‘পরমাণু অধিকার’ প্রশ্নে অনড় ইরান, ওয়াশিংটনকে কড়া বার্তা তেহরানের।

সত্য নিউজঃইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার আবহে নিজেদের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে তেহরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগশি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পরমাণু অধিকার ইরানের ন্যায্য পাওনা এবং এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা তেহরান মেনে নেবে না। কাতারের রাজধানী দোহায় ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান সংলাপে এই কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় আব্বাস আরাগশি বলেন, "যদি এই আলোচনার লক্ষ্য হয় ইরানকে তার পরমাণু অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, আমি পরিষ্কারভাবে বলছি যে ইরান তা কখনও মেনে নেবে না এবং নিজের অধিকারের ব্যাপারে আপস করবে না।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইরানের প্রতিনিধিদল আলোচনার টেবিলে খোলা মন নিয়েই বসেছে। আরাগশির ভাষায়, "এই আলোচনার লক্ষ্য যদি হয় পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে আমাদের বিরত রাখা, সেক্ষেত্রে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি করতে আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু যদি আলোচনার লক্ষ্য হয় ইরানকে তার পরমাণু অধিকার থেকে বঞ্চিত করার, তাহলে অবশ্যই আমরা আলোচনা থেকে সরে যাব। কারণ এখানে আমাদের অধিকারের প্রশ্ন জড়িত।"

প্রসঙ্গত, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। ওয়াশিংটনের মূল অভিযোগ, ইরান গোপনে পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিরসনে ২০১৫ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির "যৌথ সমন্বিত পদক্ষেপ পরিকল্পনা" (JCPOA) বা ‘জ্যাকোপা’ নামে পরিচিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তবে, ২০১৭ সালেতৎকালীন এবং বর্তমানপ্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে এই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নিলে পরিস্থিতি পুনরায় জটিল হয়ে ওঠে এবং ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বৃদ্ধি করে।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) গত ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিল, ইরান ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি পর্যায়। এই প্রতিবেদনের পরই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আগ্রহ প্রকাশ করে এবং তারই ফলশ্রুতিতে দোহায় এই আলোচনা চলছে।