বিস্ফোরণে কাঁপল শ্রীনগর, পাকিস্তানের দিকে আঙুল ভারতের

সত্য নিউজ:ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ শনিবার রাতে একাধিক বিকট বিস্ফোরণের শব্দে তীব্র উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপির কর্মীদের বরাতে জানা গেছে, বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই প্রবল ছিল যে তা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোনা যায়।

ভারত সরকারের এক উচ্চপর্যায়ের সূত্রের দাবি, এই বিস্ফোরণের পেছনে রয়েছে পাকিস্তান, যারা সদ্যঘোষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ওই সূত্রের ভাষায়, “পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় শান্তি আলোচনার পর গৃহীত যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।”

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ দেওয়া পোস্টে লেখেন, “সবে হওয়া যুদ্ধবিরতি কি তবে ছাইয়ে পরিণত হলো? শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।” এই মন্তব্য থেকেই স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে তৈরি হওয়া আশঙ্কার গভীরতা বোঝা যায়।

রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, শ্রীনগর ছাড়াও জম্মু অঞ্চলেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, জম্মুর আকাশে রাতের বেলায় গোলাবারুদের ঝলকানি এবং বিস্ফোরণের আওয়াজ লক্ষ্য করা গেছে, যা শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘটিত অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলেই মনে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান সম্প্রতি একটি যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ এক্স হ্যান্ডলে এক পোস্টে এই শান্তি উদ্যোগের কথা জানান, যা পরবর্তীতে ভারত ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়।

তবে আজকের বিস্ফোরণের ঘটনা সেই সদ্য স্থাপিত শান্তিচুক্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি যদি সত্যিই চুক্তি লঙ্ঘন হয়ে থাকে, তাহলে দু'দেশের মধ্যে বিশ্বাসের ভীত আরও দুর্বল হয়ে পড়বে এবং কূটনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও পরবর্তী পদক্ষেপ

এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়তে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও মধ্যস্থতা সফল হবে কি না, তা এখন আরও নজরদারির আওতায় চলে এসেছে। এ বিষয়ে ভারত সরকারের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি এখনো পাওয়া যায়নি, তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তে সেনা তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

এই বিস্ফোরণ কেবল শ্রীনগরবাসীর জন্য আতঙ্কের কারণ নয়, এটি উপমহাদেশের শান্তি প্রক্রিয়াকে একটি গুরুতর পরীক্ষার মুখে ফেলে দিয়েছে।