রাজনৈতিক উত্তেজনায় নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, নাকি এগোবে?

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ দিন দিন আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবিতে অনড় অবস্থান নেয়ার ফলে এই সময়সীমা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোরালো বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বিএনপি, বিশেষ করে দলটির সিনিয়র নেতা তারেক রহমান, গত কয়েক মাস ধরেই নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছেন। গত মাসে ঢাকায় এক সমাবেশে তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেন, “ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে।” প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পরই বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে এবং এপ্রিলের নির্বাচন আয়োজনকে অনুকূল মনে করেনি। ৬ জুন কুরবানির ঈদের আগের দিন প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রদানের পর দলটি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন নজর কাড়া আলোচনা হচ্ছে, ১৩ জুন লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা নির্বাচন সময় নির্ধারণের বিষয়টি কীভাবে প্রভাবিত করবে। কিছু গণমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, এই বৈঠকে বিএনপি হয়তো ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সময়সীমা স্থির করতে পারে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের সময়টি যে উপযুক্ত নয় তা তারা সরকারকে বুঝাতে চাইছে। তিনি বলেন, “রোজার মাস, ঈদের পরেই নির্বাচন হলে প্রচারণার জন্য নেতাকর্মীদের বিশাল কষ্ট হবে। গরমে দিনের আলোতে জনসভায় মানুষ কম আসবে, রাতের সভা চালাতে হবে যা নির্বাচনের ব্যয়ও দ্বিগুণ করবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই বৈঠককে নির্বাচন সংক্রান্ত বর্তমান সংকট সমাধানের একটি সম্ভাবনাময় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। বিশ্লেষক কাজী মারুফুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “রাজনীতিতে শেষ কথা বলা যায় না। যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা আপাতত বৈঠকের মাধ্যমে কিছুটা নিরসন পেতে পারে।”

রাজনৈতিক পরিবেশের বর্তমান অস্থিরতায় এই বৈঠককে অনেকেই আগামী রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণকারী হিসেবে মূল্যায়ন করছেন। নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে সংকট মিটে গেলে তা দেশের স্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক