নতুন করদাতাদের জন্য সুখবর জাতীয় বাজেটে

অন্তর্বর্তী সরকার অর্থবছর ২০২৫-২৬ এর জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার একটি সাহসী বাজেট জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। সোমবার (২ জুলাই) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশে এই প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন। নতুন বাজেটে আয়কর কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে, পাশাপাশি বিদ্যুৎমূল্য অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের জিডিপির ৩.৬২ শতাংশের সমান। এই ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে স্বাভাবিক ব্যক্তি ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবার করদাতাদের জন্য ন্যূনতম করের পরিমাণ এলাকাভেদে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে ছিল। তবে ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষ থেকে এই ন্যূনতম কর এলাকা নির্বিশেষে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে নতুন করদাতাদের জন্য সুখবর রয়েছে। তাদের জন্য ন্যূনতম কর মাত্র ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে নতুনদের কর প্রদানে উৎসাহিত করা যায় এবং কর-নেট বাড়ানো যায়।

বর্তমানে আয়কর কাঠামোয় প্রথম সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনো কর নেই। এরপর ধাপে ধাপে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হয়ে থাকে। নতুন বাজেট অনুযায়ী, ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছর থেকে করহার কিছুটা পরিবর্তিত হচ্ছে, যেখানে সর্বোচ্চ করহার থাকবে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।

বাজেট ঘোষণায় আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো—বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি। এই সিদ্ধান্তটি সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হবে।

জুলাই ২০২৪ সালে দেশে সংঘটিত অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। তাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো। এবারের বাজেট সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা তার বক্তৃতায় বলেন, “মাত্র ১০ মাসের মধ্যে আমরা অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে অগ্রগতি করেছি। আমরা আশা করি, জনগণের আশাভরসা পূরণে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ।”