‘নিজেকে মনে হয়েছে পতিতা’: মিস ইংল্যান্ড

চলমান মিস ওয়ার্ল্ড ২০২৫ প্রতিযোগিতা থেকে এক নাটকীয় ও সাহসী সিদ্ধান্তে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মিস ইংল্যান্ড মিলা ম্যাগি। ভারতের তেলেঙ্গানায় আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালের আগেই তিনি সরে দাঁড়ান। তার অভিযোগ, প্রতিযোগিতাটি "উদ্দেশ্যসম্পন্ন সৌন্দর্য"র প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা ছিল এক ধরনের বিনোদনমূলক শোষণ।

মাত্র ২৩ বছর বয়সী এই মডেল ও সমাজসেবী ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য সান-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি এখানে একজন পতিতার মতো অনুভব করতাম।” তিনি অভিযোগ করেন, নারী প্রতিযোগীদের ধনী পুরুষ স্পনসরদের সামনে কুচকাওয়াজ করতে বাধ্য করা হতো এবং তারা ছিলেন যেন এক ধরনের "উইন্ডো ড্রেসিং"। এছাড়া প্রতিযোগীদের অবমাননাকর পরিস্থিতিতে পড়তে বাধ্য করা হয় বলেও জানান তিনি।

মিলা ম্যাগির অভিযোগ, তার মূল লক্ষ্য ছিল ‘Go For With CPR’ নামের ক্যাম্পেইনকে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরা—যার মাধ্যমে তিনি স্কুল পাঠ্যক্রমে সিপিআর অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে প্রতিযোগিতাটি ছিল বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রদর্শনী এবং বিনোদনের মাধ্যম মাত্র।

তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিদিন নতুন গাউন পরে সাজতাম, বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখানোর জন্য। অথচ প্রতিশ্রুতি ছিল আমরা আমাদের অ্যাডভোকেসি বা সামাজিক বার্তা তুলে ধরার সুযোগ পাবো। বাস্তবে, সেই সুযোগ খুব সীমিত ছিল।”

শনিবার (৩১ মে) ভারতের হায়দরাবাদে অনুষ্ঠেয় গ্র্যান্ড ফাইনালের আগে তিনি প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান। দ্য গার্ডিয়ান সূত্রে জানা গেছে, মিলা দাবি করেছেন, অনেক নারী প্রতিযোগী ব্যক্তিগতভাবে তার অভিজ্ঞতার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন এবং সমর্থন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন।

এদিকে, মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ ম্যাগির অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ বলে আখ্যা দিয়েছে। সংস্থাটির সিইও জুলিয়া মরলি ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকায় বলেন, “ম্যাগি প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কারণ তিনি বুঝেছিলেন তার জেতার সম্ভাবনা নেই।” এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মিলা বলেন, “জুলিয়ার মন্তব্য প্রতিহিংসাপরায়ণ ও হাস্যকর। আমি জেতার সম্ভাবনা না দেখে সরে যাইনি, আমি সরে গেছি কারণ এই প্ল্যাটফর্ম আমার বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই ছিল না।”

এই ঘটনার পর, মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত আর কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে মিলা ম্যাগির বক্তব্য নতুন করে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার নৈতিকতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, দ্য সান, দ্য হিন্দু