চামড়ার দাম বাড়ল কাগজে, বাস্তবে ব্যবসায়ীদের লোকসান

পবিত্র ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুটে ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ—এই দাম কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। বাস্তবে আগের মতোই কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে তাদের।

চলতি বছরের জন্য প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও, বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরা ৫৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে লেনদেন করতে বাধ্য হয়েছেন। কোথাও কোথাও দাম আরও কম পড়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

উত্তরার চামড়া ব্যবসায়ী হেফাজ উল্লাহ বলেন, “কুরবানিদাতাদের কাছ থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া কিনেছি। কিন্তু পরে ৮২০ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারিনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকসান হয়েছে।”বাড্ডার ব্যবসায়ী সিরজা বলেন, “ভ্যান ভাড়া, লেবার খরচ, সংরক্ষণ—সব মিলে লাভ তো দূরের কথা, মূলধন ফেরত পাওয়াই মুশকিল হয়ে গেছে।”

খিলক্ষেতের ব্যবসায়ী মিজানুর জানান, “প্রতিবার ট্যানারি মালিকরা দাম কম দেয়। ফলে এবারও দাম দিয়ে চামড়া কিনে ঠকতে হয়েছে।”

অন্যদিকে, ট্যানারি মালিক ও এজেন্টরা জানান, সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে তা লবণ দেওয়া ও প্রস্তুতকৃত চামড়ার জন্য। কাঁচা চামড়ার ক্ষেত্রে দাম কম পড়তেই পারে। তারা দাবি করেন, ভালো মানের অনেক চামড়া ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকায় কেনা হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে ৭০০–৯০০ টাকার মধ্যে অধিকাংশ চামড়ার কেনাবেচা হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।

গতবারের মতো এবারও ছাগলের চামড়ার বাজার ছিল একেবারে মন্দা। অনেক জায়গায় কেউ দাম দিতে চাননি, অনেকে বিনামূল্যে মসজিদ বা এতিমখানায় দিয়ে দিয়েছেন। যেখানে দাম উঠেছে, সেখানেও মাত্র ১৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

এবারের ঈদে সারা দেশে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ট্যানারি মালিক সমিতি। এর সিংহভাগ সংগ্রহ হয়েছে ঈদের প্রথম দিনেই।