৩৬ দিনের গোপন ইতিহাস সামনে আনলো আল জাজিরা

আল জাজিরার প্রতিবেদন: শিক্ষার্থী আন্দোলন দমনে 'প্রাণঘাতী নির্দেশ'— দাবি অস্বীকার আওয়ামী লীগের

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী ইউনিট একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে—বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জুলাইয়ে শিক্ষার্থী আন্দোলন দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের নির্দেশ দেন।

‘হাসিনা—জুলাইয়ের ৩৬ দিন’ শীর্ষক এই প্রামাণ্যচিত্রে কয়েকটি ফোনালাপ ও গোপন নথি উপস্থাপন করে দাবি করা হয়, ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনীকে ‘যেখানেই পাবে, গুলি করবে’ এমন নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে বলেন, "আমি খোলা আদেশ দিয়েছি। এখন তারা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানেই পাবে গুলি চালাবে।"

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিন সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন নিহত, ২৫ হাজারের বেশি আহত হন এবং নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ৩০ লাখ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। হেলিকপ্টার থেকেও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়, যা একজন চিকিৎসকও নিশ্চিত করেছেন।

আল জাজিরা আরও দাবি করে, ছাত্র আবু সাইয়েদ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ধামাচাপা দিতে ভয়ভীতি ও ঘুষ প্রয়োগ করেছে ক্ষমতাসীন সরকার। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী সালমান এফ রহমান পাঁচবার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে সরকার সহিংসতার ছবি ও ভিডিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চেয়েছে। এসব নথি ও রেকর্ড গোপনে সংগ্রহ করেছে আল জাজিরা ইনভেস্টিগেশনস।

তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা কখনোই প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের কোনো নির্দেশ দেননি। ১৮ জুলাইয়ের ফোনালাপের সত্যতাও অস্বীকার করেছে দলটি। পাশাপাশি আবু সাইয়েদের পরিবারের কোনো ভীতিকর অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। তাদের দাবি, আন্দোলনকারীদের সহিংস তৎপরতার কারণে ইন্টারনেট সংযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল।

/আশিক