পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে হামলার দাবি ভারতের

ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ১০টি বিমানঘাঁটিতে ‘নির্ভুল ও সীমিত মাত্রার’ হামলা চালানোর দাবি করেছে। দেশটির দাবি অনুযায়ী, এই হামলায় পাকিস্তানের সামরিক অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বুধবার (২৮ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই হামলার প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০ মে ভারতের পক্ষ থেকে চালানো 'অপারেশন সিঁদুর'-এর আওতায় পাকিস্তানের মুরিদ, নূর খান, সরগোধা, ভোলারি, জ্যাকবাবাদ, সুক্কুর, রহিম ইয়ার খানসহ মোট দশটি বিমানঘাঁটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এনডিটিভি বলছে, উচ্চ-রেজুলিউশন স্যাটেলাইট চিত্রে হামলার পরের দৃশ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিগুলোর বেশ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের ফলে বড় ধরনের গর্ত ও ভবন ধ্বংসের চিত্র স্পষ্ট।

মুরিদ ঘাঁটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটি পাকিস্তানের চাকওয়াল অঞ্চলে, জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, হামলায় সৃষ্ট তিন মিটার প্রশস্ত একটি বিশাল গর্ত একটি সম্ভাব্য ভূগর্ভস্থ সামরিক স্থাপনার প্রবেশপথ থেকে মাত্র ৩০ মিটার দূরে অবস্থিত। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড্যামিয়েন সাইমনের মতে, এটি অত্যন্ত নিরাপত্তাবেষ্টিত একটি লক্ষ্যবস্তু ছিল, যা ভারী হামলা সহ্য করার মতো সক্ষমতার সংকেত দেয়।

নূর খান বিমান ঘাঁটিতে চালানো হামলায় দুটি ট্রেলার ধ্বংস হয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে, যা কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সিস্টেম হিসেবে ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। জ্যাকবাবাদ, ভোলারি, সুক্কুর, রহিম ইয়ার খান এবং সরগোধা বিমান ঘাঁটিতেও হ্যাঙ্গার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং রানওয়েতে বড় গর্তের চিহ্ন দেখা গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৭ মে একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর পাকিস্তান ক্ষতিগ্রস্ত ঘাঁটিগুলো পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা পাকিস্তানের সামরিক অবকাঠামোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে সেগুলো যেগুলো কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

ভারত সরকার এই অভিযানকে 'পরিমিত এবং ক্যালিব্রেটেড' বলে উল্লেখ করলেও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো এই হামলার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।