লাল চাঁদ সোহাগের হত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিক্ষোভ

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যেখানে লাল চাঁদ সোহাগ নামের একজন ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পাথর ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এই ভয়াবহ ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানী এবং এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে একই সঙ্গে এবং পৃথক সময়ে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাব)।
পুসাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিক্ষোভ কর্মসূচি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসের কাছাকাছি এবং রাজধানীর ব্যস্ত এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে শিক্ষার্থীরা নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে নাগরিক নিরাপত্তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাবেন। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবেন যেন দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
বিক্ষোভের সময়সূচি অনুযায়ী ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে তাঁদের কর্মসূচি শুরু করবেন। রামপুরা ব্রিজ, বসুন্ধরা গেট, উত্তরা বিএনএস ও আশুলিয়ার খাগান এলাকায় দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে একত্রিত হবেন। সাউথইস্ট, উত্তরা ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুপুর ১টায় বিক্ষোভে অংশ নেবেন। মিরপুর-১০ এলাকায় বিকেল ৪টায় বিক্ষোভের মাধ্যমে দিনটি শেষ হবে।
রাজধানীর বাইরে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে বিকেল ৩টায় এবং সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সন্ধ্যা ৬টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে, যেখানে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা লাল চাঁদ সোহাগের হত্যার নিন্দা জানাবে এবং সমাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়নের দাবিতে শক্তভাবে আওয়াজ তুলবে।
শিক্ষার্থীরা মনে করেন, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপ না নিলে এরকম নৃশংস ঘটনা সামনে আসতে থাকবে। তারা সরকারের কাছে দাবি করছেন, যেন জনসাধারণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় এবং এরকম নৃশংসতা রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কড়া নজরদারি চালায়।
রাকসু নির্বাচন: ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কালির দাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে ভোট জালিয়াতি এড়ানোর জন্য ভোটারদের হাতে দেওয়া অমোচনীয় কালির দাগ ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) অন্তত দশটি কেন্দ্রে ঘুরে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
ঘষতেই অস্পষ্ট হয়ে গেল দাগ
সরেজমিনে দেখা যায়, শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের নারী বিষয়ক সম্পাদক সাইয়েদা হাফসা ভোট প্রদান করে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে হাতে দেওয়া অমোচনীয় কালির দাগে ঘষা দেন। ঘষা দিতেই তার হাতের দাগ অস্পষ্ট হয়ে যায়। শুধু তার নয়, এমন পরিস্থিতি ডিনস কমপ্লেক্স কেন্দ্র, শহিদুল্লাহ কেন্দ্র, চতুর্থ বিজ্ঞান ভবন কেন্দ্রসহ প্রায় সব কেন্দ্রে দেখা গেছে।
ভোটারের উদ্বেগ: বিজয় ২৪ হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়া মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমরা ভোট দিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র থেকে বের হয়েই দেখি হাতের কালির দাগ উঠে যাচ্ছে। জালিয়াতি এড়াতে বিষয়টির দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।”
সাইয়েদা হাফসার মন্তব্য: সাইয়েদা হাফসা বলেন, “এটা তো মুছে যাওয়া উচিত হয়নি। আমরা দ্রুত বিষয়টির সমাধান চাই।”
রিটার্নিং কর্মকর্তার আশ্বাস
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান বলেন, “আমরা দেশের বাজারের সর্বোচ্চ দামের কালির কলম কিনেছি। এরপরও যদি উঠে যায়, তবুও সমস্যা হবে না।” তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা দেখে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট নেওয়া হচ্ছে। নেকাব ব্যবহার করা নারী শিক্ষার্থীদের জন্যও আলাদা চেকিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এবারের রাকসুতে ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার ভোট দেবেন। নির্বাচনে ৮৬০ জন প্রার্থী এবং সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ৫ পদে ৫৮ জন প্রার্থী লড়ছেন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোট বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন শুরু, উৎসবে মেতেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস, যেখানে দল-মত ভুলে সবাই মেতেছে গান-বাজনা ও মেহেদি উৎসবে।
উৎসবমুখর ক্যাম্পাস
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পাস কিছুটা ফাঁকা থাকলেও বিকেল হতে হতে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা একদিকে গানবাজনায় মেতে ওঠেন, অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীরা মেতেছেন মেহেদি উৎসবে। দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী কাব্য কুন্ডু বলেন, “ক্যাম্পাসে আছি প্রায় ৪ বছর। কিন্তু কখনো ক্যাম্পাসে এমন উৎসবমুখর পরিবেশ চোখে পড়েনি। রাকসুর কারণে সবাই দলমত ভুলে গিয়ে একসাথে আনন্দ করছে। এটাই সবচেয়ে ভালো লাগছে।”
স্বতন্ত্র নারীবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী নিশা আক্তার বলেন, “শিক্ষার্থী ভাই বোনেরা কাল ভোট দিয়ে যোগ্য লোকদের নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।”
প্রার্থী ও প্যানেলের চিত্র
রাকসুর ২৩টি পদের বিপরীতে ২৪৭ জন এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে (জিএস) ১৩ জন এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ নির্বাচনে মোট ১১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে আলোচিত ৮টি প্যানেল হলো:
ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’
ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’
ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃত্বে গঠিত ‘রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ’
সাবেক সমন্বয়কদের নেতৃত্বে ‘আধিপত্যবাদবিরোধী ঐক্য’
বাম জোটের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’
ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) ঘোষিত ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’
সাবেক আরেক নারী সমন্বয়কের নেত্বতে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মনোনীত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’।
৪৪ বছর পর চাকসু’তে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি (সহ-সভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সহ মোট ২৪টি পদে বিজয়ী হয়েছে। প্রায় এক দশক ক্যাম্পাসে নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শিবির আবারও প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফিরে আসে এবং এই নির্বাচনে বিশাল জয় পেল।
নির্বাচনের ফলাফল
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। তিনি জানান, নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভিপি (সহ-সভাপতি) পদে: ছাত্রশিবির সমর্থিত মো. ইব্রাহিম হোসেন (ইতিহাস বিভাগের এমফিল শিক্ষার্থী) ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।
জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে: ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব (ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী)। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
মোট পদ: চাকসুর এবারের নির্বাচনে মোট ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি বিজয় তুলে নেয় শিবির সমর্থিত প্যানেল।
ছাত্রদলের একমাত্র জয়
ছাত্রদলের একমাত্র সাফল্য এসেছে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে। এজিএস পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এছাড়া সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছেন তামান্না মাহবুব নামে এক ছাত্রী।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র সাতবার চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিবিরের সর্বশেষ বিজয় ছিল ১৯৮১ সালে। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনের পর দীর্ঘ তিন দশক চাকসু নির্বাচন বন্ধ ছিল।
কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
পবিত্র কোরআন অবমাননা করায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অপূর্ব পাল নামের এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ মানসুর হাশিমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
ঘটনার বিবরণ ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার অপূর্ব পাল নামে একজন শিক্ষার্থীকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পবিত্র কোরআন অবমাননারত অবস্থায় প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখতে পান। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বিভাগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বহিষ্কার ও মামলা: এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শৃঙ্খলা কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গ্রেপ্তার: ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।
শিক্ষার্থীর পরিচয়: অপূর্ব নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে এর আগে তিনি বিভাগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধৈর্যের প্রশংসা করে বলেছে, তারা সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহাবস্থানের পরিবেশ প্রশংসনীয়ভাবে রক্ষা করেছেন।
নীলক্ষেতে ডাকসুর ব্যালট ছাপানোর কথা স্বীকার করলেন উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যালট পেপার রাজধানীর নীলক্ষেতে ছাপানো হয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন, ব্যালট ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা নির্বাচনের ফলকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করেনি।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নীলক্ষেতে ছাপানোর কারণ
উপাচার্য জানান, একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ভোটার ও প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় মূল ভেন্ডরের অনুমতিতে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে একই টেন্ডারের আওতায় কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এই সহযোগী প্রতিষ্ঠান নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপালেও বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি। সংশ্লিষ্ট ভেন্ডর এটিকে ‘ব্যস্ততার কারণে ভুলে যাওয়ার’ কথা বলে স্বীকার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া ব্যাখ্যায় সহযোগী প্রতিষ্ঠান জানায়, নীলক্ষেতে ২২ রিম কাগজ ব্যবহার করে মোট ৮৮ হাজার ব্যালট ছাপা হয়। এর মধ্যে প্রিন্টিং, কাটিং ও ওএমআর প্রি-স্ক্যানসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে ৮৬ হাজার ২৪৩টি ব্যালট চূড়ান্তভাবে সিলগালা করে সরবরাহ করা হয়। অতিরিক্ত ব্যালট প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ধ্বংস করা হয়।
নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার দাবি
উপাচার্য দাবি করেন, ব্যালট প্রস্তুতের পুরো প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়েছে এবং সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যালট ছাপা শেষ হওয়ার পর তা নির্দিষ্ট পরিমাপে কাটিং, সুরক্ষা কোড আরোপ, ওএমআর স্ক্যান, প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার সই ও সিলসহ কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তার সই যুক্ত না হলে, সেই ব্যালট ভোটগ্রহণের জন্য উপযুক্ত হয় না।
তিনি আরও জানান, নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। মোট ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪টি ব্যালট প্রস্তুত করা হলেও, ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন এবং ব্যবহার হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬টি ব্যালট। অবশিষ্ট রয়েছে ৬০ হাজার ৩১৮টি।
নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন প্যানেল ব্যালট ছাপানোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে উপাচার্য বলেন, কেউ যদি সুনির্দিষ্ট সময় বা ঘটনার ভিত্তিতে সিসিটিভি ফুটেজ বা ভোটারদের স্বাক্ষরিত তালিকা দেখতে চান, তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে তা দেখার সুযোগ থাকবে।
ডাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ আনলেন তিন ভিপি প্রার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে একাধিক ‘অসঙ্গতি’ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন তা নিয়ে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের এবং স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যের উমামা ফাতেমাসহ একাধিক প্রার্থী।
মঙ্গলবার তারা উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর গাউসুল আজম মার্কেটের একটি ছাপাখানায় ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও প্রশাসন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।
এছাড়া নির্বাচনে যে ভোট টার্নআউট দেখানো হয়েছে, তা বাস্তবে মাঠপর্যায়ে দেখা যায়নি বলে দাবি করেন তারা। এ জন্য ভোটারদের স্বাক্ষর তালিকা প্রকাশের দাবি জানান প্রার্থীরা।
উমামা ফাতেমা বলেন, “ভোটারের তালিকা আগেও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্বাক্ষর রয়েছে। কে কাকে ভোট দিয়েছেন, তা উল্লেখ নেই। সুতরাং এখানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু প্রশাসন তালিকা প্রকাশে অনীহা দেখাচ্ছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিশেষ করে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঘোষিত ভোট টার্নআউট বাস্তবের সঙ্গে মেলে না।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কাদের বলেন, “গাউসুল আজম মার্কেটে ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গেলেও প্রশাসন বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। ভোট কাস্টিং তালিকা প্রকাশেও তারা গড়িমসি করছে, যা আমাদের সন্দেহ বাড়িয়ে দিচ্ছে।”
আবিদুল ইসলাম খান বলেন, “নির্বাচনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এসব কনসার্ন জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানভীর বারী হামিম, স্বতন্ত্র প্যানেলের জিএস প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী এবং ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী শেখ তানভীর আল হাদী মায়েদ প্রমুখ।
উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ।
চাকসু ও রাকসু নির্বাচনে নতুন সময়সূচি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের তারিখ পেছাল। এখন নির্বাচন ১২ অক্টোবরের পরিবর্তে ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
চাকসু নির্বাচনের নতুন তারিখ ও প্রার্থী সংখ্যা
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিব অধ্যাপক একেএম ফরিফুল হক সিদ্দিকী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, চাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২২ জন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১২ জন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১৫ জন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক ১৮ জন, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক ১৬ জন, দপ্তর সম্পাদক ১৮ জন, সহ-দপ্তর সম্পাদক ১৪ জন প্রার্থিতা করবেন।
এছাড়া ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত) ১২ জন, সহ-ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত) ১১ জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ১১ জন, গবেষণা ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ১৩ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ২০ জন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ১৭ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ১৭ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ১৬ জন, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ২০ জন সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকার ১১ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক ২১ জন এবং নির্বাহী সদস্য ৫টি পদের বিপরীতে ৮৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রাকসু নির্বাচনও পিছিয়েছে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে
এর আগে, রাকসু নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাকসু নির্বাচন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাকসু নির্বাচন কমিশন ২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ সভায় আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনপূর্ব উদ্ভূত পরিস্থিতির বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। এ সভা লক্ষ্য করে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান পরিস্থিতি কোনো অবস্থাতেই রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূলে নয়।
এজন্য দুটি কারণ উল্লেখ করে রাবি প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে এবং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন: শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা মুখোমুখি অবস্থানে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতি ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে কার্যত ফাঁকা হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
কর্মবিরতি ও ফাঁকা ক্যাম্পাস
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তর ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলছে। বাস চললেও শিক্ষার্থী নেই। ফাঁকা দোকানপাটে কেউ বসে নেই। সকালে গেটগুলোয় দেখা গেছে বাড়িমুখী শিক্ষার্থীদের ভিড়।
বাংলা বিভাগের ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, “আমরা এখানে পড়াশোনার জন্য এসেছি, কিন্তু ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ও সংঘাতের কারণে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি, শিক্ষক-কর্মকর্তারা লাগাতার কর্মবিরতিতে রয়েছেন। সামনে রাকসু নির্বাচন হবে কি না, সেটাও আমাদের কাছে অস্পষ্ট। আমরা চাই দ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক হোক।”
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “ক্যাম্পাসে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আন্দোলন ও শঙ্কাজনক পরিস্থিতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বিভ্রান্ত। রাকসু নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে—নির্বাচন হবে কি, বা কবে হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না।”
রাকসু নির্বাচন ও শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পোষ্য কোটা বাতিল ও ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দাবিতে আমরা অনড় আছি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখছি। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি নির্বাচনে সহযোগিতা না করেন, তাহলে নির্বাচন খুবই কষ্টকর হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, ২০ তারিখের ঘটনায় সব প্যানেলের প্রচারে ভাটা পড়েছে এবং অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন।
ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, “আমরা পোষ্য কোটা বাতিলের পক্ষে। কিন্তু গুটিকয় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী বেশি তৎপর, তারা নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। এই পরিস্থিতিতে ঝড়ঝাপটা বেড়ে গেছে। এই মুহূর্তে আসলে নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আমরা চাই, পূজার ছুটির পরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।”
‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, “এই পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন। আর পোষ্যকোটা নিয়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”
রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “বর্তমানে ক্যাম্পাসে স্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই। প্রশাসন যদি স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে তাহলে ২৫ তারিখেই রাকসু হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করে রাকসু দিলে সেটার আমরা বৈধতা দেব না।”
ঘটনার সূত্রপাত
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসন ভবন থেকে বের হলে শিক্ষার্থীরা তাকে আটকে দেন। পরে তার বাসভবনে তালা ঝোলানো হয়। এরপর জুবেরী ভবনে ঢুকতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। উপ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের আটকে রেখে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। রাত ১টার দিকে উপাচার্য ড. সালেহ্ হাসান নকীব পোষ্যকোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে উত্তাপ রাবি: পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বহাল না রাখার সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে রাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম, পানি, বিদ্যুৎ ও পরিবহন সেবা এই শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা সুবিধা রয়েছে’
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা সুবিধা রয়েছে। অথচ রাবিতে এই সুবিধা না থাকায় আমরা হতাশ। ফলে আন্দোলনের অংশ হিসেবে কমপ্লিট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তে যা জানা গেল
রোববার বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় রাবিতে পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।
রাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ জানান, “সিন্ডিকেট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত জানুয়ারিতে ঘোষণা দেওয়া পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। পাশাপাশি শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্তও হয়েছে।” সিন্ডিকেট শনিবার রাবির জুবেরী ভবনে এক উপ-উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ দায়ী কি না, তা নির্ধারণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাকসু নির্বাচন ও পোষ্য কোটা বিতর্ক
সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার বলেন, “রাকসু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও, নির্বাচন কার্যক্রম যেন নির্বিঘ্নে চলে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
রাবিতে আগে থেকেই কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা চালু ছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এই কোটা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এটিকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’ হিসেবে পুনরায় চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেওয়া এক চিঠিতে তারা জানান, দাবি মানা না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। যদিও প্রশাসন জরুরি একাডেমিক সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা চালুর ঘোষণা দেয়, কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
পাঠকের মতামত:
- রূপনগর অগ্নিকাণ্ডের পর সামনে এল ঢাকার আরেক ‘রাসায়নিক বোমা’র খবর
- মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
- জান্নাত-জাহান্নামের প্রহরী কারা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য কী?
- জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না এনসিপি, ‘নাটকীয়তায় অংশ নয়’
- রাকসু নির্বাচন: ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কালির দাগ
- সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ নিয়ে জটিলতা: খসড়ায় ক্ষুব্ধ বিচারকরা
- শিক্ষার মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন: এইচএসসি পরীক্ষায় এত বড় ব্যর্থতার কারণ কী?
- ৪০০ কোটি বছর আগের সৌরজগতের রহস্য উন্মোচন: নতুন বস্তু অ্যামোনাইট
- খালি পেটে এলাচের পানি: যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- ওজন কমাতে সহায়ক: দিনে দুবার পান করুন এই বিশেষ ডিটক্স পানীয়
- সকালে ব্রাশ না করে পানি খেলে কী হয় শরীরের ভেতরে?
- ভারতের ৩টি কাশির সিরাপ নিয়ে WHO-এর বিশ্বব্যাপী সতর্কতা
- দেশের ১০ জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টির শঙ্কা, সতর্কতা জারি করল বিডব্লিউওটি
- এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, জেনে নিন ফলাফল জানার সহজ উপায়
- দৈনিক রাশিফল: ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
- ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল
- ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন শুরু, উৎসবে মেতেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- ৪৪ বছর পর চাকসু’তে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির
- ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- শীতে চুল ঝরা ও খুশকি: সমাধান মিলবে এই ৬ অভ্যাসে
- জাল টাকার প্রচলন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- চট্টগ্রামে নতুন মাইলফলক: বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু
- মাথাব্যথার ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’: যে লক্ষণ দেখলে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
- পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
- প্রাচুর্যের আড়ালে নির্মমতা: জাপানের হাশিমার বুকে চাপা পড়া কান্না ও এক রক্তাক্ত অধ্যায়
- আমাজনের গভীরে লুকানো রহস্যময় সোনালী শহর, যা খুঁজছে বিশ্ব
- জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করা ছাড়া উপায় নেই: রিজভী
- ড. ইউনূস: ‘কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে’
- এ কেমন যুদ্ধবিরতি: গাজায় রক্তক্ষরণ থামছে না
- আখেরাতের সাফল্য: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ৯টি সহজ পথ
- নামাজে মোবাইল বাজলে কী করবেন? সাইলেন্ট করা কি শরিয়তে জায়েজ?
- পুরোনো স্মার্টফোনকে নতুন ফোনের মতো দ্রুত করুন ৫টি সহজ উপায়ে
- আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা জানালেন আমীর হামজা
- শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানতে হবে: এনসিপি নেতা সারজিস আলমের সমর্থন
- দেশজুড়ে টাইফয়েড টিকাদান অভিযানে সাড়ে ৩৮ লাখ শিশুর টিকা সম্পন্ন
- নতুন মহামারির আশঙ্কা! জাপানে ফ্লু-এর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব, রোগী বেড়েছে চারগুণ
- সিইসির সঙ্গে অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর সাক্ষাৎ: নির্বাচনী সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
- ডিমেনশিয়া শুরু হয় মস্তিষ্ক থেকে নয়, বরং পা থেকে: স্নায়ু বিশেষজ্ঞের চমকপ্রদ তথ্য
- ঠান্ডা-সর্দি-কাশি? ওষুধ নয়, লবঙ্গ চায়েই মিলবে আরাম
- তিন গোয়েন্দা সিরিজের লেখক রকিব হাসান আর নেই
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর: আসিফ নজরুল
- ১৫ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৫ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৫ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সবুজ শিল্পে নতুন মাইলফলক: আরও পাঁচটি কারখানা পেল লিড সার্টিফিকেশন
- আগামীকাল প্রকাশিত হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল
- দেশটাকে বাঁচান, নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করবেন না: মির্জা ফখরুল
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে অচল শাহবাগ, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে অবরোধ
- গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত পেরু: আইনশৃঙ্খলা পুনর্গঠনে তরুণ প্রেসিডেন্টের কঠোর পদক্ষেপ
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- ট্যাঙ্গো, পাম্পাস আর বিপ্লবের দেশ: আর্জেন্টিনার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি
- সমুদ্রের মাঝে সভ্যতা: ইতিহাস, ঐতিহ্য, জলবায়ু ও কূটনীতির মিলনে মালদ্বীপের টিকে থাকার গল্প