একাত্তরের বিরোধীরা ব্যাখ্যা দিক: এনসিপি

সত্য নিউজ: রাজধানীর শাহবাগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে অনুষ্ঠিত আন্দোলন এবং সেখানে কিছু আপত্তিকর স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানিয়েছে, তাদের কোনো সদস্য এই জনপদের মানুষের ঐতিহাসিক সংগ্রামবিরোধী কোনো বক্তব্য বা স্লোগানে যুক্ত ছিলেন না। দলটি একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করেছে, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ বা জনযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, তারা এখন জাতির সামনে তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত এই বক্তব্য দেন। ‘সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিতর্কে এনসিপির অবস্থান’ শীর্ষক বিবৃতিতে দলটি দাবি করে, তারা আন্দোলনে কোনো দলীয় স্লোগান দেয়নি এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনায় সক্রিয় অংশ নিয়েছে। বরং আন্দোলনের একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে জনগণের ঐতিহাসিক স্মৃতিকে বিকৃত করতে সচেষ্ট হয়েছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।

এনসিপি মনে করে, ১৯৪৭ সালের উপনিবেশবিরোধী লড়াই, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের গণআন্দোলন—এই তিনটি সময়কাল বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দলটি বলেছে, এসব অধ্যায়ের প্রতি যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি না থাকলে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভিত্তি দুর্বল হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যারা অতীতে গণহত্যায় সহযোগিতা করেছে কিংবা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তারা যদি আজ জনগণের ঐক্যে যুক্ত হতে চায়, তবে তাঁদের উচিত হবে সুস্পষ্টভাবে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করা। এতে জাতীয় ঐক্য আরও সংহত হবে এবং সমঝোতার ভিত্তি তৈরি হবে।

এনসিপি মনে করে, সাম্প্রতিক আন্দোলনে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থান থেকে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে নতুন বাংলাদেশের নির্মাণে ঐক্যের প্রয়োজন। দলটি বিশ্বাস করে, মুজিববাদকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হলে প্রয়োজন জনগণের বৃহত্তর ঐক্য এবং ভবিষ্যতমুখী রাজনৈতিক দূরদর্শিতা।

এনসিপি সব রাজনৈতিক পক্ষকে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও জাতীয় স্বার্থের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে। দলটি বলেছে, শুধুমাত্র ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক, সাম্যভিত্তিক এবং সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।