সিরিয়ায় শান্তির বার্তা, যুক্তরাষ্ট্রের বড় সিদ্ধান্ত

সত্য নিউজ: দীর্ঘ ১৪ বছর পর সিরিয়ার ওপর আরোপিত কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর নতুন সরকার গঠনের পরপরই ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্ত দেশটির জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার (২৩ মে) মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এই ঘোষণা দেন।
নতুন সরকারের সম্ভাবনা, পুরোনো অবরোধের অবসান
স্কট বেসেন্ট বলেন, “সিরিয়াকে এখন একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আজকের এই সিদ্ধান্ত দেশটির ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আমরা আশাবাদী।”
এর আগে এক সপ্তাহ আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় জানান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের অনুরোধে তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ায় সিরিয়ার নতুন সরকার বৈদেশিক বিনিয়োগ গ্রহণ, খনিজসম্পদ বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন পুনরায় শুরু করতে পারবে।
শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদন
তবে যুক্তরাষ্ট্র এও স্পষ্ট করে দিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরও সিরিয়াকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মানতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে-
- কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীকে আশ্রয় না দেওয়া
- দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
- মানবাধিকার লঙ্ঘন না করা
যেসব খাত এতদিন নিষিদ্ধ ছিল—বিশেষ করে তেল, গ্যাস, খনিজ ও আর্থিক খাত এখন সেগুলোর ওপর থেকে সব বিধিনিষেধ উঠে যাচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে সিরিয়া নতুন করে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
অতীতের প্রেক্ষাপট
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মার্কিন সরকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয়। তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মম দমনের অভিযোগ এনে দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘমেয়াদে সিরিয়ার অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তোলে। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শুকিয়ে যায়, বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি চরমে পৌঁছায় এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা হয়ে পড়ে দুর্বিষহ।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই ঘোষণাকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, সিরিয়া এখন নতুন রাজনৈতিক কাঠামোতে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে আগ্রহী হবে।
মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, “এই সিদ্ধান্ত শুধু সিরিয়ার জন্য নয়, বরং পুরো অঞ্চলের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা বাড়াবে। তেল ও গ্যাসসহ প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ সিরিয়ায় বিনিয়োগ বাড়লে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক গতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সিরিয়ার নতুন সরকারের জন্য এক বড় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক জয়ের প্রতীক। দেশটির এখন দায়িত্ব হচ্ছে—এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নয়নমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা, যাতে দেশটির জনগণের দীর্ঘদিনের যন্ত্রণার অবসান ঘটে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’-এর মুক্তি পেছাল, ঘোষণা দিলেন নতুন তারিখ
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৪০৫ কোটি টাকার লোকসান
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- নারীকে লাথি মারা আকাশ চৌধুরী জামায়াতের কর্মী ছিলেন, বহিষ্কার করল দল
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত