গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি: কুমিল্লা ও আশেপাশের অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৯ ২০:১২:৫৩
গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি: কুমিল্লা ও আশেপাশের অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা

টানা দুই দিনের ভারি বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এখনো বিপৎসীমার দেড় মিটার নিচে রয়েছে, তবে রাতের মধ্যে পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বুধবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে নদীর পানি ১১ দশমিক ৩০ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে টিক্কার চর, চানপুর ব্রিজ এবং সংরাইশ এলাকায় চরের জমি ও বসতবাড়ি ডুবে গেছে। অনেকে পরিবার তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান জানান, "ভারতের উজানে অপ্রত্যাশিতভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখানে বৃষ্টির ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় গোমতী নদীর পানি প্রায় ৫ মিটার বেড়েছে। এই পানি আমাদের এখানে পৌঁছাতে ১৮ ঘণ্টার মতো সময় লাগে।"

একই সঙ্গে কুমিল্লা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার উপর বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২৯ মিলিমিটার। সাগরে একটি লঘুচাপ থাকলেও সেটি ভারতের অংশে অবস্থান করছে। তবে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগে আরও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে জানান, “ত্রিপুরা ও চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে রাতভর ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে কুমিল্লা, ফেনী ও আশপাশের জেলাগুলোর নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।”

বন্যার সম্ভাবনা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া জানিয়েছেন, “জেলায় ৫৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও জিআর চাল।”

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির আহমেদ জানান, “আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

স্থানীয়রা বলছেন, গত বছর বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ার অভিজ্ঞতা এখনও টাটকা। এবারও গোমতীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আশঙ্কায় রয়েছেন।

পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতি নির্ভর করছে আগামী ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিপাত ও উজানের পানির গতিপথের উপর।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ