম্মদ বিন সালমান তখনো ক্রাউন প্রিন্স হননি। রিয়াদে একটি মূল্যবান জমির ওপর নজর পড়ে তাঁর বাবার; কিন্তু জমির মালিক সেটি বিক্রি করতে চাইছিলেন না। এ নিয়ে চাপ দিতে একজন বিচারকের কাছে যান মোহাম্মদ বিন সালমান। বিচারকও এ নিয়ে কথা বলতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তখন মোহাম্মদ বিন সালমান বিচারকের টেবিলে রিভলবারের একটি বুলেট রাখেন। ইঙ্গিত ছিল, বিচারক তাঁর কথা না মানলে হয়তো তাঁকে গুলি করা হবে।—রিচার্ড লেসি, সৌদি রাজপরিবারের ইতিহাস পর্যবেক্ষক

বেন হাবার্ড তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘বিন নায়েফ ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। কিন্তু সে রাতে তাঁকে ওষুধ দেওয়া হয়নি। ফলে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত পরদিন সকালে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করার জন্য তৈরি হয়ে যান।’ তাঁকে পাশের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে বাদশাহ সালমান ও তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ক্যামেরাসহ হাজির ছিলেন।

বিন নায়েফকে অভ্যর্থনা জানান বাদশাহ এবং তাঁর হাতে চুম্বন করেন। নায়েফ খুব নিচু স্বরে সালমানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। তাঁদের এই সাক্ষাতের ভিডিও সৌদি টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সে সময় বারবার সম্প্রচার করা হয়।

‘এরপর মোহাম্মদ বিন নায়েফ কক্ষ থেকে বেরোনোর পর অবাক হয়ে দেখেন যে তাঁর রক্ষীরা সেখানে নেই। জেদ্দায় নিজের প্রাসাদে পৌঁছানোর পর তাঁকে সেখানে গৃহবন্দী করে রাখা হয়।’

বিন নায়েফের নীরবতা

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রশ্নের জবাবে রয়্যাল কোর্টের একজন মুখপাত্র অবশ্য ওই রাত সম্পর্কে ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়েছিল রয়্যাল কাউন্সিল। রয়্যাল কোর্ট আরও জানায়, তাঁকে বরখাস্ত করার কারণগুলো গোপন রাখা হয়েছে এবং সেগুলো জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।

ঘটনার প্রায় এক মাস পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, মরফিন ও কোকেনে আসক্ত থাকার কারণে বিন নায়েফকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাদশাহ।

ওই বছরের শেষের দিকে বিন নায়েফের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাঁর প্রতি এমন আচরণ নিয়ে মোহাম্মদ বিন নায়েফ অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি।

বর্তমানে পরিস্থিতি এমন যে ১৯৮৫ সালের ৩১ আগস্ট জন্ম নেওয়া মোহাম্মদ বিন সালমানের পোস্টার সৌদি আরবের সর্বত্র দেখা যায়। তিনি সৌদি রাজপরিবারের অন্যতম যুবরাজ, যিনি বিদেশে পড়াশোনা করেননি। তিনি কখনোই সৌদি সেনাবাহিনী বা বিমান বাহিনীর সদস্য ছিলেন না। রিয়াদের রয়্যাল অ্যান্ড সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি।

মোহাম্মদ বিন সালমানের ইংরেজি শিক্ষক রশিদ সেকাই বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলেন। ইংরেজি পড়ার চেয়ে ওয়াকিটকিতে প্রাসাদের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতেই বেশি আগ্রহ ছিল তাঁর।’

স্নাতক হওয়ার পর ২০০৭ সালে সারা বিনতে মাশুরকে বিয়ে করেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এই যুগলের চারটি সন্তান রয়েছে।

পিয়ানোতে ধ্রুপদি সুর

মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তাঁকে নিজের বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।

বইয়ে সে প্রসঙ্গে বেন হাবার্ড লিখেছেন, পুরো সন্ধ্যাটাই কেরির সঙ্গে কথা বলে কাটান মোহাম্মদ বিন সালমান। সে সময় বিন সালমানের চোখ পড়ে সেখানে রাখা পিয়ানোর ওপর।

জন কেরি বিন সালমানের কাছ থেকে জানতে চান, ‘আপনি পিয়ানো বাজাতে জানেন? পিয়ানোতে ধ্রুপদি সুর বাজিয়ে তাক লাগিয়ে দেন মোহাম্মদ বিন সালমান।’

‘ঘরে উপস্থিত সবাই অবাক হয়েছিলেন। যেহেতু ‘‘ওয়াহাবি ঘরানার’’ মানুষেরা সংগীত অপছন্দ করে, ফলে জন কেরি আশা করেননি যে মোহাম্মদ বিন সালমান পিয়ানো বাজাবেন।’

বিচারকের টেবিলে বুলেট

শুরু থেকেই যুবরাজ বিন সালমানের ঝোঁক ছিল বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার দিকে।

সৌদি রাজপরিবারের ইতিহাস পর্যবেক্ষক রিচার্ড লেসি লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমান তখনো ক্রাউন প্রিন্স হননি। রিয়াদে একটি মূল্যবান জমির ওপর নজর পড়ে তাঁর বাবার। কিন্তু জমির মালিক সেটি বিক্রি করতে চাইছিলেন না।’

‘এ নিয়ে চাপ দিতে একজন বিচারকের কাছে যান মোহাম্মদ বিন সালমান। বিচারকও এ নিয়ে কথা বলতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তখন মোহাম্মদ বিন সালমান বিচারকের টেবিলে রিভলবারের একটি বুলেট রাখেন। ইঙ্গিত ছিল, বিচারক তাঁর কথা না মানলে হয়তো তাঁকে গুলি করা হবে।’

যুবরাজের এহেন আচরণ সম্পর্কে বাদশাহ আবদুল্লাহর কাছে অভিযোগ করেন বিচারক। এ খবর কখনো অস্বীকার করেননি সালমান। এরপর ২০১১ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহ যখন মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবাকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন, তখন শর্ত দিয়েছিলেন যে এমবিএস যেন কখনোই মন্ত্রণালয়ের ভবনে প্রবেশ না করে।

নারীদের গাড়ি চালানোর স্বাধীনতা

মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবা যখন সৌদি আরবের বাদশাহ হিসেবে দায়িত্ব নেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৯ বছর। শোনা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরেই আলঝেইমারে ভুগছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষমতার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেন মোহাম্মদ বিন সালমান।

সৌদি আরবের যুবক ও নারীদের মন জয় করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন বিন সালমান। তিনি ২০১৮ সালে নারীদের জন্য প্রচলিত ড্রেস কোড (পোশাকবিধি) শিথিল করে বলেছিলেন, প্রকাশ্যে নারীদের ‘আবায়া’ পরার দরকার নেই।

সেই বছরই নারীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা নিজেরাই কাজে বা কেনাকাটার জন্য গাড়ি চালিয়ে যেতে পারেন। এ জন্য সঙ্গে পুরুষ অভিভাবক রাখার প্রয়োজন নেই।

লেখক মার্ক থম্পসন তাঁর ‘বিয়িং ইয়ং, মেল অ্যান্ড সৌদি’ শীর্ষক বইয়ে লিখেছেন, ‘অর্থনৈতিক কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, নারীদের স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য নয়।’ তাঁর মতে, ‘নারীরা পুরুষের অনুমতি ছাড়াই যাতে কাজ করতে ও উপার্জন করা অর্থ ব্যয় করতে পারেন, সে কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয় এ পদক্ষেপ।’

‘শুরা’র সমাপ্তি

সৌদি আরববিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে ‘শুরা’ ও জ্যেষ্ঠ প্রিন্সদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঐতিহ্যে বিরাম টেনেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। ‘শুরা’ বলতে পরামর্শমূলক পরিষদকে বোঝায়। এর বদলে নিজেকে এক ও একমাত্র শাসক হিসেবে তুলে ধরেছেন তিনি।

নিজের সিদ্ধান্ত ও রাজনীতির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রতিবাদ বা সমালোচনা যে বিন সালমান বরদাস্ত করবেন না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

চেজ ফ্রিম্যান ১৯৯০-এর দশকের উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় সৌদি আরবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মতে, ‘সৌদি রাজপরিবারের ঐক্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হলো শুরার ধারণার প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা।’

বিলাসবহুল সামগ্রীর প্রতি আকর্ষণ

ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার আগেও দামি সামগ্রীর প্রতি আকর্ষণের জন্য পরিচিত ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি ৪৪০ ফুট লম্বা বিলাসবহুল ইয়ট কিনতে ৫০ কোটি ডলার খরচ করেছিলেন। এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে লেওনার্দো দা ভিঞ্চির বিখ্যাত চিত্রকর্ম কেনার জন্য ৪৫ কোটি ডলার খরচ করেন।

সমালোচনা এড়াতে বিন সালমান প্রথমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ওই বিখ্যাত চিত্রকর্ম আবুধাবির জাদুঘরে দিয়ে দেবেন; কিন্তু তেমনটা হয়নি। এর কিছুদিন পরই তাঁর বিলাসবহুল নৌযান ‘সেরিন’-এ দেখা যায় ওই চিত্রকর্ম।

একের পর এক গ্রেপ্তার, হারিরির পদত্যাগ

বলা হয়, সৌদি আরবে অন্তত ১০ হাজার প্রিন্স রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। তাঁদের সবাইকে সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। সর্বনিম্ন ভাতা ৮০০ ডলার এবং সর্বোচ্চ পৌনে ৩ লাখ ডলার।

ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পরই এ ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেন মোহাম্মদ বিন সালমান।

২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর মোহাম্মদ বিন সালমান সরকারি তহবিল তছরুপের অভিযোগে প্রিন্স, ব্যবসায়ী ও জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা মিলিয়ে ৩৮০ জনকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন।

বেন হাবার্ড লিখেছেন, ‘তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ১১ জন প্রিন্স ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী আদিল ফিকিয়া এবং অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আবদুল আজিজও ছিলেন।’

‘তাঁদের সবার মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং পাঁচ তারকা রিটজ-কার্লটন হোটেলে নিয়ে গিয়ে গৃহবন্দী করা হয়। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা অর্থ সরকারকে ফেরত দেওয়ার পর তাঁদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁরা মোট ১০০ কোটি ডলার জরিমানাও দেন।’

একই ভাবে সৌদি আরব সফরে যাওয়া লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরিকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে বিন সালমানের বিরুদ্ধে। সে সময় ওই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়।

বেন হাবার্ড লিখেছেন, ‘আল-হারিরি মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাঁকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর গাড়িবহরে থাকা ব্যক্তিদের বাইরে থাকতে বলা হয়। ওই কক্ষেই হারিরিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।’

‘আল-হারিরি লেবাননের পতাকার পাশে দাঁড়িয়ে পদত্যাগের ঘোষণা করেন এবং একটা বিবৃতি পাঠ করেন। সে বিবৃতি বিশ্বজুড়ে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছিল।’

আল-হারিরিকে বলতে শোনা যায়, তাঁর পদত্যাগ লেবাননকে আরও শক্তিশালী ও স্বাধীন করে তুলবে। এই বিবৃতি পাঠের সময় তিনি বেশ কয়েকবার থামেন এবং এমন একটা ইঙ্গিত দেন যে ওই বিবৃতি তিনি নিজে লেখেননি।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ‘হারিরি যদি পদত্যাগই করতে চাইতেন, তবে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেন পদত্যাগ করলেন?’

এর কয়েকদিন পর আল-হারিরি দেশে ফেরেন এবং তাঁর সেই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এই অদ্ভুত ঘটনার নেপথ্যের কাহিনি অবশ্য কখনোই জানা যায়নি।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০১৮ সালের মে মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সৌদি সরকার ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ২ হাজার ৩০৫ জনকে আটক করেছে, যাঁদের মধ্যে ২৫১ জন তিন বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন এবং তাঁদের কখনো বিচারকের সামনে হাজির করা হয়নি।

শুধু তা-ই নয়, নিউইয়র্কভিত্তিক ‘কমিটি ফর দ্য প্রটেকশন অব জার্নালিস্ট’ও তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সৌদি আরবে ২৬ জন সাংবাদিক বন্দী রয়েছেন। এ সংখ্যা চীন ও তুরস্কের পর বিশ্বে সর্বোচ্চ। আবার ২০১৯ সালে এক হাজার সৌদি নাগরিকের ওপর ভ্রমণ-নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

জামাল খাসোগি হত্যা মামলা

মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য সবচেয়ে বিব্রতকর ব্যাপার ছিল, যখন তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে গিয়ে এমবিএসের অন্যতম সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাসোগি খুন হন।

খাসোগি আরব নিউজ ও আল-ওয়াতানের মতো সংবাদপত্রের সম্পাদক ছিলেন। সব প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ বিন সালমান এক বছর ধরে ওই হত্যার দায় অস্বীকার করেন।

ডেভিড বি ওটাওয়ে লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ বিন সালমানের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর তত্ত্বাবধানে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তদন্ত শেষে সিআইএ এ সিদ্ধান্তে আসে যে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ স্বয়ং যুবরাজই দিয়েছিলেন।’

‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ) মোহাম্মদ বিন সালমানের একটা পুরোনো রেকর্ডিং খুঁজে পায়, যেখানে সৌদি আরবে না ফিরলে খাসোগিকে গুলি করার কথা বলেছিলেন তিনি।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উপস্থাপক নোরা ডোনেল যুবরাজকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন?’

জবাবে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছিলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি জঘন্য অপরাধ। কিন্তু সৌদি আরবের নেতা হিসেবে আমি এর সম্পূর্ণ দায় নিচ্ছি। বিশেষত, যখন অপরাধীরা সৌদি সরকারের হয়ে কাজ করছিল।’

এরপর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সৌদি আরবের এক আদালত সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে ২০২০ সালের ২০ মে প্রয়াত সাংবাদিকের পুত্র সালেহ খাসোগি তাঁর বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেন।


মহাকাশে ইসরায়েলের নতুন নজরদারি: উৎক্ষেপণ হলো ‘ওফেক-১৯’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৬:৪৯:১০
মহাকাশে ইসরায়েলের নতুন নজরদারি: উৎক্ষেপণ হলো ‘ওফেক-১৯’
ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েল সফলভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে তাদের অত্যাধুনিক সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট ‘ওফেক-১৯’। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় ইসরায়েলের পামলাচিম বিমানঘাঁটি থেকে ‘শাভিত’ রকেটের মাধ্যমে স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে পাঠানো হয়।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পরপরই স্যাটেলাইটটি সফলভাবে নির্ধারিত কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং তথ্য প্রেরণ শুরু করে। একাধিক প্রাথমিক পরীক্ষাও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই সাফল্যকে শুধু প্রযুক্তিগত মাইলফলক নয়, বরং শত্রুদের জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা বলেও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা সব সময়, সব পরিস্থিতিতে আমাদের শত্রুদের নজরদারিতে রাখছি।” কাটজ আরও জানান, এই সক্ষমতা আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার পথ খুলে দিতে পারে।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের দৃশ্য রাজধানী তেলআবিবসহ আশপাশের অঞ্চলে সাময়িক আতঙ্ক তৈরি করে। অনেকে এটিকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেবে ভুল করেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেক পথচারী আকাশে ছুটে চলা রকেটকে বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছেন।

স্যাটেলাইটের সক্ষমতা ও ব্যবহার

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ওফেক-১৯’ একটি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট, যা দিন-রাত যেকোনো সময় উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি ধারণ করতে সক্ষম। এটি ৫০ সেন্টিমিটারেরও ছোট বস্তু শনাক্ত করার ক্ষমতা রাখে। স্যাটেলাইটটি পূর্ণ কার্যক্রমে গেলে এর দায়িত্ব নেবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার বিশেষ ইউনিট ৯৯০০, যারা মূলত চিত্রভিত্তিক গোয়েন্দা কাজে বিশেষজ্ঞ।

এই উৎক্ষেপণ ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ কর্মসূচির অংশ, যার নেতৃত্বে রয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী। এর আগের বছর মার্চে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ‘ওফেক-১৩’। ‘ওফেক-১৯’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ইসরায়েল এয়ারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই)-এর বিভিন্ন বিভাগ।


চীনের সামরিক মহড়া: প্রকাশ্যে এলো নতুন পারমাণবিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৪:১৯:২৪
চীনের সামরিক মহড়া: প্রকাশ্যে এলো নতুন পারমাণবিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি
ছবি : এএফপি

বিশ্বনেতাদের সামনে নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করল চীন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সামনে আয়োজিত এক বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে পারমাণবিক আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম), নতুন হাইপারসনিক অস্ত্র এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন উন্মোচন করা হয়েছে। এই প্রদর্শনীতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনসহ দুই ডজনের বেশি বিশ্বনেতা উপস্থিত ছিলেন।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রদর্শনীতে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে ডিএফ-৫সি, ডিএফ-২৬ডি এবং ডিএফ-৬১-এর মতো নতুন প্রজন্মের আইসিবিএমগুলো। গবেষক আলেকজান্ডার নিলের মতে, চীন তার ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীকে কৌশলগত প্রতিরোধের মূল অংশ হিসেবে গড়ে তুলছে, যার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে পাল্টা ভারসাম্য তৈরি করা।

মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক নৌবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের। তাদের রয়েছে বিমানবাহী রণতরী ও ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ। এই দিক থেকে চীন এখনও অনেক পিছিয়ে। তবে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে তারা উন্মোচন করেছে ‘গুয়াম কিলার’ নামে পরিচিত আইসিবিএম ডিএফ–৬১। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নৌ-ঘাঁটি গুয়ামে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম।

এই অস্ত্র উন্মোচনের পর থেকেই পশ্চিমা প্রতিরক্ষা মহলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ও স্ট্রাইক গ্রুপগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যেকোনো চীনা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে মার্কিন জাহাজগুলো এখন অনেকটা ‘সিটিং ডাকস’ বা সহজ শিকারে পরিণত হতে পারে।

‘সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি’ এবং হাইপারসনিক অস্ত্র

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেইজিং একদিকে যেমন বিশ্বাসযোগ্য প্রতিরোধ তৈরি করতে চাইছে, অন্যদিকে ‘সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি’ বা প্রথম আক্রমণের পরও শত্রুর বিরুদ্ধে পাল্টা পারমাণবিক হামলা চালানোর ক্ষমতাও গড়ে তুলছে।

এছাড়াও, চীন প্রথমবারের মতো হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল ওয়াইজে-১৭ ও হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ওয়াইজে-১৯ প্রদর্শন করেছে। উন্মোচন করা হয়েছে পানির নিচে থেকে আক্রমণ করতে সক্ষম বড় আকারের স্বয়ংক্রিয় ড্রোন এজেএক্স০০২, যা যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। একইসঙ্গে গোয়েন্দা কাজে ও মাইন খুঁজতে সক্ষম রোবটিক ‘নেকড়ে ড্রোন’-ও এই কুচকাওয়াজে দেখানো হয়েছে।


বেইজিংয়ে একসাথে শি–পুতিন–কিম এর ঐতিহাসিক মুহূর্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১২:৩৬:০৮
বেইজিংয়ে একসাথে শি–পুতিন–কিম এর ঐতিহাসিক মুহূর্ত
ছবিঃ সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আয়োজিত দেশটির সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজ বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক মনোযোগ কাড়ে। এই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে একসাথে উপস্থিত হন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং আয়োজক দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তারা তিনজন একসাথে লাল গালিচায় পা রাখেন এবং পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলান। বিশ্লেষকদের মতে, এই দৃশ্য শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আচার নয়, বরং বর্তমান বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্যে গভীর প্রতীকী তাৎপর্য বহন করে।

চীনের এই আয়োজনকে অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক শি জিনপিংয়ের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে দেখছেন। বিশেষত কিম জং–উনের উপস্থিতি এ আয়োজনকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। কারণ গত ছয় বছরে এটি তার দ্বিতীয় বিদেশ সফর, এবং প্রথমবার তিনি শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একই মঞ্চে হাজির হলেন। কিমের এই পদক্ষেপকে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ঐক্য জোরদার এবং পশ্চিমা প্রভাবের পাল্টা বার্তা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

চীনের স্টেট কাউন্সিল জানিয়েছে, কুচকাওয়াজে মোট ২৬ জন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট লুয়ং কুয়ং, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মনানগাগওয়া, সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুচিচ, কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেলসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতা। এছাড়া, মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন অং হ্লাইং, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোসহ আরও অনেকে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বৈচিত্র্যময় অতিথি তালিকা শি জিনপিংয়ের কূটনৈতিক নেটওয়ার্কের শক্তি ও প্রভাবকে প্রতিফলিত করে।

কুচকাওয়াজের উদ্বোধনী ভাষণে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, “অপ্রতিরোধ্য চীনকে কোনোভাবেই ভয় দেখানো যাবে না।” তার এই দৃঢ় উচ্চারণ চীনের আত্মবিশ্বাসী সামরিক অবস্থান ও বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার সংকল্পকে সামনে আনে। একইসঙ্গে এটি দেশের জনগণের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী বার্তা হিসেবে কাজ করেছে।

এই সামরিক কুচকাওয়াজে চীন প্রথমবারের মতো কিছু আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি প্রদর্শন করে। এর মধ্যে ছিল লেজার অস্ত্র, পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পানির নিচে পরিচালিত বিশাল ড্রোন। এসব নতুন অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে চীন কেবল সামরিক আধুনিকীকরণে তাদের সাফল্য প্রদর্শন করেনি, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিপক্ষ শক্তিগুলোর জন্য এক প্রকার কৌশলগত সতর্কবার্তাও পাঠিয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুচকাওয়াজ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি চীনা জনগণ ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রসিকতার সুরে লেখেন, “ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং–উনকে সঙ্গে নিয়ে আপনি যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তখন তাদেরকেও আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা পৌঁছে দেবেন।” ট্রাম্পের এই মন্তব্য পশ্চিমা বিশ্বের উদ্বেগ ও শঙ্কাকে প্রতিফলিত করে, যেখানে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

-শরিফুল


পাকিস্তানে একদিনে তিন হামলা: নিহত অন্তত ২৫

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১১:১৬:০৯
পাকিস্তানে একদিনে তিন হামলা: নিহত অন্তত ২৫
ছবিঃ সংগৃহীত

পাকিস্তানে আবারও ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দেশটির বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একাধিক হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু কোয়েটায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১৪ জন।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে জানা যায়, কোয়েটার একটি স্টেডিয়ামের পার্কিং এলাকায় বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির (বিএনপি) সমাবেশ চলাকালে আত্মঘাতী বোমারু নিজেকে বিস্ফোরণ ঘটায়। সমাবেশে শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এতে বহু মানুষ আহত হন, যাদের মধ্যে অন্তত সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে দলের প্রধান আখতার মেঙ্গল সমাবেশ শেষে নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হন।

বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ও প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ প্রদেশ হলেও দারিদ্র্য, বৈষম্য ও অবকাঠামোগত পশ্চাদপদতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভে ফুঁসছে। এই প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও সহিংসতা বহু বছর ধরে চলমান। বিশেষ করে ২০২৪ সালে সহিংসতায় প্রাণ হারান ৭৮২ জন। চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেলুচিস্তানে বড় অবকাঠামো প্রকল্প হলেও স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, এর সুফল তারা ভোগ করতে পারছেন না, বরং বহিরাগতরা লাভবান হচ্ছেন।

একই দিনে ইরান সীমান্তবর্তী এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর একটি কনভয়ের ওপর বোমা হামলায় আরও পাঁচ জন নিহত হন এবং চারজন আহত হন। অন্যদিকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু শহরে আধাসামরিক বাহিনীর ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণের পরপরই আরও পাঁচজন হামলাকারী ঘাঁটির ভেতরে ঢুকে পড়ে। টানা ১২ ঘণ্টার বন্দুকযুদ্ধ শেষে ছয় হামলাকারী নিহত হয়, তবে প্রাণ হারান ছয় সেনাসদস্যও। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইত্তেহাদ-উল-মুজাহিদিন পাকিস্তান নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী।

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ৪৩০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। দেশজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশই নাজুক হয়ে উঠছে, আর রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি এই সহিংসতা পাকিস্তানকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


আমি বেঁচে আছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ০৮:১৪:৫৫
আমি বেঁচে আছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৃত্যুর গুজব সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে এক্স (সাবেক টুইটার)–এর ট্রেন্ডিং তালিকায় এ গুজব আলোচিত ছিল।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এক সাংবাদিক এ বিষয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, তাঁর মৃত্যু নিয়ে ট্রেন্ড তৈরি হয়েছিল তা তিনি জানতেনই না। তবে কিছু সংবাদমাধ্যম এ গুজব প্রচার করেছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি তাদের সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের মন্তব্যে স্পষ্ট ছিল—এই ধরনের গুজবই মূলত গণমাধ্যমের গ্রহণযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সাংবাদিক জানতে চান, “সপ্তাহের শেষ দিকে আপনার মৃত্যু নিয়ে একটি ভাইরাল ট্রেন্ড শুরু হয়। আপনি কি দেখেছেন যে, মানুষ কয়েকদিন ধরে আপনাকে না দেখে ধরে নিয়েছে আপনি মারা গেছেন? শনিবার সকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে অন্তত ১৩ লাখ ব্যবহারকারী আলোচনা করেছেন।”

প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প অবাক হয়ে বলেন, “সত্যি বলছেন? আমি তো একদমই খেয়াল করিনি। বিষয়টা আসলেই পাগলামির মতো। গত সপ্তাহে আমি একাধিক সংবাদ সম্মেলন করেছি এবং সেগুলো খুবই সফল হয়েছে। দুই দিন কোনো সংবাদ সম্মেলন না করতেই গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে, নিশ্চয়ই আমার কিছু হয়েছে।”

এসময় হাসতে হাসতে তিনি বাইডেনকে তুলনা করে বলেন, “বাইডেন তো মাসের পর মাস জনসম্মুখে দেখা দিতেন না। অথচ কেউ কখনও বলেনি যে তাঁর কিছু একটা হয়েছে। অথচ সবাই জানত তখন তিনি সুস্থ ছিলেন।”

নিজের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের উদাহরণ টেনে ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রায় দেড় ঘণ্টার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছি, আর সেটি হয়েছে আপনাদেরই এক প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেলে। আমি বেশ কয়েকটি শোতে অংশ নিয়েছি এবং ট্রুথ সোশ্যালে নিয়মিত পোস্ট দিয়েছি। সেগুলো ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সপ্তাহজুড়ে আমি নানা কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলাম। এমনকি পোটোম্যাক নদীর পাশের আমার ক্লাবে কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করতেও গিয়েছিলাম।”

ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত মন্তব্য করেন, “আমার মৃত্যুর খবর পুরোটাই ভুয়া। এতটাই ভুয়া যে, এ কারণেই সংবাদমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্রমেই নিচে নামছে।”


ভয়াবহতার রেশ কাটতে না কাটতেই আফগানিস্তানে ফের ভূমিকম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ২১:৫৭:২১
ভয়াবহতার রেশ কাটতে না কাটতেই আফগানিস্তানে ফের ভূমিকম্প
ছবি : সংগৃহীত

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৫.২ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল জালালাবাদের উত্তর-পূর্বে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। এই ভূমিকম্পের কম্পন পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে।

পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ অবশ্য তাদের হিসাবে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫.৪ বলে জানিয়েছে।

এর আগে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানে আঘাত হানা ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা হুহু করে বেড়ে চলেছে। তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমআল জাজিরা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪১১ জনে, এবং আহত হয়েছেন তিন হাজার ১২৪ জন।

জবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও জানান, কুনার প্রদেশে ৫ হাজার ৪০০টিরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে গাজীবাদ গ্রামটি প্রায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এই গ্রামের বাসিন্দা রাব্বানি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তিনি তার বাবা-মা, স্ত্রী এবং চার সন্তানসহ পরিবারের সাতজন সদস্যকে হারিয়েছেন। তিনি জানান, এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন এবং তাদের কাছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কোনো উপায় নেই।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, আফগানিস্তানে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এখন বড় ঝুঁকির মুখে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩৯ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি গম চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে প্রায় ৩ লাখ ৪৯ হাজার টন প্রধান ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে। এছাড়া, পশুপালন খাতও হুমকির সম্মুখীন, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে ১.৩৮ মিলিয়ন পশু রয়েছে।

এদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৬ মাত্রার এই ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদের উত্তর-পূর্বে ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং গভীরতা ছিল ৮ কিলোমিটার।

পাঠকের মতামত: