‘শুধু একটি দল নয়, আমরাও ডিসেম্বরে ভোট চাই’—বাম জোটের জোরালো বার্তা

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। শুক্রবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা অভিযোগ করেছে, সরকার ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতে নির্বাচন বিলম্বের ষড়যন্ত্র চলছে। সেইসঙ্গে বাম জোট স্পষ্টভাবে জানায়, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন শুধু একটি দলের দাবি নয়’—এই বক্তব্যকে ‘সত্য বিকৃতি’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ বলে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের ৫০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল, যাদের মধ্যে রয়েছে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত উভয় ধরনের দল—তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের পক্ষে। তারা মনে করে, জনগণের চাওয়া ও অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় নির্বাচনী সংস্কার করে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা এখন সময়ের দাবি। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে—এমন দাবি জোরালোভাবে উত্থাপন করে জোট।

বাম গণতান্ত্রিক জোট আরও অভিযোগ করেছে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে লিপ্ত। তারা বলছে, সরকার পরিকল্পিতভাবে নতুন রাজনৈতিক দলগুলিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, যাদের একটি অংশের সঙ্গে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। এদের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীলতা, নৈরাজ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, যা নির্বাচন বানচালের একটি সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই অগণতান্ত্রিক ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, তবে দেশ ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটে পড়বে, যার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) এর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী।

বাম জোট তাদের বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—জণগণের মতামতকে উপেক্ষা না করে অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, কোনো ধরনের অযৌক্তিক বিলম্ব বা রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়ার প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলবে।