যুক্তরাষ্ট্র-চীন পাল্টাপাল্টি শুল্ক ৯০ দিন স্থগিত

সত্য নিউজ: বিশ্বের বৃহত্তম দুটি অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন, পরস্পরের ওপর আরোপ করা ১১৫% পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে একমত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে এই ঘোষণা এসেছে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমিত করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫% শুল্ক থেকে তা কমিয়ে ৩০%-এ নামিয়ে আনবে, যেখানে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫% শুল্ক কমিয়ে ১০%-এ নামাবে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিবেদক থিও লেগেট এ বিষয়ে মন্তব্য করেন, "এটি প্রত্যাশার চেয়ে বড় পরিমাণে শুল্ক হ্রাস, তবে ৩০% শুল্ক এখনও একটি উচ্চ হার হিসেবে থেকে যাচ্ছে।"

বিবিসি থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চীনা কর্মকর্তারা মার্কিন শুল্কের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেন, এবং গত মাসেও ট্রেজারি সেক্রেটারি বেসেন্ট স্বীকার করেছিলেন যে, এই পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয়। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমিয়ে সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার সংবাদ সম্মেলনে জানান, "এটি গঠনমূলক আলোচনার ফলস্বরূপ এসেছে এবং এই ৯০ দিনের স্থগিতকরণ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।" এ সময়ে দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।

বিশ্ব অর্থনীতির দিকে তাকালে, এই শুল্ক স্থগিতের খবর বিশ্ব বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। হংকংয়ের প্রধান সূচক ৩% বেড়েছে, এবং এসএন্ডপি ৫০০ স্টক ফিউচারেরও বৃদ্ধি দেখা গেছে। চীনা মুদ্রা ইউয়ানের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ৬ মাসে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যার ফলে চীনের অর্থনীতির পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

এছাড়া, আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে ফেন্টানিল তৈরির রাসায়নিক উপাদানগুলোর চোরাচালান বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানিয়েছিল। চীন এখন এই সংকটের গুরুত্ব স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে জানানো হয়েছে।

মোটকথা, এই স্থগিতকরণ দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে পুনরায় যাচাই করার সুযোগ সৃষ্টি করবে, এবং আশা করা যাচ্ছে যে, এটি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।