সাপ্তাহিক শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ

DSE তে সপ্তাহজুড়ে সূচকের উর্ধ্বমুখী ধারা, SME-তে বিপরীত স্রোত

শেয়ারবাজার ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২০ ০০:৫৯:২১
DSE তে সপ্তাহজুড়ে সূচকের উর্ধ্বমুখী ধারা, SME-তে বিপরীত স্রোত

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর সর্বশেষ সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের শেয়ারবাজারে গত সপ্তাহে একটি মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে, তবে সামগ্রিক চিত্র ছিল ইতিবাচক। ডিএসইএক্স সূচক ১.২৭% বা ৬৪.৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১৩২.৪৮-এ, যা বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। ডিএস৩০ এবং ডিএসইএস সূচক যথাক্রমে ১.৪৭% ও ১.৭১% বেড়ে বাজারের শীর্ষ শেয়ারে শক্তিশালী কার্যক্রমকে নির্দেশ করে। তবে এসএমই সূচকে ২.২৫% হ্রাস ঘটেছে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারগুলোর দুর্বল পারফরমেন্স প্রতিফলিত করে।

মোট লেনদেনের পরিমাণ ৩৪,০৮১.২৯ মিলিয়ন টাকা, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৩৪% বেশি। প্রতিদিনের গড় লেনদেন ৬,৮১৬.২৬ মিলিয়ন টাকায় উন্নীত হয়েছে, যেখানে মার্কিন ডলারে তা ৫৬.১৯ মিলিয়ন। বাজার মূলধনও ১.৫৯% বেড়ে ৬.৮৭ ট্রিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে গড় লেনদেনের ভলিউম ৭.১৬% কমে এসেছে, যা বিনিয়োগকারীদের টেকসই আগ্রহের অভাবকে ইঙ্গিত করে।

সেক্টরভিত্তিক বিশ্লেষণে, ব্যাংক ও সিমেন্ট খাতে উল্লেখযোগ্যভাবে লেনদেন হ্রাস পেয়েছে (যথাক্রমে ২৩.৭১% ও ৩৮.৬৩%), যা এই খাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট বোঝায়। অপরদিকে, জুট, ট্যানারি, টেলিকম, ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং এবং জেনারেল ইন্স্যুরেন্স খাতে উল্লিখিত হারে লেনদেন বেড়েছে। বিশেষ করে জুট ও ট্যানারি খাতে ৫০% এর বেশি প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

সপ্তাহের সেরা ১০ শেয়ার এর মধ্যে ছিল APEXSPINN (২৩.৮৯%), MONOSPOOL (২০.৭৯%), এবং RAHIMAFOOD (২০.২৯%)। অন্যদিকে, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় ছিল SEMLLECMF (-১১.৫৪%), SEAPEARL (-৮.৮৫%) এবং EIL (-৮.৫৬%)। এই হ্রাসগুলো বাজারে কিছু কোম্পানির মৌলিক দুর্বলতা কিংবা বিনিয়োগকারীদের মুনাফা গ্রহণ নীতির প্রতিফলন হতে পারে।

সপ্তাহের শীর্ষ লেনদেনকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে BRACBANK, SEAPEARL, এবং KBPPWBIL প্রাধান্য পেয়েছে। ব্লক মার্কেটেও BANKASIA ও MLDYEING উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শেয়ার লেনদেন করেছে। এই প্রবণতা থেকে বোঝা যায় যে কিছু নির্দিষ্ট কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

সবশেষে, বাজারে অগ্রগতি ও পতনের অনুপাত (ADR) ছিল ৩.৬৩, যা একটি শক্তিশালী বাজার মুভমেন্টের ইঙ্গিত দেয়। ২৯০টি শেয়ার বেড়েছে, ৮০টি কমেছে এবং ২৪টি অপরিবর্তিত ছিল। ডলার রেটের সামান্য হ্রাস (১২১.৮৫ থেকে ১২১.৩০) বিনিয়োগ প্রবণতায় সীমিত প্রভাব ফেলেছে।

সার্বিকভাবে, বাজারটি একটি সতর্ক আশাবাদের ধারা বজায় রেখেছে। বিভিন্ন খাতে বৈচিত্র্যপূর্ণ কার্যক্রম ও মিশ্র প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও সামগ্রিক সূচক ও বাজার মূলধনের প্রবৃদ্ধি শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা এবং সম্ভাবনাকে নির্দেশ করে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এই সময়টি নতুন করে পোর্টফোলিও বিবেচনা এবং মৌলিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ