মাতৃত্বে স্বাগতা: ডাক্তারদের ‘না’ করে থাইল্যান্ডে নতুন লড়াই

জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী জিনাত সানু স্বাগতা তার জীবনের এক নতুন অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। প্রথমবারের মতো মা হতে চলেছেন তিনি। বিয়ের এক বছরের মাথায় সুখবরটি নিজেই শেয়ার করেছিলেন এই জনপ্রিয় শিল্পী। স্বাগতা জানিয়েছেন, প্রথম সন্তান আগমনের এই মুহূর্তটি ঘিরে দুই পরিবারেই বইছে আনন্দের বন্যা।

তবে এই আনন্দঘন সময়েও রয়েছে কিছু দুশ্চিন্তা ও সিদ্ধান্তের দ্বিধা। স্বাগতা শুরু থেকেই চেয়েছেন সন্তানকে স্বাভাবিকভাবে (নরমাল ডেলিভারি) জন্ম দিতে। কিন্তু দেশে চিকিৎসকরা তাকে পরামর্শ দিয়েছেন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার। এই মতের সঙ্গে একমত হতে পারেননি স্বাগতা। তাই নিজের সিদ্ধান্তে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান, যেখানে গত দুই মাস ধরে তিনি অবস্থান করছেন শুধুমাত্র একটি সুস্থ, স্বাভাবিক প্রসব নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে।

নিজস্ব সিদ্ধান্তে সাহসী পদক্ষেপজাগো নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বাগতা বলেন,

“আমি একটা মিশন নিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছি। যদিও বাংলাদেশের অনেক ডাক্তার বলেছেন, ‘তুমি ভুল করছ’। কিন্তু আমি শেষদিন পর্যন্ত চেষ্টা করব যেন নরমাল ডেলিভারিতেই আমার সন্তান পৃথিবীতে আসে।”

তিনি আরও বলেন,

“বাংলাদেশে সাধারণত ৪২ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই অনেক ডাক্তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। আমাকেও তেমন পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি জানি, সার্জারির পর মায়েদের শরীর ও মানসিকতায় নানা জটিলতা তৈরি হয়। সেটা অনেক সময় ডাক্তাররা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন না।”

থাইল্যান্ডেও স্বাগতাকে একইরকম চিকিৎসা দৃষ্টিভঙ্গির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে সেখানেও চেষ্টা ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এক পর্যায়ে চিকিৎসা সুবিধার কারণে তিনি হাসপাতাল পরিবর্তন করে নতুন এক প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন, যেখানে নতুন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তিনি এখন নরমাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করছেন।

স্বাগতার ব্যক্তিজীবন ও সঙ্গীতজগতের সঙ্গী২০২৩ সালের ২৪ জানুয়ারি দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রেমিক হাসান আজাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন স্বাগতা। হাসান আজাদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী হলেও, সংগীতের সঙ্গেও তার গভীর সংযোগ রয়েছে। তিনি গান লেখেন, সুর করেন এবং সংগীত পরিচালনায়ও দক্ষ।

হাসানের জন্ম ও শিক্ষাজীবন যুক্তরাজ্যে। লন্ডনের নাগরিক এই শিল্পপ্রেমী ব্যক্তি বিশ্বখ্যাত কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। স্বাগতা ও হাসানের ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের ভিত্তিতে গড়া সংসারে নতুন অতিথির আগমনে জীবনের আনন্দের পরিধি আরও বিস্তৃত হতে চলেছে।