বিমান বিধ্বস্তের ধাক্কা: বোয়িংয়ের শেয়ারে ৮% পতন

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ২৪২ জন আরোহীসহ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের পাশেই জনবহুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনায় “অনেক প্রাণহানি” হয়েছে, তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে।

উড়োজাহাজটি ভারতের আহমেদাবাদ থেকে যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এটি জনবসতিপূর্ণ একটি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। ফলে আশপাশের ভবনেও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্যমতে, বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের। এটি বোয়িং-এর সর্বাধুনিক ও নিরাপদ মডেলগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত। অতীতে ব্যাটারি সংক্রান্ত কিছু কারিগরি ত্রুটির কথা উঠলেও, এই মডেলে এর আগে কোনো মারাত্মক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার রেকর্ড ছিল না।

তবে সাম্প্রতিক ঘটনাটি সেই আস্থার ভিতকে নড়বড়ে করে দিচ্ছে। বোয়িং ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তারা দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবগত এবং ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে।

এই দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বোয়িং-এর শেয়ারের দাম প্রি-মার্কেট লেনদেনে প্রায় ৮ শতাংশ কমে যায়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শেয়ারটি .৮২ ডলারে লেনদেন হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষক ক্রিস বিউচ্যাম্প (IG Group) বলেন, “এটি একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। অতীতের বোয়িং-সংক্রান্ত সংকট এবং উৎপাদন নিরাপত্তা ঘিরে যে ভয় বাজারে তৈরি হয়েছিল, এই দুর্ঘটনার পর তা আবারও মাথাচাড়া দিয়েছে।”

দুর্ঘটনার সময় বোয়িং-এর নতুন প্রধান নির্বাহী কেলি অরথবার্গ কোম্পানির নিরাপত্তা সংস্কারে সচেষ্ট ছিলেন। ৭৩৭ ম্যাক্স-সংক্রান্ত একাধিক ঘটনার পর থেকেই বোয়িং জনআস্থা পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে আহমেদাবাদের দুর্ঘটনাটি বোয়িং-এর জন্য একটি বড় অবনমন, বিশেষ করে তখন যখন তারা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি মেরামতের চেষ্টায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

আহমেদাবাদের এই দুর্ঘটনা শুধু ভারত নয়, বৈশ্বিক বাণিজ্যিক বিমান শিল্প এবং বিনিয়োগ বাজারেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তদন্ত চলমান রয়েছে, তবে বিমান যাত্রীদের পরিবারের পাশাপাশি সারা বিশ্বের চোখ এখন বোয়িং-এর দিকেই তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার অপেক্ষায়।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক