বৈদ্যুতিক তারে প্রাণ গেল তরুণের, শ্বশুরবাড়ির পুকুর ঘিরে রহস্য!

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার ঝাঁঝরী গ্রামে বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে প্রাণ হারিয়েছেন চান মিয়া (২২) নামের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণ। রোববার (২২ জুন) সকাল সাড়ে আটটার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। চান মিয়া ওই গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে এবং পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নেওয়া ৩০ বিঘার একটি পুকুরে মাছ চাষ করছেন আব্বাস আলী নামে এক ব্যক্তি। মাছ রক্ষায় তিনি পুকুরের চারপাশে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ বসিয়েছেন। অভিযোগ, ওই ফাঁদে শিয়াল, কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণী প্রায়ই মারা পড়ে।

চান মিয়ার চাচাতো ভাই আবদুর রহমান জানান, গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান চান। পুকুরপাড়ে শ্যালোমেশিনের কাছে যাওয়ার সময় তিনি পা রাখেন বৈদ্যুতিক ফাঁদে।

খবর পেয়ে স্থানীয় মোহন আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে চান মিয়ার নিথর দেহ দেখতে পান এবং গ্রামবাসীকে খবর দেন। পরে বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ করে লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পর পুরো গ্রামজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আব্বাস আলীর পুকুরপাড়ের দোকান ও আখড়ায় আগুন দেন এবং তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। অভিযোগ রয়েছে, আব্বাস আলী দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা ও সেবনের সঙ্গে জড়িত এবং স্থানীয় প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার ছত্রচ্ছায়ায় প্রকাশ্যে এসব কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

‘মানবতার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, চুয়াডাঙ্গা’র সভাপতি আহসান হাবীব বলেন, “এ ধরনের বৈদ্যুতিক ফাঁদ বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অনেকবার নিষেধ করা হলেও আব্বাস আলী ফাঁদটি সরাননি। তার দায়েই আজ একটি নিরীহ প্রাণ ঝরে গেল।”

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ যাচাই করা হচ্ছে।