দেড় ঘণ্টার ফোনালাপে কী বললেন ট্রাম্প ও শি জিনপিং?

বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) অনুষ্ঠিত হলো এক 'খুব ভালো' ফোনালাপ। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যকার এই আলোচনাকে ঘিরে দুই দেশেই আলোচনার ঝড় উঠেছে।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লেখেন, ফোনালাপটি প্রায় দেড় ঘণ্টা স্থায়ী হয় এবং তা দুই দেশের জন্যই 'খুব ইতিবাচক সিদ্ধান্ত' এনেছে। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট শি তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং তিনিও পাল্টা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শিকে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া জানিয়েছে, এই ফোনালাপ ট্রাম্পের অনুরোধে হয়েছে। প্রেসিডেন্ট শি এই আলোচনায় স্পষ্ট বলেন, দুই দেশের উচিত পারস্পরিক সম্পর্কের ‘পথ সোজা করা’। তিনি আরও বলেন, “চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বিশাল জাহাজটির পথ সঠিক রাখতে হলে আমাদের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে।”

এই ফোনালাপটি এমন এক সময়ে হলো, যখন জেনেভায় করা ৯০ দিনের বাণিজ্যযুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে দুই দেশই একে অপরকে দোষারোপ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। অন্যদিকে চীনের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসন বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে—বিশেষ করে চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

চীনের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে, সেখানে চীন পাল্টা জবাবে ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। এছাড়া ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গেও উত্তেজনা বাড়িয়েছেন। স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রে তিনি শুল্ক দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ট্রাম্প একদিকে যেমন শিকে 'কঠিন মানুষ' বলে বর্ণনা করেছেন এবং তাঁর সঙ্গে চুক্তি করা 'কঠিন' বলে দাবি করেছেন, অন্যদিকে আবার ব্যক্তিগতভাবে শির প্রতি নিজের ‘পছন্দ’ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি শিকে সব সময় পছন্দ করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব।”

এই দুই নেতার মধ্যে গত পাঁচ মাসে কোনো প্রত্যক্ষ যোগাযোগ হয়নি, যদিও ট্রাম্প মাঝেমধ্যে দাবি করেছেন, তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে। তবে বেইজিং সে দাবির সত্যতা স্বীকার করেনি।

ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, দুই দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল অচিরেই আবার বসবে আলোচনায়। যদিও দ্বিপাক্ষিক শুল্ক পাল্টাপাল্টি আরোপের মধ্যে সমঝোতার পথ অনেকটাই জটিল হয়ে পড়েছে।